Relationship

Marital Life: অটুট থাকুক সম্পর্কের রসায়ন

দাম্পত্যজীবনেও সম্পর্ক সযত্ন লালন করতে হয়। তা হলেই ভালবাসা-আনন্দ বেঁধে রাখবে দু’জনকে

Advertisement

শ্রেয়া ঠাকুর

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২১ ০৮:৪০
Share:

অস্মিতা ও অনির্বাণের বিয়ে হয়েছে বছর খানেক। এই এক বছর তারা ঠিক যে ভাবে প্ল্যান করেছিল সে ভাবেই কেটেছে। কিন্তু কিছু দিন ধরে কথা কাটাকাটি বেড়ে গিয়েছে। সব কিছু হয়ে গিয়েছে বড় গতানুগতিক...‘স্পার্ক’ হারিয়ে গিয়েছে যেন সম্পর্কের! ক্লান্ত লাগে অস্মিতার। মনে হয় সব ছেড়ে কোথাও চলে গেলে বেশ হত। সমস্যাটা নতুন নয়, রয়েছে সমাধানও। কিন্তু তার আগে জানতে হবে ঠিক কী কারণে ‘স্পার্ক’ হারিয়ে যায়।

Advertisement

ভুল বোঝাবুঝি, বিরক্তি ও মানসিক দূরত্ব— এই ত্র্যহস্পর্শ যোগে সম্পর্কের রসায়ন দুর্বল হতে শুরু করে। যত দিন যায় ভালবাসার স্বতঃস্ফূর্ততা রোজকার ‘টু ডু লিস্ট’-এর আওতায় পড়ে যায়। ফলে কয়েক দিন আগেও যে মানুষটার ভুল চোখে পড়ত না, এখন সেগুলোই হয়ে ওঠে প্রকট। ব্যস, অমনি শুরু ছোট-ছোট অশান্তি!

তবে ওই যে বললাম, সমস্যাটা কিন্তু নতুন নয়। বিয়ের পরেও সম্পর্কে গভীর রসায়ন বজায় রাখার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি সহজ রাস্তা—

Advertisement

সহিষ্ণু হন, বোঝার চেষ্টা করুন

দু’জনের মধ্যে কোনও ফারাক থাকবে না, এই ভাবনা অবাস্তব। কিন্তু এই ফারাকের প্রতি যদি সহিষ্ণু হতে না পারেন, তা হলে সম্পর্কে ফাটল দেখা দিতে পারে। সময় যত এগোয়, দু’জনের পার্থক্য একে অপরের সামনে আসতে থাকে। তখন সহিষ্ণুতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এ সময় থেকেই সম্পর্কের ভিত জোরালো হতে থাকে। কথা কাটাকাটিতে মেজাজ হারালেও পরে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। সমস্যার মূলে পৌঁছন, একে অপরের চিন্তাধারাকে মেনে নিয়েই। দেখবেন, ফিরে আসছে রসায়ন।

সময় কাটান একসঙ্গে

একসঙ্গে থাকতে থাকতে জীবন হয়ে ওঠে গতানুগতিক ও ব্যবহারিক। তা কিন্তু খুব সহজেই এড়ানো যায় পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটালে। মনে করুন সম্পর্কের শুরুর দিকের কথা, যখন একসঙ্গে সিনেমা দেখা, খেতে যাওয়া, গল্প পড়ে শোনানোর জন্য মুখিয়ে থাকতেন দু’জনে। এখনও তাই করুন। সপ্তাহের একটা ছুটির দিন একসঙ্গে কাটান। শুধু নিজেদের নিয়ে। সিনেমা দেখুন, রান্না করুন একসঙ্গে। দেখবেন, ‘স্পার্ক’-এর কমতি পড়বে না।

