ছবি: সংগৃহীত।
ছোট থেকে শুনে এসেছেন প্রবাসের পুজোর কথা। তবে মন থেকে কোনও দিন মেনে নিতে পারেননি বাংলার পুজোর সঙ্গে অন্য কোনও শহরের পুজো টেক্কা দিতে পারে। যতই কুমোরটুলির ঠাকুর সেই শহরের পাড়ি দিক না কেন সেখানকার পুজো যে কলকাতার মতো নয়, তা নিয়ে প্রবাসী আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে গলা তুলে ঝগড়াও করেছেন। মানুষের ভিড়ে কলকাতা যতই স্তব্ধ হয়ে যাক না কেন, পুজোর কটাদিন শহর ছেড়ে বাইরে যাওয়ার কথা ভাবেননি কখনও। কারণ, বাংলার পুজো তো শুধু থিমের গেরোয় আটকে নেই। বাংলার পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্য, আবেগ, শিল্প, সংস্কৃতি, খাবারের মতো কত কিছু। তবু এ বছরের পুজো কলকাতায় কাটাবেন না বলেই বায়না ধরেছেন বাড়ির বড়রা। দুর্গাপুজোকে ঘিরে বাংলা ছাড়াও প্রবাসী মানুষদের মনে এমন উত্তেজনা আদৌ আছে কিনা, তা অন্তত এক বার স্বচক্ষে দেখতে কোথায় কোথায় যাওয়া যায়, সেই তালিকায় রইল এখানে।
১) মুম্বই
বলিউডে খান এবং কপূরদের আধিপত্য থাকলেও একটা সময় কিন্তু বাঙালিদেরও পসার ছিল। সেই থেকেই বম্বে অধুনা মুম্বইয়ে বাঙালিদের দুর্গাপুজো শুরু। পোয়াই, জুহু, লোখান্ডওয়ালা, সান্তাক্রুজ়ে এমন অনেক বনেদি বাড়ি রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর বাঙালি রীতি মেনে, পুজোর নির্ঘণ্ট ধরে নিষ্ঠা ভরে দুর্গাপুজো করা হয়। তবে কলকাতা থেকে দূরে আছেন বলে পেটপুজো হবে না, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। পোলাও-মাংস থেকে লুচি, কবিরাজি, সন্দেশ, রসগোল্লা, মিষ্টি দই— সবই পাওয়া যাবে।
২) পুণে
মুম্বইয়ের পর যদি বাঙালি পুজোর আমেজ কোথাও পেতে হয়, তা হলে ছুটির ক’টা দিন কাটিয়ে আসতে পারেন পুণেতে। অবাঙালি নবরাত্রি এবং বাঙালি রীতি মেনে দুর্গাপুজো— দুইয়ের মিশেলে দারুণ অভিজ্ঞতা হবে। কলকাতার মতো মাসখানেক ধরে ছুটি বা পুজোর প্রস্তুতি না চললেও ভোগে কোনও কার্পণ্য করতে দেখা যায় না। খিচুড়ি, লাবড়া, পায়েস থেকে শুরু করে বিরিয়ানি, ফিরনি— সবই পাবেন এখানে।
৩) দিল্লি
মুম্বই, পুণের পর যদি দুর্গাপুজোয় অন্য কোনও শহরে যেতেই হয়, তা হলে দিল্লিই একমাত্র উপায়। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় বাঙালি রীতি মেনে দুর্গাপুজো হয়। চিত্তরঞ্জন পার্ক, পূর্বাচল সমিতির মতো বহু পুরনো বাঙালি পাড়া রয়েছে যেখানে পুজোর কটাদিন চুটিয়ে আনন্দ করেন প্রবাসী বাঙালিরা। কলকাতা থেকে বহু শিল্পীকেই সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য। আর পেটপুজো? চিত্তরঞ্জন পার্কের সব পুজোতেই কাবাব-বিরিয়ানির দোকানের সামনে লম্বা লাইন পড়ে। কাশ্মীরি গেটের পুজোয় ভিড় হয় সেখানকার বিরিয়ানির জন্য।