রাশিয়ার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ, সকলেই উদ্বিগ্ন দেশের একনায়ক ভ্লাদিমির পুতিনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে। কারণ রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম বিভিন্ন সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, পুতিন ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর দৃষ্টিশক্তিও ক্রমে ক্ষীণ হয়ে এসেছে। আর এতেই উদ্বিগ্ন তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
তবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, চিকিৎসকরা ইতিমধ্যেই নাকি পুতিনকে সতর্ক করেছেন যে, তাঁর আয়ু আর বছর তিনেক। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর, পুতিনের শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্বেগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে।
রাশিয়ার ‘ফেডেরাল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি)’-এর এক অফিসার জানিয়েছেন, রাশিয়া-প্রেসিডেন্টের ক্যানসার সারা শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর।
এই অফিসার আরও জানিয়েছেন যে, ধীরে ধীরে পুতিন তাঁর দৃষ্টিশক্তিও হারাচ্ছেন।
রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার এক পলাতক গুপ্তচর প্রাক্তন এফএসবি আধিকারিক বরিস কারপিচকভের কাছে পুতিনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজখবর পাঠাচ্ছিলেন। তখনই পুতিনের তিন বছরের বেশি না বাঁচার তথ্য সামনে আসে।
মানুষ তাঁকে যাতে দুর্বল মনে না করে, এই ভয়ে পুতিন চশমা পরছেন না বলেও এই গোপন বার্তাতে উঠে এসেছে।
এই গোপন বার্তাতে এ-ও উঠে এসেছে যে, পুতিনের রাগ আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। আর মাঝে মধ্যেই তাঁর রোষের মুখে পড়ছেন ক্রেমলিনের কর্মকর্তারা।
তবে টেলিগ্রাম চ্যানেল জেনারেল এসভিআর অনুযায়ী, চলতি মাসেই ক্যানসার আক্রান্ত পুতিনের সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং চিকিত্সকদের পরামর্শ মেনে চলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এর আগে এ-ও জল্পনা ছড়িয়েছিল যে, পুতিন পারকিনন্স রোগে ভুগছেন।
আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে এক টিভি সাক্ষাৎকারের সময় পুতিনকে অদ্ভুত ভাবে পা নাড়াতে দেখা গিয়েছিল।
এর আগে তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময়ও তাঁকে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় পা নাড়তে দেখা গিয়েছিল। এর পরই জল্পনা ছড়ায়, পুতিন পারকিনসন্সে আক্রান্ত কি না, তা নিয়ে।
প্রাক্তন এমআই-৬ অফিসার ক্রিস্টোফার স্টিলের ব্যাখ্যা, পুতিনের শারীরিক অবস্থা কী রকম, তা জানতে প্রতিনিয়তই তাঁকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের একটি দল সব সময়ই তাঁর সঙ্গে থাকছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
কানাঘুষোয় শোনা গিয়েছিল, দু’বছর আগেই তিনি পারকিনসন্স এবং ক্যানসার, উভয় রোগেই ভুগছিলেন। কিন্তু ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর পরই এই খবর আবার সামনে উঠে আসে।
প্রাক্তন এক এমআই-৬ প্রধান ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার কারণে পুতিন ২০২৩ সালের মধ্যেই রুশ প্রেসিডেন্ট গদি ছাড়বেন।
তবে ক্রেমলিনের তরফ থেকে পুতিনের শারীরিক অসুস্থতার খবরকে ভুয়ো বলেই জানানো হয়েছে।
শুধু তা-ই নয়, গুজব বলে উড়িয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ বলেন, ‘‘কোনও সুস্থ মানুষের চোখে প্রেসিডেন্টের অসুস্থতা ধরা পড়বে না। ভ্লাদিমির পুতিন একদমই সুস্থ আছেন। দিব্যি তো কথা বলছেন! সমস্যা কোথায়?’’