প্রতীকি চিত্র
এখন ডেবিট কার্ড ছাড়া জীবন অচল। দৈনন্দিন জীবনে নগদ তুলতে এটিএম ভরসা। কয়েক বছর আগেও ডেবিট কার্ড ছিল না। কতিপয় বিদেশি ব্যাঙ্কে এটিএম মেশিন ছিল। তখন এটিএম কার্ডে শুধু টাকা তোলা যেত। তারপর এল ডেবিট কার্ড। এটিএমে টাকা তোলা ছাড়াও এই কার্ড ঘষে দোকানে টাকা দেওয়াও শিখলাম আমরা। ক্রেডিট কার্ডের মতো এই বাজারেও আধিপত্য ছিল ভিসা আর মাস্টার কার্ডের। আর তারপর এল দেশের তৈরি ডেবিট কার্ড- রুপে!
এখন ব্যাঙ্কে গেলে, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে আপনাকে কিন্তু আগে রুপে কার্ড দেওয়ারই চেষ্টা করা হয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কও চায় আপনি রুপে কার্ড ব্যবহার করুন। কিন্তু পছন্দটা আপনারই। কোনটা নেবেন এবং কেন, জানতে হবে সেটাও। তাই আসুন দেখে নেওয়া যাক এই কার্ডগুলির বৈশিষ্ট্য।
ইংরাজিতে বলে প্লাস্টিক মানি। কারণ ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড যাই ব্যবহার করুন না কেন আপনার পকেট থেকে নগদ দিচ্ছেন না। তা হয় ঋণ বা ব্যাঙ্ক থেকে সরাসরি বিক্রেতার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা ভিসা কার্ড আনে ১৯৫৮ সালে। তারও আগে ১৯৫০ সালে আসে অ্যামেক্স। মাস্টার কার্ড আসে তারও পরে। ভারতে প্রথম ক্রেডিট কার্ড আনে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ১৯৮০ সালে।
এইচবিসি ভারতে প্রথম এটিএম কার্ড চালু করে ১৯৮৭ সালে। ২০১২ সালের আগের আমাদের হাতে অবশ্য ডেবিট কার্ড যা ছিল তা হয় ভিসা বা মাস্টার। কিন্তু এই দু’টি কার্ডই আমেরিকার আর এদের ব্যবহারের খরচও বেশি। তাই ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন ২০১২ সালে প্রথম ভারতীয় ডেবিট কার্ড বাজারে আনে ‘রুপে’ নামে।
ভিসা বা মাস্টার কার্ডের মতো রুপেও একই কাজ করে। কিন্তু এই তিনটি কার্ডই ব্যবহার করলে আমাদের একটা চার্জ দিতে হয়। সেটা দোকান বা ব্যাঙ্কের কাছ থেকে কেটে নেওয়া হয়। তাই অনেক ব্যাঙ্কই কিন্তু এই কার্ডের জন্য প্রতি বছর আপনার কাছ থেকে একটা টাকা কেটে নেয়।
রুপে কার্ড শুধু দেশের মধ্যেই ব্যবহার করা যায়। আর এটা শুধুই ডেবিট কার্ড। তাই আপনার যদি বিদেশে যাতায়াত না খাকে তা হলে রুপে কার্ড ব্যবহার করলে আপনার খরচ কম হবে। ভিসা বা মাস্টার কার্ডে শর্ত সাপেক্ষে বিদেশে ব্যবহার করা যায়।
যে হেতু রুপে কার্ডে ব্যবহারের তথ্য দেশের ভিতরেই থাকে, তাই অনেকেই দাবি করে থাকেন যে এই কার্ড ব্যবহারে তথ্য ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি কম। ভিসা বা মাস্টার কার্ডের যা প্রযোজ্য নয়।
রুপে কার্ড রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি, কোআপরেটিভ ব্যাঙ্ক এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি তাদের গ্রাহকদের দেয়। কিছু নির্দিষ্ট বেসরকারি ব্যাঙ্কও এই কার্ড দিচ্ছে। কিন্তু ভিসা বা মাস্টার কার্ডের খরচ বেশি বলে তা ছোট ব্যাঙ্কগুলিতে পাওয়া যায় না।
এই কার্ডগুলির ব্যবহারগত সুবিধা একই। ফারাক ব্যবহারের খরচের আর লেনদেনের তথ্য কোথায় থাকছে সেখানেই। তাই আপনার সুবিধা মতো চেয়ে নিন আপনার ‘প্লাস্টিক মানি’।