একা মায়ের যুদ্ধেও শামিল খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থা। ছবি- টুইটার।
কাঁধে খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার ব্যাগ। পরনে কালো বোরখা। রাস্তা দিয়ে প্রতি দিন এমন ভাবে হেঁটে কাজে যোগ দিতে যান তিন সন্তানের ‘একা মা’ রিজ়ওয়ানা। সম্প্রতি নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এমনই একটি ছবি। যা দেখে হয়তো অনেকেই ভেবেছেন, রুটি-রুজির দায়েই হয়তো ওই মহিলাও খাবার সরবরাহের কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু একটি বিষয়েই খটকা থেকে গিয়েছে। যে কোনও খাবার বা জিনিস সরবরাহকারী সংস্থার কাজে যোগ দেওয়ার অনেকগুলি শর্তের মধ্যে একটি হল দু’চাকার যান চালাতে পারা। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাবার সরবরাহ করতে কর্মীদের সুবিধা হয়। পাশাপাশি, ব্যাগের ভারও খানিকটা লাঘব হয়। কিন্তু এই ছবি তার ব্যতিক্রম।
তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পিছনে লুকিয়ে রয়েছে রেজ়ওয়ানার জীবন-সংগ্রাম। আর সেই সংগ্রামে নিজেদের অজান্তেই শামিল হয়েছে ‘সুইগি’। রিজ়ওয়ানা বলেন, “খুব ছোট বয়সে বিয়ে হয় আমার। রোজগারের আশায় তিন সন্তানকে রেখেই ঘরছাড়া হন আমার স্বামী। সেই থেকে কখনও দিনমজুর, কখনও ঠিকাকর্মী হিসাবে কাজ করেছি।”
এখন যদিও দেড় হাজার টাকার মাসিক বেতনে গৃহসহায়িকার কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় দোকানে ঘুরে ঘুরে এক বার ব্যবহার করা যায় এমন চায়ের কাপ, কাগজের গ্লাস বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “কাপ বা গ্লাসের প্রতিটি প্যাকেট থেকে মাত্র ২ থেকে ৩ টাকা লাভ হয়। তাই অতিরিক্ত খরচ বাঁচানোর জন্য প্রতি দিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার পথ হাঁটি।”
কিন্তু কাঁধে ‘সুইগি’-র ব্যাগ দেখে যাঁরা ভেবেছিলেন রিজ়ওয়ানা ওই খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের জন্য বিষয়টি খোলসা করে তিনি জানান, “কোনও খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত নই। তবে আমার শুধু একটি শক্তপোক্ত ব্যাগের প্রয়োজন ছিল। যার মধ্যে একসঙ্গে অনেক জিনিস রাখা যায়। রাস্তার ধারে এক জনের থেকে মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে এই ব্যাগটি কিনেছিলাম।”