চিনে বিশাল গহ্বর (সিঙ্কহোল)-এর নীচে লুকিয়ে প্রাচীন অরণ্য! এমনই এক জঙ্গলের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সম্প্রতি। এই জঙ্গলে ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা গাছ রয়েছে বলেও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
‘সিঙ্কহোল’ হল মাটির নীচের গহ্বর, যা মাটির নীচে হওয়া ধসের কারণে তৈরি হয়।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই জঙ্গলে অনেক এমন উদ্ভিদ এবং প্রাণীর খোঁজ মিলতে পারে, যারা একেবারে নতুন প্রজাতির।
দক্ষিণ চিনের গুয়াংজি অঞ্চলে এক গুহার খোঁজ দিয়েছিলেন একটি অনুসন্ধিৎসু দল। তাঁরাই প্রথম এই গহ্বর এবং জঙ্গলটির খোঁজ পান।
এর পরই, জঙ্গলটির বিষয়ে বিজ্ঞানীদের জানায় ওই দল। লেই কাউন্টির ৩০টি সিঙ্কহোলের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। এই গহ্বরটি লম্বায় ৩০৬ মিটার এবং ১৫০ মিটার চওড়া। গভীরতা ১৯২ মিটার।
চিনের ‘ইন্সটিটিউট অব কার্স্ট জিওলজি’র ইঞ্জিনিয়ার ঝাং ইউয়ানহাই স্থানীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, এই গহ্বরের দেওয়ালে তিনটি গুহার খোঁজও মিলেছে। এক দম নীচে রয়েছে জঙ্গল।
এই জঙ্গলে কী আছে, তা দেখার জন্য বিজ্ঞানীরা কয়েক ঘণ্টা চেষ্টা চালানোর পর এই গহ্বরের একেবারে তলদেশে পৌঁছন।
এই বিজ্ঞানী দলের নেতৃত্বে ছিলেন চেন লিক্সিন। তিনি জানান, গাছের পাশাপাশি এই জঙ্গলে তাঁর কাঁধ পর্যন্ত লম্বা বেশ কিছু উদ্ভিদের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘‘যদি এই গহ্বরের গুহাগুলিতে নতুন প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায়, তা হলেও আমি অবাক হব না।’’
গহ্বরের ভিতরের দেওয়ালের পাথর, ভূগর্ভস্থ জলে ক্ষয়ে এক অদ্ভুত নকশার সৃষ্টি করেছে বলেও লিক্সিন জানিয়েছেন।
এই এলাকা জুড়ে এ রকম অনেকগুলি গহ্বর রয়েছে। এ রকম আরও গহ্বরের খোঁজ মিলতে পারে বলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই গহ্বরটি বিরল। কারণ এটি সাধারণ গহ্বরের তুলনায় বেশি গভীর। তবে এই গহ্বরের মুখ দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারায় এই জঙ্গলে গাছগুলি বেড়ে উঠেছে বলেও বিজ্ঞানীদের অনুমান।
এই জঙ্গলের কথা পড়ে কি মনে পড়ল ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’র গল্প? যেখানে ছোট অ্যালিস চলতে চলতে খরগোশের এক গর্তে পড়ে যায়। গর্তের নীচে সে খোঁজ পায় এক জঙ্গলের। সেই জঙ্গলের মধ্যে অদ্ভূত সব প্রাণী এবং গাছপালার খোঁজ পেয়েছিল অ্যালিস।