Tatto

ভাবনাচিন্তা না করে আবেগের বশে ট্যাটু করাচ্ছেন? পরে পস্তাতে হবে না তো?

মন জুড়ে যিনি রয়েছেন, তাঁরই নাম ফুটিয়ে তুলতে চান শরীরে? আজ যে ট্যাটু ভাল লাগছে, কালও পছন্দ হবে কি? পরে পস্তাতে হবে না তো?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:১০
Share:

ট্যাটু করানোর আগে ভেবে দেখা দরকার। ছবি: সংগৃহীত।

খোলা পিঠ, পা-হাতের ত্বকে উঁকি দেওয়া রং-বেরঙের নকশা বিগত পাঁচ-ছয় বছর ধরেই ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। ট্যাটু নিয়ে নতুন প্রজন্মের আলাদা আকর্ষণ রয়েছে। কারও পছন্দ বিশেষ মানুষটির নাম, কেউ আবার শরীরে আঁকছেন আধ্যাত্মিক চিহ্ন, কেউ বেছে নিচ্ছেন প্রেমের উক্তি। তারকা থেকে আমজনতার শরীরের নানা অংশে এখন উঁকি দিয়ে যায় ট্যাটু। গত কয়েক বছরে সাজসজ্জার অঙ্গ হয়ে হয়ে উঠেছে তা।

Advertisement

সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে কি ট্যাটু করাবেন মনস্থির করেছেন? তা হলে একটু ভাবনাচিন্তাও জরুরি। পোশাক ভাল না লাগলে পাল্টে ফেলা যায়। প্রেমাস্পদের সঙ্গে মনের মিল না হলে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা যায়। কিন্তু স্থায়ী ট্যাটু হয়ে গেলে তা চট করে মুছে ফেলা যায় না। ট্যাটু তোলার পদ্ধতি যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমন যন্ত্রণাদায়কও। পেশাদার কারও কাছে গেলেন আর চট করে তা উঠে গেল— বিষয়টি মোটেও এতটা সহজ নয়। ঠিক সে কারণেই ট্যাটু করানোর আগে আবেগ নয়, যুক্তিবুদ্ধি জরুরি।

ট্যাটু নিয়ে নতুন প্রজন্মের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হলেও, এর ইতিহাস বেশ পুরনো। ট্যাটু নয়, উল্কি আঁকার চল ছিল ভারতে। প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে উল্কির প্রচলন ছিল। কখনও জয়ের সূচক হিসাবে, কখনও নিজস্ব উপজাতির টোটেম বা প্রতীক হিসাবে শরীরে তা ধারণ করতেন সে যুগের মানুষ। কোনও কোনও সম্প্রদায়ের বিশ্বাস ছিল, অশুভ শক্তির হাত থেকে বিশেষ উল্কি রক্ষা করতে পারে।

Advertisement

বর্তমানেও নানা ভাবনা থেকেই লোকজন উল্কি করান, বলছেন একটি জনপ্রিয় ট্যাটু সংস্থার শিল্পী লোকেশ বর্মা। তাঁর কথায়, ট্যাটু করানোর পিছনে কারও সংস্কৃতিমনস্কতা, কারও আবার নিছক আবেগ কাজ করে। কেউ নিজের অনুভূতি ভাবনা প্রকাশে ট্যাটু করান, কেউ আবার নেহাত হুজুগে কিংবা শখে। আর একটি সংস্থার ট্যাটু শিল্পী প্রশান্ত যদুবংশী বলছেন, ‘‘ভাগ্য ফিরবে, সুখ-সমৃদ্ধি মিলবে, এমন ভাবনা থেকেও অনেকেই বিশেষ প্রতীক বা নকশার ট্যাটু করাতে আসেন। আসলে, প্রত্যেকেরই ট্যাটু নিয়ে নিজস্ব ভাবনা থাকে।’’

ট্যাটু তোলার দরকার কেন হবে?

ট্যাটু করানোর পিছনে কারও আধ্যাত্মিক ভাবনা যেমন থাকে, তেমনই থাকে আবেগ। প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন, মনে হচ্ছে সেই মানুষটিকে ছাড়া জীবন বৃথা। তাঁর নাম শরীরে খোদাই করতে ছুটে আসছেন ছেলেমেয়েরা।

কিন্তু আজ যা ভাল, কালও কি তাই! প্রেম ভাঙলে, হাতে লেখা নাম উঠবে কী ভাবে? জীবনে নতুন সম্পর্কের সুবাদে নতুন নাম লেখা যেতে পারে, কিন্তু পুরনো নাম মুছে ফেলা সহজ নয়। কারও আবার এখন যে নকশা পছন্দ হচ্ছে, পরে সেটিকেই আর ভাল লাগছে না। কিন্তু উন্মুক্ত স্থানের সেই ট্যাটু তুলতে যাওয়া আর এক ঝক্কি।

উপযুক্ত স্থান কোনটি?

ট্যাটুশিল্পীরা বলছেন, কব্জি, বাহুতে সাধারণত ট্যাটু করার যন্ত্রণা কম হয়। তাই এই স্থানই লোকে বেছে নেন। তবে নকশা, ভাবনা, রং— এই সমস্ত কিছুর উপর নির্ভর করে কোথায় করলে তা দেখতে ভাল লাগবে।

ট্যাটু কি উন্মুক্ত স্থানেই হওয়া উচিত?

ট্যাটুশিল্পী লোকেশ বর্মার কথায়, কেউ চান নকশা দেখাতে, বিশেষ নাম ফুটিয়ে তুলতে। আবার কেউ শরীরের এমন অংশেও ট্যাটু করান, যা দৃশ্যমান নয়। পুরোটাই নির্ভর করছে যিনি করাবেন, তাঁর মানসিকতা এবং চাহিদার উপরে। তবে আর এক শিল্পী মানছেন, যদি কোনও নাম বা ভাবনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় থাকে, তা হলে তা উন্মুক্ত স্থানে না করানোই ভাল।

পস্তাচ্ছেন কি কেউ?

তরুণ-তরুণীরা অনেকেই আবেগের বশে প্রিয় মানুষটির নাম লিখিয়ে ফেলেন। পরে সেই সম্পর্ক না টিকলে শুরু হয় সমস্যা। ট্যাটুশিল্পীদের কথায়, এই তালিকায় শুধু কমবয়সিরা নন, বয়স্করাও রয়েছেন। আবার কোনও একটি নকশা ছবিতে যেমন লাগছিল, ট্যাটুতে তা নিখুঁত না হলেও লোকজন তুলতে চান। এ কারণেই তাঁদের পরামর্শ, নকশা করানোর আগে তা কতটা মানানসই হবে, সে ব্যাপারে শিল্পীর পরামর্শ নেওয়া দরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement