প্রতীকী ছবি
বিনিয়োগ নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলোচনায় আমি যা বুঝেছি, তা হল একটা বড় অংশের মানুষই মিউচুয়াল ফান্ডকে শেয়ারে বিনিয়োগের রাস্তা হিসাবেই জানেন। এবং জানেন না যে ফ্ল্যাট, জমি বা বাড়ি এবং ব্যাঙ্কে সঞ্চয়ের মতো কয়েকটি ক্ষেত্রের বাইরে, মিউচুয়াল ফান্ড সঞ্চয়ের গোটা দুনিয়াটাই আপনার মুঠোর মধ্যে এনে দেয়।
আপনি কি চান যে, আপনার সঞ্চয় একটা ভাল আয় দেওয়ার পাশাপাশি সহজে ভাঙিয়ে নেওয়ার সুযোগ করে দেবে? ঝুঁকির কথা ভাবছেন? যে সঞ্চয়ে আয় আছে, সেখানে ঝুঁকি তো থাকবেই। তবে তা কতটা, সেটাই প্রশ্নের। ব্যাঙ্কে টাকা রাখারও তো ঝুঁকি আছে। ভাবুন তো, মহারাষ্ট্র কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের কথা? আর একটু পিছিয়ে গেলে আরও ব্যাঙ্ক ফেল করার আরও উদাহরণ পাওয়া যাবে। কিন্তু এ তো চূড়ান্ত উদাহরণ।মাথায় রাখুন মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রেখে ডোবার উদাহরণ খুব বেশি নেই। আপনি কি গয়না বানিয়ে সোনায় বিনিয়োগ করায় বিশ্বাসী? দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের লক্ষ্যে আপনি গয়না বানাচ্ছেন এবং লকারে রাখছেন। কিন্তু আপনি গয়না বানানোর সময়ে মেকিং চার্জ দিয়েছেন। সোনার দাম বেড়ে সেই খরচ উঠে তারপর কিন্তু আপনি লাভের মুখ দেখতে পারবেন। তার পর রয়েছে বিক্রির ঝামেলা।রশিদ রাখতে হবে। বিক্রির সময় তা প্রয়োজন হবে। সঙ্গে রয়েছে যতটা সোনা গয়নায় আছে,তার পুরো দাম পাওয়া। অনেক সময়েই তা পাওয়া যায় না। তার থেকে সঞ্চয়ের জন্য যদি সোনার কথা ভাবেন, তা হলে সোনা/রুপোতে বিনিয়োগ করতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে। এতে আপনার সোনা বা রুপো রাখার জন্য ব্যাঙ্কে দৌড়তে হবে না। আবার বিক্রি করার হুজ্জোতও পোহাতে হবে না। সরাসরি আপনার ইউনিট ভাঙিয়ে নিতে পারবেন সোনা বা রুপোর চলতি দামে। আর টাকাও ব্যাঙ্কে ঢুকে যাবে সরাসরি। যতটা প্রয়োজন, ততটাই বিক্রি করতে পারবেন। বাকিটা ধরে রাখতে পারবেন ভবিষ্যতের প্রয়োজন মেটাতে। আপনি রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করতে চান, কিন্তু সিঙ্গাপুরে বা অন্য কোথাও এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার টাকা নেই। থাকলেও আপনি সেই ফ্ল্যাট বা বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের ঝক্কি নিতে চান না। তা হলে বিনিয়োগ করতে পারেন রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্ট বা আরইআইটি-তে। এরা বিশ্বজুড়ে অফিস,হোটেল, ডেটা সেন্টার ইত্যাদিতে টাকা ঢালে। আর মিউচুয়াল ফান্ডগুলি টাকা ঢালে এই সব সংস্থায়, আপনার-আমার টাকায়।আপনি অ্যাপল, গুগল এবং ফেসবুকে বিনিয়োগ করতে চান, অথচ আপনার গ্লোবাল ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট নেই? তাতে কোনও অসুবিধা নেই কিন্তু। আবারও হাঁটুন মিউচুয়াল ফান্ডের রাস্তায়। বিনিয়োগ করুন গ্লোবাল ‘টেক’ ফান্ডে আপনার টাকা দিয়েই। একেবারে চেক লেখা বা ফর্মে সই করার মতোই সহজ পদ্ধতি।অথবা আপনি ব্রাজিল বা অস্ট্রেলিয়ার প্রযুক্তির বাজার নিয়ে আশাবাদী। মনে করেন যে, এই দুই দেশে এখন বিনিয়োগ করলে আখেরে আপনার তুলনামূলক লাভ অনেক বেশি হবে। তাই করুন।মোদ্দা কথা, আপনার সমস্ত সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে মিউচুয়াল ফান্ডকে আপনার বিনিয়োগের হাতিয়ার করে তুলতে হবে। দেশে প্রায় ২০ হাজারের মতো প্রকল্প রয়েছে এবং এই সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তাই শুধু মাত্র মিড ক্যাপ বা মাল্টি ক্যাপ নয়, বরং আপনার প্রতিটি আর্থিক প্রয়োজন নিরাপদ ও স্বচ্ছ উপায়ে মেটানোর মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে এই মিউচুয়াল ফান্ড।
প্রতিবেদক সঞ্চয় উপদেষ্টা। বক্তব্য নিজস্ব।
বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাধান খুঁজতে সঞ্চয় নিয়ে আমাদের প্রশ্ন পাঠান — takatalk2023@abpdigital.in এই ঠিকানায় বা হোয়াটস অ্যাপ করুন এই নম্বরে — ৮৫৮৩৮৫৮৫৫২আপনার আয়, খরচ এবং সঞ্চয় জানাতে ভুলবেন না। পরিচয় গোপন রাখতে চাইলে অবশ্যই জানান।