শুক্রবার মুক্তি পেল রণবীর কপূর অভিনীত হিন্দি ছবি ‘অ্যানিম্যাল’। ছবিটির দৈর্ঘ্য তিন ঘণ্টারও বেশি হওয়ায় এটি বলিউডের অন্যতম দীর্ঘ ছবির তকমা পেয়েছে।
বলিউডে অনেক দিন পরে তিন ঘণ্টার থেকে বেশি কোনও ছবি মুক্তি পেল। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন বলিউডের বেশির ভাগ ছবির দৈর্ঘ্যই তিন ঘণ্টার বেশি ছিল।
চার ঘণ্টার গণ্ডিও টপকেছে একাধিক বলিউড ছবি। তবে বলিউডের দীর্ঘতম হিন্দি ছবি তা অনেকেই জানা নেই। বলিউডের দীর্ঘতম ছবিটি ছিল চার ঘণ্টা ১৫ মিনিটের। ছবিতে মোট ৩৩ জন নায়ক ছিলেন। তার পরেও সেই ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।
বলিউডের দীর্ঘতম ছবির নাম এলওসি কার্গিল। জেপি দত্ত পরিচালিত সেই ছবি ২০০৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল। ছবির প্রেক্ষাপট ছিল কার্গিল যুদ্ধ।
গোবিন্দ নিহালানির ‘তমাস’ চার ঘণ্টা ৪৪ মিনিটের ছবি হলেও সেটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি। মুক্তি পেয়েছিল টেলিভিশনে। ফলে দীর্ঘতম ছবির কৃতিত্ব রয়েছে এলওসি কার্গিল-এর।
কার্গিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগ এবং বিজয়ের গল্প পর্দায় তুলে ধরার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিনেতাদের ছবিতে নিয়েছিলেন জেপি।
এলওসি কার্গিল-এর আগে ‘বর্ডার’ বানিয়েছিলেন জেপি। সেই ছবির প্রেক্ষাপটও ছিল ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ। সেই ছবিতেও অনেক বলি নায়ক একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন।
‘বর্ডার’ ব্যাপক হিট করেছিল। তাই একই সূত্রে এলওসি কার্গিলকেও ‘এপিক’ বানাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
জেপি যে ৩৩ জন নায়ককে নিয়ে এলওসি কার্গিল তৈরি করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন সঞ্জয় দত্ত, অজয় দেবগণ, সইফ আলি খান, অভিষেক বচ্চন, নাগার্জুন এবং অক্ষয় খান্নার মতো সেই সময়ের নামীদামি অভিনেতা।
এ ছাড়াও এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন মনোজ বাজপেয়ী, আশুতোষ রানা, সুদেশ বেরী, রাজ বাব্বর, মোহনীশ বহেল এবং অবতার গিল-এর মতো চরিত্র অভিনেতা।
অভিনেত্রীদের মধ্যে ছিলেন রানি মুখোপাধ্যায়, করিনা কপূর, রবিনা টন্ডন, এশা দেওল-সহ এক ডজনেরও বেশি অভিনেত্রী।
এত তারকা থাকা সত্ত্বেও বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে পারেনি জেপির ছবি। সমালোচকদের দাবি ছিল, একটি ছবির মধ্যে একসঙ্গে অনেক গল্প দেখাতে গিয়ে ঘেঁটে ফেলেছেন জেপি।
সমালোচকদের একাংশের এ-ও দাবি ছিল, ছবিটির দৈর্ঘ্য আরও কম হলে ভাল হত। ছবিটি অনেক দীর্ঘ হওয়ার কারণেই নাকি দর্শকরা ছবি দেখতে দেখতে আকর্ষণ হারিয়েছিলেন বলেও অনেকে দাবি করেন।
এলওসি কার্গিল ছবিটি ৩৩ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় খুব কম সিনেমায় এত বড় বাজেটে তৈরি করা হত। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে ছবিটি মাত্র ৩১ কোটির ব্যবসা করেছিল। ভারতে আয় করেছিল ২০ কোটি টাকারও কম।
এলওসি কার্গিলে করণ নাথ, আরমান কোলি, পুরু রাজকুমার, শাহজাদ খান, অমর উপাধ্যায়, বিক্রম সালুজা, বিনীত শর্মা, দীপক জেঠি, প্রিয়া গিল, আকাঙ্ক্ষা মলহোত্রা এবং আকবর নকভির মতো অনেক তরুণ প্রজন্মের অভিনেতাও কাজ করেছিলেন।
এলওসি কার্গিলের পরে সেই তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেকেই আর বেশি ছবিতে অভিনয় করেননি। বলিপাড়ায় সেই সময় কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে, জেপির ছবিতে অভিনয় করেই নাকি তাঁদের কেরিয়ার ক্ষতির মুখে পড়েছিল।