অ্যাপের ‘পিন’-এর নাগাল যেন কেউ না পায়। প্রতীকী ছবি।
পকেটে টাকার গোছা নিয়ে ঘোরা বা জিনিস কিনে কার্ড থেকে টাকা দেওয়ার চল এখন আর নেই বললেই চলে। কারণ, বিভিন্ন সংস্থার ইউপিআই অ্যাপ। মানুষের সুবিধার জন্য এখন বিভিন্ন সংস্থা, তাদের গেটওয়ে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বা অ্যাপে থাকা ‘কিউআর’ কোড স্ক্যান করে টাকা লেনদেনের সুবিধা দিয়ে থাকেন। এই প্রযুক্তি অ্যাপ ব্যবহারকারীদের যেমন সুবিধা করে দিয়েছে, আবার অনেক ক্ষেত্রে জালিয়াতির উপায়ও সহজ করে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ দফতরের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রায় ৯৫ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। সম্প্রতি মুম্বইয়ে ৮১ জন ইউপিআই ব্যবহারকারীর থেকে ১ কোটি টাকারও বেশি টাকা জালিয়াতি ঘটনা সামনে এসেছে। তাদের সকলেরই অভিযোগ, অচেনা নম্বর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় কোনও ব্যক্তি প্রথমে তাদের টাকা পাঠায়। তার পর ফোন করে বা কারও ক্ষেত্রে মেসেজ করে জানানো হয়, ভুলবশত সেই টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। তাই সেই টাকা যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের কথা মতো সেই টাকা ফেরাতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে।
কী ভাবে কাজ করে এই চক্র?
এই চক্রের পাণ্ডারা প্রথমে কোনও এক জনের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে, তার পর ফোন বা মেসেজ করে জানায় ভুলবশত সেই টাকা, ওই নম্বরে চলে গিয়েছে। তা যেন ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ফাঁদে পা দিয়ে কোনও ব্যক্তি যখন সেই নির্দিষ্ট টাকা ফেরত পাঠাতে যায়, তখনই তার অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য জালিয়াতদের হাতে চলে যায়। এমনকি ব্যাঙ্কের ‘কেওয়াইসি’ তথ্য পর্যন্ত তাদের হাতে চলে আসে। এখন যেহেতু প্যান কার্ড এবং আধার কার্ডের ভিত্তিতে যে কোনও ব্যক্তির সমস্ত তথ্য পাওয়া অত্যন্ত সহজ হয়ে গিয়েছে, তাই এই তথ্যগুলি হাতে আসছে খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না চক্রীদের।
এই জালিয়াতি রুখতে কোন কোন বিষয়ে নজর দেবেন?
১) নির্দিষ্ট কোনও ব্যাঙ্কের বা বিশ্বাসযোগ্য কোনও সংস্থার অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।
২) অ্যাপ ব্যবহার করার সময়ে খুব সহজ পিন নম্বর দেবেন না। নিজের নাম, জন্মদিন বা চেনা কোনও সংখ্যা যা সহজে ধরে ফেলা যায়, এমন পিন নম্বর না দেওয়াই ভাল।
৩) নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর আগে ওই ব্যক্তির নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দু’বার যাচাই করে নিন।
৪) অচেনা কোনও ব্যক্তি ফোন করে ব্যাঙ্কের পিন জানতে চাইলে, তা কখনওই জানানো যাবে না।
৫) এমন অনেক অ্যাপ আছে, যেখানে টাকা পাঠানোর ঊর্ধ্বসীমা নির্দিষ্ট করে রাখা যায়। তেমনটা করা থাকলে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা যেতে পারে।