সারপ্রাইজ় দিন

ছুটির দিনে আপনার সঙ্গী ঘুম থেকে উঠে দেখলেন তাঁকে কিছুই করতে হবে না। আপনি দিব্যি সুন্দর লাঞ্চ থেকে ডিনার সমস্তটাই প্ল্যান করে ফেলেছেন। উপরি, খাওয়াদাওয়ার পরে একটা স্পা ট্রিটমেন্ট। বিশ্বাস করুন, এই যে আপনি সারপ্রাইজ় দিলেন... আপনার ঝিমিয়ে যাওয়া সম্পর্ক এগিয়ে গেল বেশ কয়েক পা। এ ছাড়া টুকটাক পছন্দের জিনিস কিনে দেওয়া তো আছেই। এমনও হতে পারে, কথায় কথায় জেনে নিলেন পার্টনারের দিন কয়েকের ছুটির কথা। টুক করে ব্যবস্থা করে ফেললেন একটা শর্ট ট্রিপের। মোদ্দা ব্যাপার, সঙ্গীকে অনুভব করান যে, সে আপনার জগতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বামীর জন্মদিনে বা বিবাহবার্ষিকীতে সারপ্রাইজ় পার্টি দিয়েও চমকে দিতে পারেন তাঁকে।

আবেগ হারাতে দেবেন না-

শুধু কেজো কথায় দিন যেন কেটে না যায়। সম্পর্কের শুরু হয়েছিল যে আবেগ দিয়ে, রোজকার যাপনের চাপে তা যেন ফিকে না হয়ে যায়। বিশেষ কথা, বিশেষ অনুভূতি বাঁচিয়ে রাখুন। সম্পর্ক যত পুরনো হবে, তার সঙ্গে মেশান আবেগ ও অন্তরঙ্গতা। নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। মাঝে-মাঝে নস্ট্যালজিয়া-বিলাসও কিন্তু সম্পর্কে আকর্ষণ ফিরিয়ে আনতে দিব্যি সাহায্য করে।

‘মি-টাইম’ প্রয়োজনীয়

সম্পর্কে স্পার্ক বজায় রাখার জন্য নিজেকে ভাল রাখা দরকার। সেই ভাল থাকার বরাত কখনও সঙ্গীর হাতে ছেড়ে দেবেন না। নিজেকে ভাল রাখার দায়িত্ব আমাদের নিজেদেরই। তাই প্রয়োজন মি-টাইম এর। নতুন নতুন অ্যাক্টিভিটিতে অংশ নিন। অবসরে ভাল বই পড়ুন। একাই কোথাও ঘুরে আসতে পারেন। এর ফলে দুটো সুবিধে হবে, কথা বলার বিষয়ের অভাব হবে না। সম্পর্কের বাইরেও নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাবেন। যার সদর্থক ও স্বতঃস্ফূর্ত প্রভাব পড়বে সম্পর্কে।

বিয়ে মানেই সম্পর্কের পরিণতি নয়

বিয়েই সম্পর্কের পরিণতি, এই ধারণা মন থেকে মুছে ফেলুন। ভালবাসা স্বতঃস্ফূর্ত হলেও তার যত্ন প্রয়োজন। আবেগ ও অন্তরঙ্গতার পরশ দিতে হয় তাকে। বিয়ের পরে অনেকেরই সম্পর্কের প্রতি অযত্ন চলে আসে। এতে কিন্তু সম্পর্কে ক্ষতি হয়। বিয়ে মানে আপনারা একটা নতুন জীবন শুরু করেছেন। সেই জীবনের প্রতিটা রাস্তা অন্যরকম। তা অন্তর দিয়ে অনুভব করুন। একই সঙ্গে খেয়াল রাখুন নিজের ও সঙ্গীর। দেখবেন, রসায়ন হয়ে উঠবে মধুময়।

মডেল: সুস্মেলি দত্ত, জয়দীপ সিংহ

ছবি: দেবর্ষি সরকার

মেকআপ: অভিজিৎ পাল

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement