পোষা কুকুরের ডায়াবিটিস থাকলে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। ছবি: ফ্রিপিক।
মানুষের মতো পোষা কুকুর বা বিড়ালেরও ডায়াবিটিস হতে পারে। খেয়াল করবেন, পোষ্যের যদি বার বার জল তেষ্টা পায়, ঘন ঘন প্রস্রাব হতে থাকে, চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে তাহলে সাবধান হতেই হবে। ডায়াবিটিস হলে পোষা কুকুরের ওজন আচমকা কমে যেতে পারে। প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পড়বে। সারা ক্ষণ ঝিমোবে। চনমনে ভাবটা আর থাকবে না। পশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিস হলে পোষ্যের খিদেও কমে যায়। হয়তো খেতেই চাইবে না। কিছু শারীরিক জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তাই সময়ান্তরে চিকিৎসকে দেখিয়ে নেওয়া জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পোষ্যের খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। বিশেষ খেয়ালও রাখতে হবে।
পোষ্যের ডায়াবিটিস হচ্ছে কি না সেটা আগে খেয়াল করতে হবে। লক্ষণ দেখে চিকিৎসককে দেখিয়ে নেওয়া খুব জরুরি। তার পর আপনি কী কী করতে পারেন, সেটা জেনে নিন।
নজর দিন ওজনে
কুকুরের যদি ডায়াবিটিস হয় তাহলে সবচেয়ে আগে ওজন কমতে থাকবে। খেয়াল করে দেখবেন, আপনার পোষ্য সবসময় ঝিমোচ্ছে। পশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি ২ থেকে ৩ সপ্তাহ অন্তর পোষ্যের নিয়মমাফিক কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো জরুরি। তাতেই ধরা পড়বে রক্তে শর্করা বাড়ছে কি না। তা ছাড়া ২ থেকে ৩ মাস অন্তর ওজনও মাপতে হবে। পোষ্যের ওজন খুব বেশি বেড়ে গেলে যেমন তা চিন্তার, তেমনই ওজন কমাও ভাল লক্ষণ নয়। যদি দেখেন দ্রুত ওজন কমছে তাহলে টেস্ট করিয়ে নিতে হবে।
কখন খেতে দেবেন
পোষা কুকুরের ডায়াবিটিস ধরা পড়লে খাওয়াদাওয়ায় বদল আনতেই হবে। পশু চিকিৎসকেদের মতে, পোষ্যের প্রজাতি ও ওজন অনুযায়ী ডায়েট ঠিক করতে হবে। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা যদি খুব বেড়ে যায় তাহলে ১২ ঘণ্টা অন্তর দিনে দু’বার খাবার দেওয়াই জরুরি। প্রতি বার খাবার খাওয়ার পরে ইনসুলিনও দিতে হবে নিয়ম করে। খেয়াল রাখতে হবে, ইনসুলিন যেন প্রতিদিন নির্ধারিত সময়েই দেওয়া হয়। ইনসুলিনের ডোজ চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন।
কী খাবে পোষ্য
কুকুরের খাবারে এই সময় বেশি পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার থাকা উচিত। পাশাপাশি পোষ্যটির ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি। এর জন্য তাকে নিয়ম করে ব্যায়াম করানো প্রয়োজন। গাজর, ব্রোকোলির মতো উচ্চ ফাইবার ও কম ফ্যাটের খাবার দিতে হবে। কোনও রকম প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্যাকেটের খাবার না দেওয়াই ভাল। মিষ্টি জাতীয় কিছু দেওয়া চলবে না। সময় বুঝে জল খাওয়াতে হবে।
খেলাধূলা করান
পোষ্যের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে তার নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। রাস্তা হোক বা বড় কোনও মাঠ, সেখানে নিয়ে গিয়ে পোষ্যকে রোজ খেলার সুযোগ করে দিন। বাড়িতেও সময় দিন আদরের পোষ্যকে। সবসময়ে খেলাধূলার মধ্যে রাখুন। এতে পোষ্যের শরীর ও মন দুই-ই ভাল থাকবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কুকুরের প্রজাতি, ওজন, শারীরিক অবস্থা বুঝেই তার ডায়েট ঠিক করা দরকার। কাজেই আপনার পোষ্য়টির ডায়াবিটিস হলে তার ডায়েট কেমন হবে, কী ভাবে যত্ন নেবেন তা পশু চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়াই ভাল।