শাহরুখ খান থেকে সলমন খান, আলিয়া ভট্ট থেকে দীপিকা পাড়ুকোন— বলিপাড়ার প্রায় সকল নক্ষত্রই হাজির হয়েছেন প্রযোজক-পরিচালক কর্ণ জোহর সঞ্চালিত জনপ্রিয় একটি রিয়্যালিটি শোয়ে।
আমির খান, যিনি কোনও রকম পার্টি বা পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যেতে অপছন্দ করেন, তাঁকেও নিজের শোয়ে নিয়ে এসেছেন কর্ণ।
২০০৪ সালের ১৯ নভেম্বর প্রথম সম্প্রচার হয়েছিল কর্ণের শো। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ১৮ বছর। ইতিমধ্যেই সপ্তম সিজ়ন শেষ করে ফেলেছেন কর্ণ। অষ্টম সিজ়নে কোন কোন তারকাকে কর্ণ তাঁর শোয়ে ডাকবেন, তা নিয়ে তোড়জোড় যখন তুঙ্গে, সেই মুহূর্তে বিতর্কে জড়িয়েছেন কর্ণ।
বলিপাড়া শুধু নয়, দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তারকাদেরও নিজের রিয়্যালিটি শোয়ে কফি খাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কর্ণ। কিন্তু একের পর এক পর্ব কেটে গেলেও গোবিন্দকে কখনও শোয়ে ডাকেননি।
রিয়্যালিটি শো চালু হওয়ার ১৩ বছর কেটে যাওয়ার পর কর্ণকে নিয়ে মুখ খুলেছেন গোবিন্দ। আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে অভিনয় জগতে এসেছেন তিনি। তবুও কর্ণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যেন কাঁটায় ভরা।
২০১৭ সালে ‘আ গয়া হিরো’ ছবির প্রচারে এসে কর্ণের উপর ক্ষোভ উগরে দেন গোবিন্দ। তিনি জনসমক্ষে জানান যে, ইন্ডাস্ট্রিতে আসার ৩০ বছর কেটে যাওয়ার পরেও নাকি কর্ণ কোনও ভাবে যোগাযোগ করেননি গোবিন্দের সঙ্গে।
এমনকি গোবিন্দের সঙ্গে কর্ণ সৌজন্যমূলক আচরণও করেননি কোনও দিন, এমনটাই দাবি করেন অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘‘কর্ণকে আমার কখনওই সরল মনের মানুষ মনে হয়নি। একেবারেই সোজাসাপটা মানুষ নন কর্ণ।’’
তাঁকে নাকি হিংসে করেন কর্ণ এমনটাই মনে করেন গোবিন্দ। তাই তাঁর সিনেমা মুক্তির এক সপ্তাহ পরেই নাকি কর্ণ তাঁর ছবির প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি ঘটান।
কর্ণের ‘দলের’ সঙ্গে যুক্ত না হলে তিনি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের খালি চোখে দেখতেই পান না বলে অভিযোগ গোবিন্দের। কর্ণ ভাল মনের মানুষ নন বলেও মন্তব্য করেন গোবিন্দ।
এই প্রথম বার নয়, এর আগেও কর্ণের উপর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন গোবিন্দ। কর্ণ যে তাঁকে কোনও দিন আমন্ত্রণ জানাননি সে কথা বলিপাড়াতেও ছড়িয়ে গিয়েছে।
কর্ণের কানে পৌঁছতেই নেটমাধ্যমে গোবিন্দের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন কর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘গোবিন্দকে আমার শোয়ে কেন ডাকা হয়নি, তা নিয়ে অনেক রকম কথা শুনছি। তিনি যদি দুঃখ পেয়ে থাকেন, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’’
কর্ণ আরও বলেন, ‘‘গোবিন্দের মতো অভিনেতাকে আমি শ্রদ্ধা করি। তিনি যদি আমার শোয়ে আসেন, তবে আমারই গর্ববোধ হবে।’’
গোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তাভাবনা যে তিনি করেছিলেন, তা জানাতেও ভোলেননি কর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে ডাকার চিন্তাভাবনাও করেছিলাম। গোবিন্দকে আঘাত করার কোনও রকম ভাবনা আমাদের ছিল না।’’ সুযোগ পেলে গোবিন্দকে আবার আমন্ত্রণ জানাবেন কর্ণ, এমনটাই দাবি করেন পরিচালক।
তবে বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, গোবিন্দের জীবনে কোনও ‘রসালো’ বিতর্ক নেই বলেই নাকি অভিনেতাকে নিজের শোয়ে ডাকেন না কর্ণ। তাঁর শোয়ে প্রেম-পরকীয়া থেকে শুরু করে বেডরুম পর্যন্ত আলোচনা গড়িয়ে যায়, এমনটাই দাবি বলিপাড়ার একাংশের।
গোবিন্দের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন তিনি নাকি আধ্যাত্মিক হয়ে পড়েন! তখন অভিনেতা হয় নিজের মায়ের প্রসঙ্গে অথবা ঈশ্বরের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলতে থাকেন। কর্ণের শোয়ে এই ধরনের কথাবার্তা হলে শোয়ের জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করেন বলিপাড়ার একাংশ। তাঁদের অনুমান, সেই কারণেও হয়তো কর্ণ তাঁর রিয়্যালিটি শোয়ের মঞ্চে কখনও ডাকেননি গোবিন্দকে।