প্রয়াত পোশাকশিল্পী রোহিত বল। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত পোশাকশিল্পী রোহিত বল। দীর্ঘ দিন ধরেই হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পোশাকশিল্পীকে তড়িঘড়ি গুরুগ্রামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় রোহিতের। পোশাকশিল্পীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সুনীল শেট্টি।
ফ্যাশন জগতে অতি পরিচিত নাম কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবারের এই সন্তানের । বস্তুত, তিন দশক ধরে ফ্যাশন দুনিয়া শাসন করেছেন তিনি। ঝুলিতে রয়েছে একের পর এক পুরস্কার। ২০০১ এবং ২০০৪ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে ‘ডিজ়াইনার অফ দ্য ইয়ার’ হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে পান ‘ইন্ডিয়া ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডস’। ২০১২ সালে ল্যাকমে ফ্যাশন উইকেও পুরস্কৃত হন তিনি। রোহিত সব সময় বলতেন, ‘‘আমি নিজে ‘ট্রেন্ডস’ নিয়ে কখনও মাথা ঘামাইনি। আমাকে ‘ঐতিহ্যবাদী পোশাকশিল্পী’ বলতে পারেন।’’ এমন গুণী শিল্পীর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফ্যাশনজগতে।
এক সময় রোহিত ভারতের ফ্যাশন দুনিয়ায় নবজাগরণ এনেছিলেন। বলিউড তো বটেই, এক সময় হলিউডের তাবড় শিল্পীদের সাজিয়েছেন রোহিত। উমা থুরমান থেকে সিন্ডি ক্র্যাফোর্ড, পামেলা আন্ডারসনের মতো অভিনেত্রীদের পরনে উঠেছিল রোহিতের পোশাক। সবই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎই শারীরিক অসুস্থতা কাবু করে ফেলে রোহিত। ধরা পড়ে হার্টের সমস্যা। তা ছাড়াও আরও অনেক শারীরিক জটিলতা আষ্টেপৃষ্টে ধরে তাঁকে।
কিডনির সমস্যা থেকে প্যানক্রিয়াসাইটিস, রোগের সঙ্গে লড়াই শুরু হয় রোহিতের। ২০২৩ সালে শারীরিক ভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন তিনি। গত বছর শেষের দিকে বেশ কিছু দিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন রোহিত। সে বার বিপদ কাটিয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি। তবে অসুস্থতার কারণে ফ্যাশন জগৎ থেকে দূরে সরে ছিলেন। এ বছর অক্টোবরে রাজকীয় প্রত্যাবর্তন হয় রোহিতের। দিল্লিতে এক জনপ্রিয় ফ্যাশন শোয়ে রোহিতের পোশাক পরে মার্জার সরণিতে হাঁটেন অনন্যা পাণ্ডে। অনন্যাকে রোহিত পরিয়েছিলেন কালো রঙের ভেলভেটের নকশা করা লেহঙ্গা। সেই পোশাক দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ফ্যাশন সমালোচকেরা। সকলের মুখেই শোনা গিয়েছিল প্রশংসা। শো শেষে অনন্যার হাত ধরে দীর্ঘ রোগভোগে শীর্ণ হয়ে যাওয়া রোহিত যখন মার্জার সরণি ধরে হেঁটে আসছিলেন, পোশাকশিল্পীর মুখে তখন বিজয়ের হাসি। দু'চোখে খুশির ঝলক। বহু দিন পর নিজের জায়গায় ফিরতে পেরে রোহিত নতুন করে জ্বলে উঠেছিলেন। দীপাবলির আবহে নিভে গেল সেই দীপ।