প্রতীকী ছবি।
মাঝেমাঝেই রাত ৩টের সময়ে ঘুম ভেঙে যায়? এক বার ঘুম ভাঙার পর আর কিছুতেই ঘুমোতে পারেন না অনেকেই। খানিক এ পাশ ও পাশ করে, জল খেয়ে, বাথরুম গিয়ে ঘুম কেটে যায় পুরোপুরি। তার পরে বিছানায় শুলেই মনে ভিড় করে আসে যাবতীয় চিন্তা। অফিসের কাজের চাপ, প্রেমিকার জমে থাকা অভিমান, মায়ের বায়না, বাবার ডাক্তার দেখানো— দুনিয়ার যাবতীয় চিন্তা যেন এই সময়েই ফিরে ফিরে আসে। ব্যস! বাকি রাতটা আর সে ভাবে ঘুমই এল না। যত ক্ষণে এল, তত ক্ষণে হয়তো ঘুম থেকে উঠে কাজে বেরোনোর সময় হয়ে এসেছে।
এমনটা যদি আপনার সঙ্গে প্রায়ই হয়, তা হলে এই নিয়ে খুব একটি দুশ্চিন্তা করবেন না। চিকিৎসকরা বলছেন, রাত ৩টে থেকে ৪টে’র মধ্যে ঘুম ভেঙে যাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। আপনি একা নন, অনেকেরই নাকি এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েই থাকে। কেন এমন হয়? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ে শরীরের তাপমাত্রা বাড়া শুরু করে, ঘুম পাতলা হওয়া শুরু করে, ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন ইতিমধ্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষরণ হয়ে গিয়েছে, করটিসোল হরমোন (মানসিক চাপ) বাড়া শুরু করে (আগামী দিনের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে)। ভোর হওয়া, বা দিনের আলো ফোটার মতো পারিপার্শ্বিক ঘটনার সঙ্গে এই সব বদলের খুব একটা যোগ সাধারণত থাকে না। শরীরের স্বাভাবিক নিয়মেই এই বদলগুলি ঘটতে থাকে। তাই শেষ রাতের দিকে ঘুম ভেঙে যাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা।
প্রতীকী ছবি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যে কোনও মানুষের সারা রাতে একাধিক বার ঘুম ভাঙে। কিন্তু ঘুম যখন গাঢ় হয়, তখন এই ঘুম ভেঙে যাওয়াগুলি খুব একটা টের পাওয়া যায় না। কিন্তু শেষ রাতে ঘুম পাতলা হওয়ায় আমাদের চেতনা অনেক বেশি সজাগ থাকে। মানসিক চাপ বেশি থাকলেও ঘুম ভেঙে যাওয়া নিয়ে অনেক বেশি সজাগ হয়ে যায় মস্তিষ্ক।
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে যে চিন্তাগুলি আমাদের মনে ভিড় করে, সেগুলি সাধারণত আত্মকেন্দ্রিক হয়। রাতের এই সময়ে আমাদের সামাজিক এবং শারীরিক সব রকম আদান-প্রদান একদমই থাকে না। যেহেতু অন্য কোনওই কাজ থাকে না, তাই মস্তিষ্কে যাবতীয় চিন্তা ভিড় করে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের সমস্যা এড়াতে ঘুম ভেঙে গেলে জোর করে ঘুমোনোর চেষ্টা না করে অন্য কিছুতে মনোযোগ দেওয়া চেষ্টা করতে। যেমন একটি হাল্কা আলো জালিয়ে কোনও বই পড়তে পারেন। কিছু ক্ষণ পর আপনিই ঘুম চলে আসবে।