একাধিক মাস্ক একসঙ্গে পরা ভাল।
একটা নয়, একসঙ্গে ২টো মাস্ক পরলে সংক্রমণ আটকানো যাবে বেশি। এমনই বলছেন চিকিৎসকরা।
কোভিড ১৯ ভাইরাস সংক্রমণ এখনও পুরোদস্তুর বহাল রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর মতে, নাম কা ওয়াস্তে কেতাদুরস্ত মাস্ক নয়, একই সঙ্গে ২টি এবং আঁটোসাঁটো মাস্কই পারে কোভিড-১৯ এর মতো অত্যন্ত ছোঁয়াচে ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে। ফ্লোরিডার ‘আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, মাস্ক না থাকলে ড্রপলেট প্রায় ৮ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত গিয়ে অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে। কিন্তু দু’টি মাস্ক পরে থাকলে ২.৫ ইঞ্চির বেশি ড্রপলেট ছড়িয়ে পড়তে পারে না।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী জানালেন, কোভিডের টিকা দেওয়া শুরু হলেও, সঠিক ভাবে মাস্ক পরাকে আমাদের জীবনের অঙ্গ করে নেওয়াই ভাইরাস আটকানোর একমাত্র পথ। ‘‘তা ছাড়া মনে রাখতে হবে, কোনও টিকাই ১০০ শতাংশ রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম নয়। এখন কোভিডের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তা ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। তাই মাস্ক খুলে ভিড় বাড়ালে কোভিড ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থাকে’’, বলছেন সুবর্ণ।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ দেবকিশোর গুপ্তর মতে, একটু কষ্ট করে মাস্ক দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখলে অনেক সংক্রমণই প্রতিরোধ করা যায়। ‘‘অন্যান্য বছরের তুলনায়, এই বছরে ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, চিকেন পক্স, টনসিলাইটিসের মতো সংক্রামক অসুখের ঝুঁকিও অনেক কমেছে। মাস্ক পরার মূল উদ্দেশ্য বাতাসে ভেসে থাকা ভাইরাস আটকে দেওয়া’’, বলছেন তিনি। তবে তাঁর মতেও, রংবেরঙের ফ্যাশনেবল মাস্ক পরে কোনও লাভ নেই।
কেরলে স্কুল খোলার পর বহু ছাত্র ও শিক্ষক নতুন করে কোভিডের শিকার হয়েছেন। তাই মাস্ক পরার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে দেবকিশোর গুপ্তর পরামর্শ। পারলে সুতির ২টো মাস্ক একসঙ্গে পরতে হবে এবং বাড়ি ফিরে সাবান দিয়ে রোজ কেচে নিতে হবে। মাস্ক না পরে বাইরে যাওয়া লজ্জার ব্যাপার, এই ধারণা মজ্জায় মিশিয়ে নিলেই ভাল। এমনই পরামর্শ দেবকিশোরের।
সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, মহামারি বা অতিমারি এক বার হয়েই শেষ হয়ে যায় না। আবার ফিরে আসার ঝুঁকি থাকে। মাস্ককে জীবনের অঙ্গ করতে পারলে, ভবিষ্যতের মহামারিকেও আটকে দেওয়া যাবে।