হলিউড, বলিউড বা টলিউড— সিনেমার প্রতিটি চরিত্রকে বাস্তবের রূপ দিতে অভিনেতাদের গল্পের ধারা অনুযায়ী দেহের ওজন থেকে শুরু করে মুখের গড়ন পর্যন্ত বদলাতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেকআপ অথবা প্রস্থেটিক্সের সাহায্যে এই পরিবর্তন আনা হলেও সব সময় তা সম্ভব হয় না।
ছবিতে কাজ শুরু করার আগেই অভিনেতারা তাঁদের খাদ্যাভাসে বদল আনেন। স্বাস্থ্যগত পরিবর্তন আনতে শরীরের মেদ বাড়িয়ে বা কমিয়ে ফেলেন তাঁরা।
এমন অনেক ছবিতে দেখা গিয়েছে, চরিত্রকে নিপুণ ভাবে বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে মাথার চুল কামাতেও পিছপা হননি অভিনেতারা।
১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া অমিতাভ বচ্চন ও মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত ‘অগ্নিপথ’ ছবিটির রিমেক বানানো হয়েছিল ২০১২ সালে। বিজয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হৃতিক রোশন। খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত।
সঞ্জয় তাঁর চরিত্রের নেতিবাচকতা আরও ভাল করে দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে মাথার সমস্ত চুল কামিয়ে ফেলেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, শোনা যায় ভুরুও অনেকটা কামিয়ে ফেলেছিলেন সঞ্জয়।
এই রূপবদলের ফলে ‘কাঞ্চা’র চরিত্রের ভয়াবহতা দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন বলিউডের হাসিখুশি ‘মুন্নাভাই’।
শাহিদ কপূরের অভিনয়জীবনের শ্রেষ্ঠ সিনেমার মধ্যে ‘হায়দার’ অন্যতম। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রচিত ‘হ্যামলেট’ গল্পের ছোঁয়া পাওয়া যাবে এই ছবির পরতে পরতে।
২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল শাহিদকে। সিনেমার কিছু দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য অভিনেতা তাঁর মাথার সব চুল কেটে ফেলেছিলেন।
সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত ‘বাজিরাও মস্তানি’ ছবিতে পেশোয়া বাজিরাওয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রণবীর সিংহ। ইতিহাসের সত্যতা বজায় রাখতে পেশোয়া চরিত্রে অভিনয় করার সময় রণবীরকে মাথার চুল কাটতে হয়েছিল।
রণবীর একা নন। অভিনেত্রী তানভি আজমিকেও ওই ছবিতে চরিত্রের প্রয়োজনে মাথা কামাতে হয়েছিল। এই ছবিতে তিনি বাজিরাও-এর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির অন্তিম পর্বে অনুষ্কা শর্মাকে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী হিসাবে দেখানো হয়। কেমোথেরাপি চলার ফলে মাথার সমস্ত চুল উঠে গিয়েছে তা দেখানো হয়েছিল। তবে, এ ক্ষেত্রে, অনুষ্কা প্রস্থেটিক্সের সাহায্য নেন।
‘মেরি কম’ সিনেমাটি বক্স অফিসে বিপুল সাড়া ফেলে। মেরি কমের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাস। মূল গল্প অনুযায়ী, সিনেমার কিছু দৃশ্যে প্রিয়ঙ্কার মাথায় চুল না থাকা প্রয়োজনীয় ছিল।
কিন্তু অভিনেত্রী আর সাহস করে তাঁর মাথার চুল কাটেননি। মেকআপ ও প্রস্থেটিক্সের মাধ্যমে এই দৃশ্যগুলিতে অভিনয় করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা।
বলিজগতের এক অভিনেতাও প্রস্থেটিক্সের সাহায্য নিয়ে এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন। তিনি আর কেউ নন, বলিউডের ‘খিলাড়ি’ অক্ষয় কুমার।
২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া কমেডি ঘরানার ছবি ‘হাউসফুল ৪’-এ ববি দেওল, রানা ডাগ্গুবতী, কৃতি শ্যানন-সহ বলিউডের বহু তারকা একসঙ্গে অভিনয় করেছেন।
কিন্তু চরিত্র বিশেষে শুধুমাত্র অক্ষয়ের মাথাতেই চুল ছিল না। তিনি প্রস্থেটিক্সের মাধ্যমে এই রূপ ফুটিয়ে তুলতে সফল হয়েছিলেন।