রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার জন্য নাকি অভিনয়ের সুযোগ পাচ্ছেন না। কেরিয়ার যাচ্ছে রসাতলে। তাই রাজনীতি থেকে ‘সন্ন্যাস’ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলি অভিনেতা গোবিন্দ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কি আবার প্রার্থী হিসাবে দেখা যাবে ‘হিরো নম্বর ১’কে? এ বার কি শত্রুশিবিরে নাম লেখাচ্ছেন তিনি? দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত ভেসে আসছে এমনই।
নব্বইয়ের দশকে কৌতুকাভিনেতা হিসাবে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন গোবিন্দ। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতিতে নামারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
২০০৪ সালে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে রাজনীতির পথে যাত্রা শুরু হয় গোবিন্দের। কিন্তু অভিনেতা হিসাবে সফল হলেও রাজনীতির মাঠে ছক্কা মারতে পারেননি তিনি।
ভোটে জিতলেও সংসদে অধিবেশন চলাকালীন নাকি বেশির ভাগ সময়েই অনুপস্থিত থাকতেন গোবিন্দ। এমনকি রাজনীতির সঙ্গে তেমন সক্রিয় ভাবে যুক্তও থাকতেন না তিনি।
সাংসদ থাকাকালীন অভিনয়ও করেছেন গোবিন্দ। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পার্টনার’ ছবিতে সলমন খানের সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন নাকি হিন্দি ছবিতে কাজের জন্য ছবিনির্মাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতেন গোবিন্দ। তাঁর মনে হয়েছিল রাজনীতির জন্য কেরিয়ারে প্রভাব পড়ছে।
‘ভাগম ভাগ’, ‘সালাম-এ-ইশক’, ‘পার্টনার’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে আবার ‘কামব্যাক’ করতে চেয়েছিলেন গোবিন্দ। কিন্তু তেমন কাজ পাচ্ছিলেন না বলে কানাঘুষো শোনা যায়।
২০০৮ সালে রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গোবিন্দ। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েওছিলেন যে, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি সময় নষ্ট করেছেন। তাঁর প্রভাব কেরিয়ারেও পড়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার পর গোবিন্দকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে, ভবিষ্যতে তিনি আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। অভিনয় নিয়েই থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
২০০৮ সালের পর ১৬ বছরের ব্যবধান। এই ১৬ বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বড় পর্দায় নিজের মনের মতো ‘ফিরে আসতে’ পারেননি গোবিন্দ। ‘মানি হ্যায় তো হানি হ্যায়’, ‘লাইফ পার্টনার’, ‘ডু নট ডিস্টার্ব’, ‘কিল দিল’, ‘হ্যাপি এন্ডিং’, ‘আ গয়া হিরো’, ‘ফ্রাইডে’, ‘রঙ্গিলা রাজা’র মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় গোবিন্দকে। কিন্তু বক্স অফিসে কোনও ছবিই তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি নাচের বিভিন্ন রিয়্যালিটি শোয়ে বিচারকের আসনেও দেখতে পাওয়া যেতে থাকে গোবিন্দকে। তবে ১৬ বছর পর তিনি যে ‘সন্ন্যাস জীবন’ ত্যাগ করবেন, সে কথা ভাবতে পারেননি অনেকেই।
২০০৪ সালে উত্তর মুম্বই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে লড়েছিলেন গোবিন্দ। তা হলে কি ১৬ বছর পর আবার একই দলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি?
কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নাকি উত্তর-পশ্চিম মুম্বই কেন্দ্রের প্রার্থী হয়ে দাঁড়াতে পারেন গোবিন্দ। কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে নন, এ বার নাকি দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের বাসভবনে নাকি দেখা করতে গিয়েছিলেন গোবিন্দ। তা থেকেই অনুমান করা হচ্ছে যে, শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনায় যোগ দিতে পারেন অভিনেতা।
দলীয় সূত্রে খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গোবিন্দকে প্রার্থী করবেন কি না তা দিন কয়েকের মধ্যেই ঘোষণা করবে শিন্ডেসেনা। তবে গোবিন্দের আগে নাকি বলিপাড়ার অন্য তারকাদেরও প্রার্থী হিসাবে ভাবা হয়েছিল।
কানাঘুষো শোনা যায়, বলি অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে নাকি শিবসেনার প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জুড়তে চান না বলে সেই প্রস্তাব নাকি ফিরিয়ে দিয়েছেন অভিনেতা।
কানাঘুষো শোনা যায়, শুধু বলিপাড়ার ‘খিলাড়ি’ কেই নয়, মুম্বইয়ের উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্র থেকে শিবসেনার তরফে নাকি বলি অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতকেও প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানোর চিন্তাভাবনা করা হয়েছিল।
গোবিন্দের সঙ্গে একনাথ শিন্ডের সাক্ষাৎ হওয়ার পর থেকে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বলিউডের ‘হিরো নম্বর ১’-এর কি রাজনৈতিক সন্ন্যাস জীবনের ইতি হল? তা হলে এ বার অভিনয় ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে রাজনীতিতে নামবেন তিনি?