coronavirus

কেন প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের আগে রক্তদান করার অনুরোধ করছেন চিকিৎসকেরা

২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সিরাই মূলত রক্তদান করেন। কিন্তু টিকাকরণের পর বেশ কিছু দিন তাঁরা রক্ত দিতে পারবেন না।

Advertisement

পৃথা বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ২০:০৮
Share:

টিকা নেওয়ার আগে রক্তদানের অনুরোধ করা হচ্ছে, কিন্তু কেন? ছবি: সংগৃহীত

এখন শুধু ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের জন্য চলছে টিকাকরণ। কিন্তু ১মে’র পর থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধে সকলেই প্রতিষেধক নিতে পারবেন। তা নিয়ে চিন্তিত বিভিন্ন চিকিৎসক এবং ব্লাড ব্যাঙ্ক। কারণ ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সিরাই মূলত রক্তদান করেন। কিন্তু টিকাকরণের পর বেশ কিছু দিন তাঁরা রক্ত দিতে পারবেন না। ফলে রক্ত দেওয়ার লোকের অভাব পড়বে। গ্রীষ্মকালে এমনিতেই রক্ত পেতে অসুবিধা হয় প্রত্যেক বছর। কিন্তু এবার সেই সঙ্কট চরমে উঠবে বলে আশঙ্কা অনেকেরই।

Advertisement

কোন প্রতিষেধক নেওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে, কত বিরতিতে ফের রক্তদান করা যাবে। ‘ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিল’এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিষেধক নেওয়ার ২৮ দিন পর পর্যন্ত রক্তদান করা যাবে না। এবার যাঁরা প্রথম দফার কোভ্যাক্সিন নেবেন, তাঁদের দ্বিতীয় দফা নেওয়ার জন্য ২৮ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ফলে সব মিলিয়ে তাঁকে ৫৬ দিন অপেক্ষা করতে হবে রক্তদান করার জন্য। আর যাঁরা কোভিশিল্ডের প্রথম দফা নেবেন, দ্বিতীয় দফা নেওয়ার আগে অন্তত ৮ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। ফলে তাঁদের রক্তদান করতে আরও বেশি দিন সময় লাগবে।

এতেই আতঙ্কে রয়েছেন বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক। মানুষের বিপদে রক্তের ব্যবস্থা করে দেয় ফেসবুকের এক পেজ ‘ব্লাডমেট্‌স’। সেই পেজের তরফ থেকে প্রিয়ম সেনগুপ্ত এ বিষয়ে বললেন, ‘‘প্রত্যেকবারই গ্রীষ্মে একটা রক্ত সঙ্কট দেখা দেয়। কোভিড-কালে সে সঙ্কট আরও বেড়েছে কারণ মানুষ রক্ত দিতে চাইছেন না। যে বয়সের মানুষ সাধারণত এগিয়ে এসে রক্তদান করেন, তাঁরা সকলেই যদি একসঙ্গে প্রতিষেধক নেন, তা হলে রক্ত দেওয়ার লোকের অভাব পড়বে। এতে আরও অসুবিধা হবে ক্যানসার রোগীদের। বা যে রোগীদের মাসে দু’তিন বার করে রক্ত লাগে।’’

Advertisement

বহু বেসরকারি হাসপাতাল বাইরে থেকে আনা রক্ত ব্যবহার করতে চায় না। তাই সেখানে কোন রোগীর রক্তের প্রয়োজন হলে রক্তদান করার লোককে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে রোগীর আত্মীয়-প্রিয়জনদের রক্ত দেওয়া হয়ে গেলে, তাঁরা আর অন্য কাউকে সহজে পাবেন না। ফলে একটা সঙ্কট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন রক্তদান শিবিরগুলোর আয়োজন করে রাজনৈতিক দলগুলি অথবা কলেজ পড়ুয়ারা। এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ। নেতারাও নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। ফলে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার মানুষও কম।

এই সঙ্কট থেকে বাঁচার এর অবশ্য একটি উপায় রয়েছে। যদি সকলেই প্রতিষেধক নেওয়ার এক দিন আগে রক্তদান করেন। সেই আবেদনই জানাচ্ছেন বহু চিকিৎসক। ক্যানসার চিকিৎসক উজল মণি এ বিষয়ে বললেন, ‘‘একটু সচেতনার বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে যাঁরা প্রতিষেধক নেবেন, তাঁরা যদি দু’-এক দিন আগে রক্তদান করেন, তা হলে কিছুটা হলেও সঙ্কট কাটে। যাঁরা ক্যানসার বা থ্যালাসেমিয়ার রোগী, তাঁদের তো নিয়মিত রক্ত লাগবে। আমরা পরিকল্পিত সার্জারি পিছিয়ে দিতে পারি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের সার্জারি করতেই হবে। তখন তো প্লেটলেট লাগবেই। তাই সঙ্কট বেশ গুরুতর হতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement