চার দেওয়ালে বন্দি জীবনে দেওয়ালই কিন্তু দিতে পারে অফুরন্ত এনার্জি। দেওয়ালে ভর দিয়েই শুরু করতে পারেন ব্যায়াম। রাস্তাঘাটে অনেককেই বেরোতে হচ্ছে ঠিকই, তবুও বেশির ভাগ অবসর সময় কাটছে বাড়িতে। সেই সময়টা দেওয়ালকেই প্রপস বানিয়ে শুরু করে দিন এক্সারসাইজ়।
• স্ট্যান্ডার্ড ওয়াল পুশআপস: এই ধরনের পুশআপ দিয়ে ওয়াল ওয়র্কআউট শুরু করতে পারেন। দেওয়াল থেকে দেড় হাত মতো দূরত্বে পা রাখুন। এ বার দেওয়ালের উপরে ঝুঁকে পড়ে সাপোর্ট দিন দু’হাতের উপরে। এ বার শুয়ে যেমন পুশআপস করেন, সেভাবেই হাতে চাপ দিয়ে পুরো শরীর একবার দেওয়ালের কাছে নিয়ে যাবেন, আবার আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনবেন।
• ওয়াল পুশআপস: দেওয়ালের পা স্পর্শ করে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার একে একে পা-দুটো মাটি থেকে প্রায় ১২ ইঞ্চি উচ্চতায় তুলে দেওয়ালে ভর দিন। পুশআপ পজ়িশনে হাতের উপরে চাপ দিয়ে শরীর উপর দিকে তুলুন। নর্মাল পুশআপের চেয়ে দুই হাতের মধ্যে ব্যবধান বেশি থাকবে, শরীরকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। এ বার পাঁচ বার পুশআপ করুন। এ ভাবেই তিন সেট পুশআপ করুন। পাঁচ বার করে তিন বার। এতে হাত ও পায়ের পেশির গঠন সুঠাম হবে।
• ওয়াল প্ল্যাঙ্ক: ওয়াল পুশআপের পজ়িশনে বডি রাখতে হবে। এ বার প্রথমে ডান পা দেওয়াল থেকে তুলে ভাঁজ করে বুকের কাছে নিয়ে আসুন। আবার ডান পা দেওয়ালে সাপোর্ট দিয়ে আবার বুকের কাছে নিয়ে আসুন। এ ভাবে পাঁচ বার করে তিন সেট করতে হবে। তিন সেট সম্পূর্ণ হলে ডান পা দেওয়ালে সাপোর্ট দিয়ে বাঁ পা ভাঁজ করে বুকের কাছে নিয়ে আসুন। এ ভাবে বাঁ পায়েও পাঁচ বার করে তিন সেট ওয়াল প্ল্যাঙ্ক করতে হবে। এতে পা ও হাতের পেশির গঠন সুঠাম হওয়ার সঙ্গে বেলি ফ্যাটও ঝরে যায়।
• হ্যামস্ট্রিং ব্লাস্টারস: দেওয়ালের দিকে পা করে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। এ বার ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গলে দেওয়ালে পা রাখুন। পায়ে ভাঁজ তৈরি হবে। এ বার ধীরে ধীরে হিপ মাটি থেকে তুলুন আবার মাটির কাছে নামিয়ে আনুন। কিন্তু মাটি স্পর্শ করবেন না। এ ভাবে ১২-১৫ বার করতে হবে।
• বার্পিজ়: প্রথমে দেওয়ালের দিকে পিছন ফিরে দাঁড়ান। কোমর থেকে পায়ের দৈর্ঘ্যের মতো দূরত্ব থাকবে দেওয়াল থেকে শরীরের। এ বার সামনে ঝুঁকে হাতের উপরে ভর দিন। পিছন দিক থেকে পা তুলে দেওয়ালে সাপোর্ট দিয়ে শরীর শূন্যে ভাসিয়ে দিন। কিছুক্ষণ এই পজ়িশন ধরে রাখুন। লাফিয়ে নামুন মাটিতে। আবার আগের মতো পজ়িশনে ফিরে যান।
• ওয়াল স্কোয়াট: এর জন্য দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়ান। এ বার আস্তে আস্তে নীচের দিকে নেমে চেয়ারে বসার ভঙ্গিতে বসুন পায়ের উপরে ভর করে। হাত রাখুন সামনে পায়ের সমান্তরালে। আর পা ভাঁজ থাকবে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গলে।
• ওয়াল সিসর: দেওয়ালের দিকে পা দিয়ে মাটিতে সোজা শুয়ে পড়ুন। থাইয়ের অংশ দেওয়ালের কাছে রেখে পা দেওয়ালে তুলে দিলেন। দেওয়াল থেকে শরীরের মাঝে খানিকটা দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ বার একটা পা দেওয়াল থেকে মাথার দিকে টেনে নিন। কাঁচি খুললে যেমন লাগে, তেমন দেখাবে পায়ের পজ়িশন। এর পরে সেই পা চলে যাবে আবার দেওয়ালে। অন্য পা দেওয়াল থেকে আবার মাথার দিকে নিয়ে যেতে হবে। এ ভাবে পাঁচ বার করে তিন সেট ব্যায়াম করতে হবে।
• ওয়াল হেডস্ট্যান্ড: প্রথম প্রথম হাতের উপরে পুরো শরীরের ভার বওয়া সহজ নয়। তাই শুরু করুন দেওয়াল ধরে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে প্রথমে বসে পড়ুন। এ বার সামনে হাতের উপরে ভর দিয়ে পিছন দিকে পা তুেল দিন। দেওয়ালে সাপোর্ট দিয়ে উপরের দিকে ধীরে ধীরে পা তুলে ধরুন। এ বার সেই পা সোজা করে রাখার চেষ্টা করতে হবে কিছুক্ষণ। কোমরে ব্যথা থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নিয়ে এই ব্যায়াম করবেন না।
এ ছাড়াও অ্যাবস, থাই ও হাতের পেশির জন্য ওয়াল ওয়র্কআউটও অনেক রকমের হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সেই ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। তবে ওয়াল এক্সারসাইজ়ে প্রথমে হেডস্ট্যান্ডের মতো কঠিন ব্যায়াম করতে যাবেন না। হালকা স্ট্যান্ডার্ড পুশআপ, স্কোয়াট দিয়ে শুরু করুন। সপ্তাহখানেক পরে শরীর ফ্লেক্সিবল হলে তবে ক্রমশ কঠিন ব্যায়াম আয়ত্তে আনার চেষ্টা করুন।