স্পেনের এই নয়া আইন অনুযায়ী ঋতুকালীন যন্ত্রণার জন্য মহিলারা যত দিন ইচ্ছা ছুটি নিতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।
মহিলাকর্মীদের বেতন-সহ ঋতুকালীন ছুটি মঞ্জুরের আইন পাশ করল স্পেনের সরকার। এই প্রথম কোনও পাশ্চাত্য দেশে এমন আইন পাশ করানো হল। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলির সরকার ইতিমধ্যেই তাদের দেশে ঋতুকালীন ছুটি মঞ্জুর করেছে। আমেরিকাতেও বেশ কিছু সংস্থা মহিলাকর্মীদের ঋতুকালীন ছুটি দিতে শুরু করেছে। তবে ইউরোপে এমন পদক্ষেপ এই প্রথম।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা হওয়ার অবকাশ খুবই কম। তবু ইদানীং ঋতুস্রাব নিয়ে ‘চুপ’ করে থাকার মানসিকতায় বদল আসছে। বহু যুগ ধরে চলে আসা পুরনো রীতি ভেঙে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থাই মাসের চারটি দিন ‘ঋতুস্রাবকালীন’ ছুটি বরাদ্দ করছে। মাসের চারটি দিনের অসহ্য কষ্ট মুখ বুজে সহ্য করে, সব কাজ করে যাওয়া এক রকম অসাধ্যসাধনই বটে। মুখ ফুটে শারীরিক অবস্থার কথা বলে ছুটি চাইতে অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই। তাই কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই এই স্পেন এমন আইন পাশ করানো হয়।
স্পেনের এই নয়া আইন অনুযায়ী ঋতুকালীন যন্ত্রণার জন্য মহিলারা যত দিন ইচ্ছা ছুটি নিতে পারেন। এই ছুটিগুলি তাঁদের অসুস্থতার জন্য দেওয়া ছুটি থেকে কাটা যাবে না। তবে এই ছুটি পেতে গেলে মহিলাদের চিকিৎসকদের কাছ থেকে লিখিত নোট জমা দিতে হবে।
স্পেনের সাম্যমন্ত্রী আইরিন মন্টেরো এই আইনের কথা ঘোষণা করে বলেন, ‘‘তীব্র যন্ত্রণায় মহিলাদের আর কাজ করতে হবে না, কাজে আসার আগে আর ওষুধও খেতে হবে না আমাদের। আমরা যে ঋতুকালীন যন্ত্রণায় ভুগছি আর সে কারণেই যে কাজের ক্ষতি হচ্ছে, সে কথাও আর বলার প্রয়োজন পড়বে না।’’
ঋতুস্রাবকালীন ছুটি পাওয়া নিয়ে এ দেশেও বেশ কিছু দিন ধরেই হইচই শুরু হয়েছে। কাজ চলাকালীন টুকটাক হাসি-মস্করা-আড্ডা সব অফিসেই হয়।
১৬ কিংবা ১৭ বছর বয়সের তরুণীদের গর্ভপাতের জন্য আর অভিভাবকের সম্মতির প্রয়োজন হবে না। স্পেনের নয়া আইনে এ কথাও বলা হয়েছে।
ঋতুস্রাবকালীন ছুটি পাওয়া নিয়ে এ দেশেও বেশ কিছু দিন ধরেই হইচই শুরু হয়েছে। কর্মরত মহিলা ও ছাত্রীদের ঋতুস্রাবকালীন ছুটির আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা ওঠে, এ বার তা শুনতে প্রস্তুত শীর্ষ আদালত। শুনানি হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি। রাজ্য সরকারগুলিকে ঋতুস্রাবকালীন ছুটি নিয়ে নয়া আইন তৈরি করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানানো হয়। আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি সুপ্রিম কোর্টে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের অধীনে থাকা একটি বেঞ্চ এই মামলা শুনবে। অনেকেই মনে করছেন স্পেনের এই আইনের প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে।