নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে গিয়ে বিশ্বকাপকে ‘ওপেন’ করে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পরিস্থিতি এমন ছিল যে পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু হল উল্টোটা। রবিবাসরীয় অ্যাডিলেড বলছে, ৫ উইকেটে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তান পৌঁছে গেল সেমিতে।
টসে জিতে ব্যাট করা নিয়ে দু’বার ভাবেননি বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। কারণ, তাঁর দুই প্রারম্ভিক ব্যাটারই যে রয়েছেন দুরন্ত ছন্দে। মনে রাখা দরকার, পাকিস্তানের জোরে বোলিং আক্রমণও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। পরিস্থিতি যাই হোক, শাহিন, নাসিম, রউফের আগুনে গতি সামলানো সহজ নয়।
আসুন দেখে নেওয়া যাক, বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে আনন্দবাজার অনলাইনের দশের মাপকাঠিতে শাকিবের ছেলেরা কে কত পেলেন।
নাজমুল হোসেন শান্ত— ব্যাট হাতে ভরসা জোগালেন এই প্রারম্ভিক বাঙালি ব্যাটার। পাকিস্তানের গতিময় হোলিং সামলে ৪৮ বলে করে গেলেন মহামূল্যবান ৫৪ রান। ফিল্ডিং করতে নেমেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এবাদতের বলে রিজ়ওয়ানের ক্যাচ ধরেন নাজমুল। একেবারে শেষ পর্যায়ে ইফতিকারের ক্যাচও তালুবন্দি করেন। আনন্দবাজার অনলাইনের বিচারে দশে নাজমুল পেলেন সাড়ে ৭।
লিটন দাস— ভারতকে প্রায় একার হাতে হারিয়ে দিচ্ছিলেন লিটন। তাঁর উপর অধিনায়ক তো ভরসা করবেনই। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে ব্যর্থ লিটন। একটি ছয় মারলেন বটে, কিন্তু ৮ বলে ১০ রান করেই ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। ফিল্ডিংয়ে যদিও উত্তেজক মুহূর্তে নওয়াজকে রান আউট করলেন। দশে তিনি পেলেন টেনেটুনে ৪।
সৌম্য সরকার— খেলেছেন ১৭টি বল, করেছেন ২০ রান। একটি চার, একটি ছয়। কিন্তু দলকে ভরসা জোগাতে ব্যর্থ। ফিল্ডিংয়েও নজর কাড়তে পারলেন না। আনন্দবাজার অনলাইনের বিচারে সব মিলিয়ে সৌম্য পেলেন ১০-এ ২।
শাকিব আল হাসান— ব্যাট হাতে চরম বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাত্র ৪ মিনিটের ইনিংসে খেলেছেন মাত্র ১টি বল। তবে বল হাতে ১৮ বলে ৩১ করার পথে ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মহম্মদ হ্যারিসকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে দশের মাপকাঠিতে শাকিব পেলেন ৫।
আফিফ হোসেন— ব্যাট হাতে ২০ বলে ২৪ রান করেছেন। দলের রান সংখ্যার বিচারে তেমন কিছুই না। ফিল্ডিংয়ের সময় অবশ্য একটি দুর্দান্ত চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল, ক্যাচ ধরার সময় আফিফের পা ছুঁয়ে গিয়েছিল বাউন্ডারি। অতএব, ছক্কা। ১০-এ আফিফ পাচ্ছেন ৪।
মোসাদ্দেক হোসেন— ১১টি বল খেলেছেন, করেছেন ৫। ফিল্ডিংয়েও তেমন কিছুই করে উঠতে পারলেন না। দলের হার বাঁচাল না। ১০-এর মাপকাঠিতে মোসাদ্দেক পাচ্ছেন ২।
নুরুল হাসান— ব্যাট হাতে শূন্য করেছেন। খেলেছেন ৩টি বল। আনন্দবাজার অনলাইনের বিচারে ১০-এর মাপকাঠিতে নুরুলকে দেওয়া হচ্ছে ১।
তাসকিন আহমেদ— ব্যাট হাতে ১ রান করেছেন ৫টি বল খেলে। বল হাতে ৩ ওভারে দিয়েছেন ২৬ রান। কোনও উইকেট নিতে পারেননি। ১০-এর মধ্যে তাসকিনের সাদামাটা পারফর্ম্যান্স পাচ্ছেন মাত্র ২।
নাসুম আহমেদ— ব্যাট হাতে ৬ বলে করেছেন ৭ রান। মেরেছেন একটি চার। কিন্তু বল হাতে দুর্ধর্ষ নাসুম। ৪ ওভারের কোটা পুরোটাই করেছেন নাসুম। রান দিয়েছেন মাত্র ১৪। নিয়েছেন বাবর আজ়মের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ১০-এর মাপকাঠিতে নাসুম পাচ্ছেন ৭।
মুস্তাফিজুর রহমান— ব্যাট হাতে ভরসা জোগাবেন, এতটা সম্ভবত ভাবেন না অধিনায়ক শাকিবও। ১ বল খেলে অপরাজিত থেকে যান মুস্তাফিজুর। বল হাতে অবশ্য হতাশ করেননি বাংলাদেশের এই তারকা বোলার। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে নেন ইফতিকার আহমেদের উইকেট। ১০-এর মধ্যে তিনি পাচ্ছেন ৫ নম্বর।
এবাদত হোসেন— ব্যাট করার সুযোগ আসেনি। বল হাতে এবাদত ৩ ওভার ১ বল করেছেন ২৫ রান দিয়েছেন। একটি উইকেটও নিয়েছেন মহম্মদ রিজ়ওয়ানের। আনন্দবাজার অনলাইনের বিচারে ১০-এর মধ্যে সাড়ে ৪ পেয়েছেন এবাদত।