‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’ দেখানো হবে স্কটিশ চার্চ কলেজে, দিকে দিকে ছড়িয়ে গিয়েছিল পোস্টার। অনুষ্ঠানের দিন সকালে হঠাৎই জানানো হয় ছবিটি দেখানো হবে না। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কলেজ বলেছিল সমকামীদের নিয়ে তৈরি ছবি দেখানো যাবে না। প্রায় বিনা নোটিসে হঠাৎ বন্ধ করা হয়েছিল ‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’-র প্রদর্শন। তার পর থেকেই চলছিল বিক্ষোভ। সে ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার উত্তর কলকাতার স্কটিশ চার্চের সামনেই দেখানো হল সেই তথ্যচিত্র। পরিচালকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্কটিশ চার্চের কয়েক জন পড়ুয়াও।
দেখানো হচ্ছে ‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’। — নিজস্ব চিত্র।
গত মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, স্কটিশ চার্চ কলেজে দেখানোর কথা ছিল দেবলীনা মজুমদারের ছবি ‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’। তার পর সে প্রসঙ্গে পরিচালকের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ছিল লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘সাফো ফর ইকুয়ালিটি’-র দুই সদস্য মীনাক্ষি সান্যাল এবং কোয়েল ঘোষের। স্কটিশ চার্চ কলেজের মনোবিদ্যা বিভাগ এবং ‘দ্য উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার ডেভেলপমেন্ট সেল’-এর সঙ্গে সেই আয়োজনে হাত মিলিয়েছিল ইতিহাস, দর্শন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগও। এমএল ভৌমিক অডিটোরিয়ামে দুপুর ১.৩০ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল অনুষ্ঠান। দিকে দিকে ছড়িয়ে গিয়েছিল পোস্টার। কিন্তু সে দিন সকালেই সুর বদলায় কলেজ। হঠাৎই ফোন যায়। জানানো হয়, অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে। দেখানো যাবে না ছবি। অভিযোগ ওঠে, কলেজের কয়েক জন পড়ুয়া সমকামিতা নিয়ে চর্চা উচিত বলে মনে করেননি শিক্ষার প্রাঙ্গণে। তাঁরাই দ্বারস্থ হন চার্চের।
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার স্কটিশ চার্চ কলেজের সামনেই জড়ো হন অনেকে। — নিজস্ব চিত্র।
চার্চ অফ নর্থ ইন্ডিয়া (সিএনআই) থেকে ফোন যায় কলেজে। তার পর বাতিল হয় অনুষ্ঠান। কলেজ অবশ্য সে অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। বরং কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, ‘বাতিল’ নয়, স্থগিত রাখা হয়েছে ছবির প্রদর্শন।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং সিএনআই-এর তরফে এ সম্পর্কে আর কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কলেজের পড়ুয়াদের একাংশের মধ্যে অস্বস্তি প্রকাশ পেয়েছে। দফায় দফায় দেখানো হয়েছে বিক্ষোভ। পড়ুয়াদের একাংশ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সই সংগ্রহ শুরু করে। তারই মধ্যে স্কটিশ চার্চের সামনে ‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’ প্রদর্শনের ডাক দেয় লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করা ‘ফেমিনিস্ট ইন রেজ়িস্ট্যান্স’ নামক এক সংগঠন। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার বিকেলে জড়ো হন মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যেরা। পরিচালকের পাশে এসে দাঁড়ান স্কটিশ চার্চ কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন বেশ কয়েক জন পড়ুয়াও। সন্ধ্যায় স্কটিশ চার্চ কলেজের গেটের পাশেই সকলে মিলে দেখেন ‘গে ইন্ডিয়া ম্যাট্রিমনি’।