নব্বইয়ের দশকে বলিপাড়ায় অভিনেতাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন গোবিন্দ। অভিনেতার দাবি, তিনি একসঙ্গে একাধিক ছবির শুটিংয়ের কাজে ব্যস্ত থাকতেন।
কৌতুকরসে আপাদমস্তক মোড়া চরিত্রে হোক বা নাচের দৃশ্য— গোবিন্দের অভিনয় দর্শকমনে গেঁথে গিয়েছিল। এখনও কৌতুকাভিনেতার চরিত্রে কেউ অভিনয় করলে তাঁর সঙ্গে গোবিন্দের তুলনা করা হয়।
অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের প্রশংসা কুড়োলেও বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে গোবিন্দ একাধিক ছবিতে অভিনয় করলেও তিনি নাকি ‘অপেশাদার’ ছিলেন। অপেশাদারিত্বের কারণে শুটিংয়ের সেটে অন্য অভিনেতার হাতে চড়ও খান তিনি।
বলিপাড়ার কয়েক জন তারকা গোবিন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে তিনি সঠিক সময়ে শুটিংয়ের জন্য পৌঁছন না। নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অনেক দেরি করে সেটে পৌঁছন। এমনটাই দাবি করেন তাঁরা।
সেটে সকলে উপস্থিত থাকলেও গোবিন্দের জন্য শুটিং শুরু করা যেত না। শুটিং সেটে সবাই চলে এলেও গোবিন্দের জন্য অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হত বলেও অভিযোগ ওঠে। অপেক্ষা করতে করতে ধৈর্য হারিয়ে গোবিন্দকে এক বার চড় মারেন বলি অভিনেতা অমরীশ পুরী।
বলিপাড়ার অন্দরমহল সূত্রে খবর, অমরীশ নাকি ঘড়ির কাঁটা ধরে শুটিং সেটে পৌঁছে যেতেন। এক মুহূর্তও দেরি করতেন না তিনি। অন্য কেউ দেরি করুন তা-ও পছন্দ করতেন না।
কিন্তু গোবিন্দের সঙ্গে একই ছবিতে কাজ করার সময় অমরীশের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে অভিনেতার। কানাঘুষো শোনা যায়, অমরীশ রোজ সকাল ৯টায় সেটে পৌঁছে যেতেন। কিন্তু গোবিন্দকে কখনওই সেই সময় সেটে দেখতে পেতেন না তিনি।
গোবিন্দ নাকি সেটে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ পৌঁছতেন বলে বলিপাড়ার একাংশের দাবি। গোবিন্দের চেয়ে বয়সে অনেকটা বড় হয়েও গোবিন্দের জন্য আট থেকে ন’ঘণ্টা অপেক্ষা করতেন অমরীশ। এই বিষয়টি পছন্দ ছিল না অমরীশের।
গোবিন্দের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ধৈর্য হারান অমরীশ। গোবিন্দ যখন শুটিং করতে পৌঁছন তখন সেটে উপস্থিত সকলের সামনে অভিনেতাকে চড় মারেন অমরীশ।
সেটে সকলের সামনে চড় খেয়ে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন গোবিন্দ। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলেও গোবিন্দের মনে এই ঘটনা দাগ কেটে যায়। সেই ছবির পর আর অমরীশের সঙ্গে কাজ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন গোবিন্দ।
এই প্রথম বার নয়, এর আগেও অমরীশের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল না গোবিন্দের। ‘দো কয়েদি’ এবং ‘ফর্জ কি জঙ্গ’ নামে দু’টি হিন্দি ছবি ১৯৮৯ সালে মুক্তি পায়। দু’টি ছবিতেই মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গোবিন্দ। গোবিন্দের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন অমরীশও।
‘দো কয়েদি’ এবং ‘ফর্জ কি জঙ্গ’ ছবি দু’টির শুটিং একই সময় চলছিল। একটি ছবির শুটিং সেট থেকে গোবিন্দ এবং অমরীশ অন্য ছবির সেটে পৌঁছতেন। কিন্তু একটি ছবির শুটিংয়ের পর দ্বিতীয় ছবির সেটে পৌঁছতে অনেক দেরি করতেন গোবিন্দ।
অমরীশ সেটে সঠিক সময়ে পৌঁছে যাওয়ার পর গোবিন্দকে অনুপস্থিত দেখে এক দিন রেগে যান। গোবিন্দ দেরি করে সেটে পৌঁছলে অভিনেতাকে উদ্দেশ করে অমরীশ বলেন, ‘‘তুমি নরকের কীট।’’
অমরীশের কথা শুনে আঘাত পান গোবিন্দ। কিন্তু অমরীশ গুরুজন বলে তার উত্তরে নীরব ছিলেন অভিনেতা।
গোবিন্দ সেটে কেন দেরি করে পৌঁছতেন সেই প্রসঙ্গে অভিনেতাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তিনি একই দিনে বহু ছবির শুটিং করতেন। সে কারণেই সেটে পৌঁছতে দেরি হত তাঁর। তিনি কোনও ভাবেই ‘অপেশাদার’ নন বলেও দাবি করেন গোবিন্দ।