নিজেকে ভাল রাখতে কী কী করবেন? প্রতীকী ছবি।
নিজের যত্ন মানে কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের খেয়াল রাখা নয়, মনের খেয়ালও রাখা প্রয়োজন। সঠিক সময়ে খাওয়া, ঘুম, শরীরচর্চা, রূপচর্চা— সবই জরুরি। সংসার ও পেশাগত পরিশ্রম, দায়দায়িত্ব যতই থাকুক, দিনের শেষে আয়নার সামনে দাঁড়ালে যেন নিজেকে নিজেরই ভাল লাগে, সেই চেষ্টাই করা জরুরি। নিজের প্রতিই যদি একঘেয়েমি চলে আসে, তা হলে শরীরে যেমন তার প্রভাব পড়বে, তেমনই মনেও একরাশ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মেঘ জমবে। তাতে সৌন্দর্যের দফারফা তো হবেই, রোজের কাজেও উৎসাহ ও উদ্দীপনা কমবে।
রোজের রুটিনে কিছুটা সময় নিজের জন্যও রাখা জরুরি। এই বিষয়ে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, “মহিলারা নিজের খেয়াল রাখতে ভুলে যান বেশির ভাগ সময়েই। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত এক ঘণ্টা নিজের জন্য রাখা যেতেই পারে। বেশি কিছু নয়, ত্বক ও চুলের সামান্য পরিচর্যা, ১৫ মিনিট শরীরচর্চা, নিজের রোজনামচা ডায়রিতে লিখে রাখা অথবা পছন্দের কোনও একটি কাজ করা। তা হলেই শরীরের পাশাপাশি মনও ভাল থাকবে।”
দৈনন্দিন জীবনে কিছু ছোট ছোট অভ্যাস রপ্ত করতে পারলেই নিজেকে ভাল রাখা যায়।
নিজের খেয়াল রাখতে কোন কোন কাজ আগে করবেন?
১) নিয়ম করে শরীরচর্চা খুব জরুরি। অনিন্দিতার কথায়, হাঁটাহাঁটি, স্পট জগিং অথবা কার্ডিয়ো, ওয়েট ট্রেনিং জানলে করা যেতে পারে। কোনও প্রশিক্ষকের থেকে যোগাসন, প্রাণায়াম, ধ্যানের পদ্ধতি শিখে রাখলে খুব ভাল। প্রতি দিন নিয়ম করে কিছু ক্ষণ শরীরচর্চা করলেই গোটা দিনের জন্য শরীর তরতাজা থাকবে। খিদে-ঘুমও ভাল হবে। হরমোনের ক্ষরণ স্বাভাবিক থাকবে, ফলে যে কোনও কাজেই উৎসাহ বাড়বে।
২) খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। সুষম খাবার খেতে হবে। প্রাতরাশ ভুলে গেলে চলবে না। বয়স ত্রিশ পেরিয়ে গেলে পুষ্টিবিদের থেকে ডায়েট চার্ট করিয়ে নিয়ে তা মেনে চললে ভাল হয়। উচ্চতা, বয়স, ওজন অনুপাতে সুষম খাবারের তালিকা করে দেবেন পুষ্টিবিদ। সেই মতো খেলে ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিনের মাত্রা ঠিক থাকবে। বয়স বাড়লে ক্যালশিয়ামের ঘাটতিও হবে না।
৩) ত্বকের যত্ন নিন। হাতের কাছে দুধ, বেসন, মধু সকলেরই থাকে। পরিমাণ মতো মিশিয়ে মুখে, গলায়, ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। দু’সপ্তাহে এক বার চালের গুঁড়ো বা কফি পাউডার আর সামান্য টকদই মিশিয়ে মুখ, হাত-পা মাসাজ করুন। নিজেকে তরতাজা দেখালে, মনও ভাল থাকবে।
৪) সপ্তাহে এক দিন রাতে নারকেল তেল গরম করে মাথার ত্বকে মালিশ করুন। হাতের তালু, পায়ের তলা, ঘাড়, কাঁধ, কপাল আলতো করে চাপ দিয়ে মালিশ করুন। অনেকটাই হালকা লাগবে। তার জন্য গাঁটের কড়ি খসিয়ে সাঁলোয় যাওয়ার দরকার নেই।
৫) নখে পুরনো নেলপলিশ রেখে দেবেন না। রিমুভার দিয়ে তুলে হয় নখ পরিষ্কার রাখুন, না হলে নতুন নেলপলিশ লাগিয়ে নিন।
৬) মাঝেমধ্যে রূপটানেও বদল আনুন। চুলের ছাঁট বদলে ফেলুন, নতুন রকম হেয়ার কালার বা হেয়ার ট্রিটমেন্ট করিয়ে দেখতে পারেন। নিজেকে অন্য রকম লাগবে। নতুন কিছু করার উৎসাহ জাগবে, রোজের একঘেয়েমি কেটে যাবে।
৭) সব ব্যস্ততার মাঝেও নিজের শোয়ার ঘর, কাজের জায়গা মাঝেমাঝে গুছিয়ে নিন। তবে কাজে মন বসবে। বিশ্রামের সময়েও মন ভাল থাকবে। মাঝেমধ্যে বিরতিও নিন। ছুটির দিনটিতে কেবল নিজের ভাল লাগার কাজ করুন। তা হলেই মন ও মেজাজ দুইই ভাল থাকবে।