পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে দু’জনে ফের বিয়েও করেন। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে চেপে নিমন্ত্রণ বা়ড়ি থেকে ফিরছিলেন ৫৮ বছর বয়সি অ্যান্ড্রু। রাস্তায় একটি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তাঁদের। মস্তিষ্কে বেশি আঘাত লাগে অ্যান্ড্রুর। তাতেই জীবনের ২৯ বছরের স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ফিরে গিয়েছিলেন ১৯৯৩ সালে। স্ত্রী ক্রিস্টিকেও অচেনা লাগতে শুরু করে। সম্প্রতি হারানো স্মৃতি ফিরে পেয়ে নতুন করে সংসার পেতেছেন তিনি।
১৯৮৫ সালে গাঁটছাড়া বাঁধেন নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা অ্যান্ড্রু এবং ক্রিস্টি ম্যাকেঞ্জি। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে তাঁদের ভরা সংসার। দু’জনে একে অপরকে প্রচণ্ড ভালবাসতেন। যেখানেই যেতেন দু’জনে একসঙ্গে যেতেন। একে অপরকে এক মুহুর্তের জন্যে ছেড়ে থাকতে পারতেন না। চলতি বছরের জুন মাসে একসঙ্গে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। আঘাতের তীব্রতা অ্যান্ড্রুর চেয়ে কম হলেও একেবারে সুস্থ ছিলেন না ক্রিস্টি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রথম দু’দিন জ্ঞান ফেরেনি তাঁরও। তবে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কান্নাকাটি করতেন। কিন্তু অ্যান্ড্রু সেই সময় আইসিইউতে থাকায় ক্রিস্টিকে তাঁর কাছে যেতে দেননি চিকিৎসকরা। পরে আইসিইউ থেকে বার করে হলে অ্যান্ড্রুর পাশেই ক্রিস্টির থাকার ব্যবস্থা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিপদমুক্ত হওয়ার পর প্রথম ক্রিস্টির সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে চিনতে পারেন না অ্যান্ড্রু। অবাক চোখে ক্রিস্টির দিকে তাকিয়ে থাকেন। চিকিৎসকদের অ্যান্ড্রু বলেন, এটা ১৯৯৩ সাল। প্রথম দিকে ভেঙে পড়লেও হাল ছাড়েননি ক্রিস্টি। স্বামীর পাশ ছেড়ে এক মুহূর্তের জন্য উঠে যাননি। একসঙ্গে কাটানো নানা মুহূর্তের কথা গল্পের ছলে বলে অ্যান্ড্রুর স্মৃতি ফেরানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন। চিকিৎসকরাও সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। অবশেষে সকলের চেষ্টায় স্মৃতি ফেরে অ্যান্ড্রুর। নতুন করে আবার ক্রিস্টিকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। পরিবারের সকলের উপস্থিতিতে দু’জনে ফের বিয়েও করেন।