প্রাণের পোষ্যের নাম রেখেছিলেন ‘স্নো’। তাকে হারিয়ে বুক ভারী হয়ে গিয়েছিল মালিকের। অবশেষে বনকর্মীদের জন্য পাঁচ মাস পর পোষ্যকে ফিরে পেলেন তিনি। এই পোষ্য অন্য কেউ নয়, একটা ১৬ ফুট লম্বা ময়াল!
সম্প্রতি অস্টিন অ্যানিমাল সেন্টারের একটি ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। তারা জানায়, প্রায় পাঁচ মাস পর মালিকের কাছে ফিরে যাচ্ছে তাঁর পোষ্য ময়াল। তারা জানায়, উত্তর-পূর্ব টেক্সাসের ডালাসের এক বাসিন্দা ওই অতিকায় প্রাণীটিকে পোষেন। কিছু দিন আগে তিনি তাঁর পোষ্য চুরির অভিযোগ করেছিলেন।
ময়ালের মালিক জানান, তাঁর পোষ্যের নাম স্নো। এই ময়ালটিকে গাড়ির ডিকিতে একটা ব্যাগের মধ্যে রেখেছিলেন পোষ্যকে। তিনি অস্টিনে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পথে একটি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হন। সেই সময় তাঁর পোষ্যকে চুরি করে নেন কেউ।
গত কয়েক মাস ধরে মালিক ‘বিহনে’ ইতিউতি ঘুরে বেড়িয়েছে ময়ালটি। এর ওর বাড়ি ঢুকে পড়ে সে। তাতে আতঙ্কে বন দফতরে খবর দিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু কোনও বনকর্মী আসার আগেই সে পালাত।
কিন্তু টেক্সাসের শীত বড় কাবু করে ফেলেছিল ‘স্নো’কে। এখন আর কোথাও বেড়ানোর মন নেই তার। কোনও শুকনো একটা জায়গায় টানা জিরোতে চায় সে। সেই আশ্রয়ের খোঁজে একটি গ্যারাজে ঢুকে পড়েছিল তার ১৬ ফুটের শরীর নিয়ে।
নড়তে আর ভাল লাগে না। বিশাল শরীরটাকে পেঁচিয়ে গ্যারাজে পড়েছিল ‘স্নো’। প্রকাণ্ড ময়ালকে দেখে গ্যারাজ মালিকের তো চক্ষু চড়কগাছে। তিনি ডাকতে যান কয়েক জন প্রতিবেশীকে।
টেক্সাসে এখন প্রবল ঠান্ডা। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় জবুথবু হয়ে গিয়েছিল ১৬ ফুটের ময়াল। তাই তাকে ধরে ফেলতে তেমন সমস্যা হয়নি।
গ্যারাজ মালিক এবং তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, ওই ময়াল সাপটি গত পাঁচ মাস ধরে এর ওর বাড়ি ঘোরাঘুরি করছিল। শেষে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় চিড়িয়াখানায়।
‘অস্টিন জু’তে এক দিন কাটিয়েছে ১৬ ফুটের ‘স্নো’। সাপটিকে পরীক্ষার পর বনকর্মীরা জানান একটু অসুস্থ সে। তবে ঠিক হয়ে যাবে।
এর মধ্যে ‘স্নো’-এর উদ্ধারের খবর পান মালিক। তিনি যোগাযোগ করেন বন দফতরের সঙ্গে। বন দফতরের কর্মীরা মনে করছেন, সাপটি চুরির সময় চোরবাবাজি আসলে বুঝতে পারেনি যে সে কী চুরি করেছে। ভারি ব্যাগ দেখে ভেবেছিল হয়তো বড় কোনও জিনিস পাবে। ব্যাগ খুলতে বড় ‘জিনিস’ই পেয়েছিল সে। তবে ভয়ে চমকে হয়তো ওখানেই ব্যাগ ফেলে পালায়।
এর পর অস্টিনের বিভিন্ন জায়গায় এঁকেবেঁকে ঘুরেছে ময়ালটি। কোথাও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছিল সে।
‘অস্টিন অ্যানিমাল সেন্টার’ ফেসবুকে লিখেছে, ‘‘এই গল্পের সুখী সমাপ্তি ঘটেছে। ‘স্নো’ তার মালিকের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হয়েছে। আর করোনাডো হিলসকে আর একটি বিশাল ময়ালের সন্ধানে থাকতে হবে না।’’