শরীর খারাপ হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে অনেকেই চেনা ওষুধে ভরসা রাখেন। গুরুতর অসুখ না করলে দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়েই সেরে ওঠা যায়। যে কারণে, জরুরি কিছু ওষুধ আগেভাগে বাড়িতে মজুতও করে রাখেন অনেকে।
প্যারাসিটামল থেকে শুরু করে অ্যামোক্সিলিন, প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই এই ওষুধগুলি অত্যাবশ্যক। কিন্তু ১ এপ্রিল, শনিবার থেকে একগুচ্ছ ওষুধের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আগে থেকে না জেনে রাখলে যা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে সাধারণ মানুষকে।
ওষুধের দাম আগের চেয়ে অন্তত ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ) ১ এপ্রিল থেকে ওষুধের দামে ১২.১২১৮ শতাংশ বৃদ্ধিতে সবুজ সঙ্কত দিয়েছে।
পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ওষুধের দামে এই ১২ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি এক বছরের হিসাবে সর্বোচ্চ। যে ওষুধগুলি দাম নিয়ন্ত্রণের আওতায় পড়ে, সেগুলিরই দাম বাড়ানো হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা ইকোনমিক্স টাইমস জানিয়েছে, এনপিপিএ-র এই সিদ্ধান্ত অন্তত ৮০০টি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের পাইকারি মূল্যকে প্রভাবিত করবে। জাতীয় তালিকায় জরুরি হিসাবে ওই ওষুধগুলির উল্লেখ রয়েছে।
এনপিপিএ-র তালিকা অনুযায়ী, যে যে ওষুধের দাম ১ এপ্রিল থেকে বেড়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে হ্যালোথেন, আইসোফ্লুরেন, কেটামাইন, নাইট্রস অক্সাইড।
এ ছাড়াও ওই তালিকায় রয়েছে, আইবুপ্রোফেন, ডাইক্লোফেনাক, মেফেনামিক অ্যাসিড, বেনজ়িলপেনিসিলিন।
দাম বাড়ছে প্যারাসিটামল, অ্যামোক্সিলিন, মরফিন, অ্যামপিসিলিন ট্যাবলেটের।
সেফাড্রক্সিল, সেফাজ়োলিন, সেফট্রিঅ্যাক্সোম, বুদেসোনাইডের দামও বেশ খানিকটা বেড়ে যাবে ১ এপ্রিল থেকে।
কোভিডের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, এমন ওষুধগুলির দামও বেড়ে যাচ্ছে।
এনপিপিএ-র মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে অ্যামিকাসিন, বেডাকিলিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিনের মতো যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধকারী ওষুধও।
ক্লোট্রিমেজ়োল, ফ্লুকোনাজ়োল, মিউপিরোসিন প্রভৃতি অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ, যেগুলি ছত্রাকঘটিত রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে, দাম বাড়ছে সেগুলিরও।
এড্সের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একাধিক ওষুধ যেমন, অ্যাবাকাভির, লামিভুডাইন, জ়িডোভুডাইন, এফাভিরেঞ্জ ইত্যাদিরও দাম বাড়ছে ১ এপ্রিল থেকে।
মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে গ্যাসের ওষুধও। ওআরএস থেকে শুরু করে ল্যাকটুলোজ়, বিসাকোডাইল— আগের চেয়ে দামি হচ্ছে।
জন্মনিরোধক বড়ি, বিভিন্ন হরমোনের ওষুধ এবং হেপাটাইটিস বি, র্যাবিস প্রভৃতি ভ্যাকসিনের দামও বেশ খানিকটা বাড়ছে। দামি হচ্ছে চর্মরোগ প্রতিরোধকারী কয়েকটি ওষুধ।
ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কুইনাইন, প্রিম্যাকুইন, আর্টেসুনেট, ক্লোরোকুইন, আর্টেমেথার প্রভৃতি ওষুধের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়বে স্নায়ুর রোগের ওষুধের দামও।
ক্যানসারের চিকিৎসায় যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যেমন, ফ্লুরোউরাসিল, অ্যাকটিনোমিসিন ডি, আর্সেনিক ট্রাইঅক্সাইড, ক্যালসিয়াম ফোলিনেট প্রভৃতির দাম বাড়ছে।
এ ছাড়া, আগের চেয়ে দামি হচ্ছে ফোলিক অ্যাসিড, আয়রন সুক্রোজ়, হাইড্রক্সোকোবালামিনের মতো অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধও।