হাতির পিঠে বসে আছেন বিজেপি বিধায়ক। মাথায় পাগড়ি, হলুদ জামা পরা। তাঁর ঠিক পিছনে বসে বিধায়কের দেহরক্ষী।
হঠাৎই ওই দেহরক্ষী বিধায়কের হাতে একটি বন্দুক তুলে দেন। তার পর সেই বন্দুক থেকে শূন্যে গুলি ছুড়তে দেখা যায় বিধায়ককে। এই ঘটনা যখন ঘটছে, সেখানে হাজির ছিলেন প্রচুর মানুষ।
ঘটনাটি বিহারের পশ্চিম চম্পারণের বেতিয়ার লোরিয়া এলাকার। বিজেপি বিধায়ক বিনয় বিহারী। শূন্যে গুলি ছোড়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
বিধায়কের এই কাণ্ড নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিরোধী দলও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগাপট্টী থানা এলাকার মচ্ছরগাম্বা বাজারের সামনে একটি মাঠে কংস বধ মেলা উপলক্ষে শুক্রবার গিয়েছিলেন বিধায়ক বিনয়।
প্রতি বছর ওই মাঠে মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানেই হাতির পিঠে চেপে গিয়েছিলেন বিধায়ক। মেলায় তখন প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল।
সেই ভিড়ের মাঝেই হাতির পিঠে সওয়ারি হয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে আসেন বিধায়ক। তার পরই শূন্যে গুলি ছোড়েন।
ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর যখন বিধায়কের ভূমিকা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়, তখন আত্মপক্ষ সমর্থনে মুখ খোলেন বিধায়ক। দাবি করেন, প্রাচীন কাল থেকেই এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। অস্ত্রপুজো করা এই মেলার পুরনো রীতি। আর সেই রীতি অনুযায়ী তিনি শূন্যে গুলি ছুড়েছেন। এর পরই অভিযোগ তোলেন, বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তাই ভিডিয়ো বানিয়ে ভুল বার্তা প্রচার করে তাঁর বদনামের চেষ্টা করছে।
বিধায়কের গুলি ছোড়া প্রসঙ্গে বেতিয়ার এসডিপিও মুকুল পরিমলের দাবি, ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। ভিডিয়ো হাতে পেলে তার সত্যতা যাচাই করা হবে।
এই প্রথম নয়, এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিনয়। ২০১৯ সালে ঠিক একই ভাবে হাতির পিঠে চেপে মেলায় এসে শূন্যে গুলি ছুড়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, যে রাইফেলটি বিধায়ক ব্যবহার করেছিলেন, সেটির লাইসেন্স ছিল তাঁর স্ত্রীর নামে। সেই সময় বিধায়কের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাইফেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
এ ছাড়াও হাফপ্যান্ট এবং স্যান্ডো গেঞ্জি পরে বিধানসভায় হাজির হয়েছিলেন বিনয়। যদিও তখন বিধানসভার নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে গেটের সামনেই আটকে দেন।
২০১৯ সালে নিজের বিধানসভা ক্ষেত্রে ৪৪ কিলোমিটার রাস্তা বানানোর দাবিতেও সরব হয়েছিলেন বিনয়। নিজের পোশাক খুলে প্রতিবাদে নামেন।
শুধু তাই-ই নয়, তাঁর দাবি মানা হয়নি বলে নিজের কুর্তা কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন এবং পাজামা পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিনয়, তাঁর স্ত্রী চঞ্চলা এবং শ্যালকের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করা হয় পটনার আগামকুঁয়া থানায়।
‘প্যার কাহে বনায়া রাম নে’ নামে একটি ছবির প্রোমোশনও করেছিলেন বিধায়ক। সংবাদমাধ্যমে তিনি দাবি করেছিলেন, এটি পারিবারিক ছবি। এর ডায়লগ এবং গান তিনি নিজেই লিখেছেন।