প্রতীকী চিত্র
ঋণপত্র থেকে আয়ের অঙ্কটা একটু কঠিন। কারণ, এখানে দু’ধরনের আয়ের কথা আমরা শুনতে পাই। আর সমস্যাটা তৈরি হয় সেখানেই। ঋণপত্র কিনছি, তাতে একটা নির্দিষ্ট হারে সুদের কথা বলা থাকে। বলতেই পারেন, “আবার অন্য কী আয়ের কথা নিয়ে আলোচনা হয় বুঝি না!”
সত্যিই তো। এটা কেন? ঋণপত্রে দাম কেন ওঠা-নামা করে তা নিয়ে আলাদা আলোচনা করা যাবে। আজ বরং এই দুই আয়ের ফারাকটা বুঝে নেওয়া যাক।
ধরা যাক একটা ঋণপত্র বাজারে ছাড়ার সময় তার দাম ঠিক হল ১০০ টাকা। তার উপর ‘কুপন’ হল ৬ টাকা। মানে, এই ঋণপত্রটি কিনলে আপনি ৬ শতাংশ হারে সুদ পাবেন।
কিন্তু এই ঋণপত্রটি যখন বাজারে ছাড়া হল তখন আপনি কিনলেন না। এবার আপনার মনে হল এই ঋণপত্রটি আপনি বাজার থেকে কিনবেন। বাজারে কিনতে গিয়ে দেখলেন ঋণপত্রটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার প্রাথমিক দামে নয়। এটি বিক্রি হচ্ছে ১০১ টাকা দরে। কুপন বা প্রতিশ্রুত সুদ কিন্তু সেই একই থাকে। আমাদের উদাহরণ অনুযায়ী ৬ শতাংশ। কিন্তু আপনি তা কিনলেন ১০১ টাকায়। তাহলে কি আপনার আয় সেই ৬ শতাংশই থাকবে?
বুঝতেই পারছেন, ১০০ টাকায় ৬ টাকা আয় হলে শতাংশের হিসাবে তা ৬ শতাংশ হলে, ১০১ টাকায় ৬ টাকা আয় হলে শতাংশের হিসাবে তা কমবে। আর একেই পরিভাষায় বলে ‘ইল্ড’।
তো এই ইল্ড কত দাঁড়াবে?
প্রতিশ্রুত সুদ = ৬ শতাংশ
ঋণপত্রের প্রাথমিক দাম = ১০০ টাকা
ঋণপত্রের বাজার দর = ১০১ টাকা
তাহলে ইল্ড হল = (৬ টাকা/১০১ টাকা) X ১০০ = ৫.৯৪ শতাংশ
এবার দেখা যাক অন্য ভাবে। আমাদের উদাহরণ নিয়েই চলি। বাজার দেখা গেল ঋণপত্রটির দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৯০ টাকা। আপনি বাজার থেকে কিনলেন। তাহলে আপনার ইল্ড হল:
(৬টাকা/৯০টাকা) X ১০০ = ৬.৬৬ শতাংশ
এই হল কুপন আর ইল্ডের ফারাক। কুপন হল প্রতিশ্রুত সুদ আর ইল্ড হল বাজারে যে দামে আপনি ঋণপত্রটি কিনছেন সেই দামের ভিত্তিতে প্রতিশ্রুত কুপন কত শতাংশ। এই হিসাবটা করতে হয় কারণ আপনি তো বিনিয়োগ করেন লাভের হিসাব করেই। তাই শতাংশের হিসাবে এই অঙ্কটি করলে আপনি সহজেই বুঝে যান তুলনামূলক লাভের অঙ্কটা।