সম্পর্ক টিকে গেলে এই জুটির নাম দেওয়া যেত শ্রীমান এবং শ্রীমতি হাসি। যদিও সেই সুযোগ আসেনি। তাঁরাই দেননি। ৯০-এর দশকে ভারতীয় ক্রিকেটের ‘হ্যান্ডসাম বয়’ অজয় জাদেজার প্রেমে পড়েও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছিলেন বলিউডের 'চন্দ্রমুখী' মাধুরী দীক্ষিত।
ভারতীয় বিনোদন জগতে অবশ্য এটা নতুন ঘটনা নয়। ক্রিকেট আর সিনেমার তারকারা বারবার কাছে এসেছেন, সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাঁদের কেউ আড়াল থেকে টেনে প্রকাশ্যে এনেছেন সম্পর্ককে। বিরাট-অনুষ্কা, হার্দিক-নতাশা, হরভজন-গীতা, জাহির-সাগরিকা বা যুবরাজ-হেজেলরা আরও এক ধাপ এগিয়ে বিয়ে করেছেন। আবার কোনও কোনও সম্পর্ক আড়ালে শুরু হয়ে শেষও হয়ে গিয়েছে আড়ালেই। অজয় আর মাধুরীর ঘটনাটিকে এই দ্বিতীয় পর্যায়ে ফেলা যায়।
একটি পত্রিকার ফটোশ্যুটে প্রথম দেখা হয় দু’জনের। সেখান থেকেই অজয়-মাধুরীর বন্ধুত্বের সূত্রপাত।
তবে দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ মহলে খবর ছিল, বন্ধুত্ব গাঢ় হচ্ছে । এমনকি তা ধীরে ধীরে পৌঁছে গিয়েছে প্রেমের পর্যায়েও।
অজয় তখন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা। মহিলা ভক্তরা তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য পাগল। আর এ দিকে মাধুরীর ছবি ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সবে মুক্তি পেয়েছে। ছবিটি ব্লকবাস্টার হিট। স্বপ্নের জুটি হতে পারতেন, কিন্তু বাদ সাধল পরিবার। খানিকটা বলিউডি ফিল্মের মতোই অজয়-মাধুরীর সম্পর্কেও দেখা দিল অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স।
ক্রিকেটের নীল রক্তের উত্তরাধিকারী অজয়। নওয়ানগরের রাজপরিবারের সন্তান। সেই হিসেবে 'রাজপুত্র'। পুরো নাম অজয়সিংজি জাদেজা। অজয়ের দাদু কে এস রঞ্জিত সিংজির নামেই ক্রিকেটের রঞ্জি ট্রফি। যা ভারতের প্রথম শ্রেণির ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হিসেবে গণ্য হয়। শোনা যায়, অজয়-মাধুরীর ওই সম্পর্কে রাজবাড়ির মত ছিল না।
তার অবশ্য দু’টি কারণও ছিল বলে অনুমান করেছিলেন অজয়-মাধুরীর ঘনিষ্ঠরা। এক, মাধুরী অভিনেত্রী হলেও সাধারণ পরিবারের সন্তান। দ্বিতীয়ত মাধুরীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর কিছুদিন পরেই অজয়ের কেরিয়ারগ্রাফ নামতে শুরু করে। বিষয়টি কাকতালীয় হতে পারে। তবে অজয়ের পরিবার সম্ভবত ভেবে নিয়েছিল, এর জন্য অজয়ের সম্পর্কই দায়ী।
কিন্তু অজয় তখন ক্রিকেটের সঙ্গে মন দিয়েছেন ফিল্মেও। ঠিক করেছেন রূপোলি পর্দায় তাঁর ভাগ্য পরীক্ষা করে দেখবেন। শোনা যায়, মাধুরী এই সময় অজয়কে সাহায্যও করেন। বলিউডের খ্যাতনামী নায়িকা নিজের পরিচিত প্রযোজক মহলে ফিল্মে অভিনয়ের জন্য অজয়ের নামও সুপারিশ করেছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি বদলে যায় ১৯৯৯ সালে। ম্যাচ গড়াপেটায় অজয় জাদেজার নাম জড়ালে মাধুরীর পরিবার বেঁকে বসে। অজয়-মাধুরীর সম্পর্ক নিয়ে এর আগে তাঁরা আপত্তি না তুললেও মেয়ের সঙ্গে একজন গড়াপেটায় অভিযুক্তের নাম জড়াক তা চাননি মাধুরীর বাবা-মা। মাধুরীও নাকি সেই সময়েই অজয়ের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে আমেরিকায় চলে যান।
পরে সেখানেই শ্রীরাম নেনের সঙ্গে দেখা হয় মাধুরীর। ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে বিয়ে করেন। পরের বছর অর্থাৎ ২০০০ সালে বিয়ে করেন অজয়ও। সম্পূর্ণ হয় বৃত্ত। তবে অসম্পূর্ণ থেকে যায় দুই তারকার প্রেমকাহিনি।