— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলা ছবি ‘ইচ্ছে’-র কথা মনে আছে? যেখানে সদ্যযুবক শমীক তাঁর মায়ের ক্রমাগত নজরদারি, অতিরিক্ত অধিকারবোধে বিরক্ত হয়ে এক সময়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। সন্তানের উপরে মায়ের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ কতটা দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে, দেখা গিয়েছিল আরও একটি হিন্দি ছবি ‘হেলিকপ্টার ইলা’-তে।
এমন অনেক অভিভাবক আছেন, যাঁরা মনে করেন সন্তানের ভালর জন্যই প্রতিটি পদক্ষেপে তাঁদের নজরদারি ও হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। কিন্তু আসলে কি তাই! অতিরিক্ত নজরদারি সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই অভিভাবকের স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার, সন্তান ছোট হলেও, তার গণ্ডির মধ্যে কতটা ঢোকা যায়।
বিরক্তির উদ্রেক
একেবারে ছোট শিশুকে চোখে চোখে রাখা এক রকম, কিন্তু সন্তান যখন একটু বড় হয়ে যায়, তারও নিজস্ব জগৎ তৈরি হতে শুরু করে। তখন সর্ব ক্ষণ মা-বাবার কথা বা নজরদারি তার পছন্দ হয় না। হয়তো নিজের মনে সে আঁকছে বা কিছু করছে, মা এসে যদি ৫ মিনিট অন্তর উঁকিঝুকি দেয়, সে কিন্তু বিরক্ত হবে।
বিশ্বাসের অভাব
সন্তান যখন বুঝতে শিখে যায়, বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছয় তখন তারও নিজের জগৎ তৈরি হয়। সে কী করছে না করছে, সে ব্যাপারে সাধারণ ভাবে খোঁজ রাখা আর প্রতিটি পদক্ষেপে হস্তক্ষেপ করা এক নয়। বাবা-মায়ের ক্রমাগত নজরদারিতে মনে হতেই পারে, অভিভাবক তাকে বিশ্বাস করেন না।
স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ
ছোট হলেও খুদের স্বাধীনতা প্রয়োজন। এক এক বয়সের জন্য এক এক রকম। কৈশোরে থাকা ছেলে-মেয়ে বাইরের জগতে কী করছে, সে বিষয়ে অভিভাবকের সচেতন থাকা দরকার। কিন্তু তার মানে সন্তানের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ নয়। সে কী করছে খেয়াল রাখা যায় দূর থেকেই। কিন্তু কোন বন্ধুর সঙ্গে কতটা মিশবে, সেটা বাবা-মা ঠিক করে দিতে গেলে সন্তানের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পাবে।
লুকোতে পারে সন্তান
বাবা-মা অতিরিক্ত কৌতূহলী হলে অনেক বিষয় চেপে যেতে পারে ছেলে-মেয়ে। যে কাজটা সে সামনে করতে পারছে না, সেটাই কিন্তু গোপনে করবে।
সন্তানের ভালর জন্য তার উপর নজর রাখা উচিত অবশ্যই, তার মানে এই নয়, সন্তানের জীবন দমবন্ধ হয়ে উঠবে। এমন কিছু দীর্ঘ দিন চলতে থাকলে সন্তানের সঙ্গে অভিভাবকের সম্পর্কের অবনতি হতে বাধ্য। তাই সন্তানের ভালর জন্য তার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন, তাকে বিশ্বাস করুন, ছাড় দিন। অতিরিক্ত নজরদারি সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে।