এ কথা আজ দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে সামগ্রিক ভাবে সুদ আবার বাড়তে চলেছে। যে ভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে তাতে সুদের হার ঊর্ধ্বমুখী হতে আর হয়ত বেশি সময় লাগবে না। বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বাড়ছে। এ দেশেও উৎপাদনের খরচ বাড়ছে। বিশেষত, পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ার প্রভাব মুদ্রাস্ফীতিতে এখনও সে ভাবে না পড়লেও, তার উপস্থিতি কিন্তু জানান দিতে শুরু করেছে। দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কস্ট অফ লিভিং অর্থাৎ জীবন যাপনের খরচও চড়তে শুরু করেছে।
অবসরপ্রাপ্তরা এই অবস্থা কী ভাবে সামলাবেন? আদৌ কি তাঁরা এই মূল্যবৃদ্ধি সামলে নেওয়ার জন্য তৈরি? উত্তরটা জানা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবসরপ্রাপ্ত মানুষ অসুবিধায় রয়েছেন। হয়তো আগামী দিনে তাঁদের সিংহভাগকে আরও কষ্টে থাকতে হবে।
অতএব আজ যে প্রশ্নটা অনিবার্য তা হল, অবসরের পর আর্থিক ভাবে স্বাধীন থাকার জন্য কী করা উচিত? অবশ্যই আমরা এখানে বলব না, দাদা আপনি খরচ কমান, কষ্টে-সৃষ্টে দিন কাটান, বিলাসিতা বর্জন করুন ইত্যাদি। এ সব তো অত্যন্ত ছেঁদো কথা।
বরং আজ বলব, ভিন্ন উপায়ের কথা—
১) আপনার অ্যাসেট অ্যালোকেশনে বা সঞ্চয় যে ভাবে রেখেছেন তাতে বদল আনুন। এমন ভাবে যাতে আপনার নিয়মিত আয়ের পরিমাণ বাড়ে। ‘অ্যাসিওরড রিটার্ন’ বা ‘গ্যারান্টিড ইনকাম’-এর ভাগ যদি অল্প মাত্রায় বাড়ান, দেখবেন কিছু সুরাহা হলেও হতে পারে।
২) অন্যত্র অর্থাৎ ফিক্সড ইনকামের বাইরে, বিশেষ করে ইক্যুইটিতে, আপনার নজর যেন বাড়ে। একটু বেশি ঝুঁকি সহ্য করেও, চেষ্টা করে দেখুন যাতে আপনার শেয়ার বাজারে লগ্নি ফলপ্রসূ হয়। যদি তার জন্য সামান্য বেচা-কেনা বাড়াতে হয়। পিছপা হবেন না। মোদ্দা কথা, ইক্যুইটি বা শেয়ারকেও প্রাধান্য দিন।
৩) আপনার হাতে বা ব্যাঙ্কে থাকে এমন টাকার দিকে নজর দিন। আপৎকালীন অবস্থা সামলাতে হবে ভেবে খুব বেশি মাত্রায় টাকা রেখেছেন কি? মনে করুন এক বার, আপনার পোর্টফোলিওতে টাকার পরিস্থিতি ঠিক কী? টাকা কিংবা লিক্যুইড ফান্ড কি বড্ড বেশি রয়েছে? এখনই হল প্রকৃষ্ট সময় তাকে সামলে আনার। ৩-৪ মাস সংসার চালানোর মতো টাকা হাতের কাছে রাখাই যথেষ্ট। এবং বিপদ-আপদের কথা মাথায় রেখে আরও একটু। তবে দেখুন, পোর্টফোলিও-র ২০ শতাংশের বেশি যেন তা না হয়। যদি তাই হয়ে থাকে, বের করে এনে ঠিক মনের মতো কোনও অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগ করুন। এই পরিস্থিতিতে শর্ট টার্ম ফান্ড দেখতে পারেন, অন্তত আর একটু বেশি রোজগার তো হবে, তাই নয় কি?