Probiome Peel

জেল্লা ফেরাতে ভরসা প্রোবায়োম পিল

ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের সমস্যায় ম্যাজিকের মতো কাজ করতে পারে প্রোবায়োম পিল।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৬
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

একটা বয়সের পরে গিয়ে ত্বকের সমস্যা যখন মাথাচাড়া দেয়, সহজে সারতে চায় না, অনেকেই দ্বারস্থ হন প্রফেশনাল বিউটি ট্রিটমেন্টের। নিষ্প্রাণ, রুক্ষ ত্বক, পুড়ে যাওয়া, দাগছোপযুক্ত ত্বক কিংবা অন্য গুরুতর সমস্যায় মুখের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার সমাধানসূত্র পেতে পারেন প্রোবায়োম পিলের মাধ্যমে। ত্বকের ‘রিজেনারেশন’ বলতে যা বোঝায়, এই কেমিক্যাল পিল ট্রিটমেন্ট সর্ব অর্থেই সেই ফলাফল এনে দেবে।

Advertisement

প্রোবায়োম পিল কী?

আমাদের ত্বকে কিছু ভাল ব্যাক্টিরিয়ার অদৃশ্য ইকোসিস্টেম সব সময়েই কাজ করে চলেছে, যা ভিতর থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে। কিন্তু বাইরের পরিবেশের দূষণ, নিয়মিত রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে আমাদের ত্বকে মাইক্রোবায়োমের সেই ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ত্বকের সমস্যার শুরুও সেখান থেকেই। প্রোবায়োম পিল বিভিন্ন অ্যাসিডের সমাহার। সেখানে ত্বকের প্রকৃতি ও তার সমস্যার ধরন অনুযায়ী পাঁচটি পার্সোনালাইজ়ড পিল নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে কাজ করে ত্বকে ও ফিরিয়ে আনে তার পুরনো জেল্লা।

Advertisement

ধাপে ধাপে সমাধান

যে কোনও বয়সেই এই ট্রিটমেন্ট করানো সম্ভব। রূপ বিশেষজ্ঞ ব্রিজেট জোনস বললেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেকেই আসেন বার্নট স্কিন নিয়ে। অর্থাৎ ব্লিচ বা অন্য কোনও কারণে ত্বক পুড়ে গিয়েছে। লেয়ারের পর লেয়ার হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত, ঠিক মতো মেকআপও ব্যবহার করা যায় না। তখন আমরা প্রথমে কনসাল্টেশন করি। তার পরে চিকিৎসা শুরু করি।’’

কমবয়সিদের ক্ষেত্রে পিগমেন্টেশন, অ্যাকনে স্কার, বার্নট বা নিষ্প্রাণ ত্বকের মতো সমস্যা এখন প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। বয়স একটু বাড়তেই বলিরেখা, চোখের তলায় কালি পড়ার মতো সমস্যা প্রকট হয়। সমস্যার সমাধানে ট্রিটমেন্ট শুরু করার সময়ে আগে ত্বককে প্রস্তুত করা জরুরি, জানালেন ব্রিজেট। প্রি-পিল, পার্সোনালাইজ়ড পিল এবং পোস্ট-পিল কেয়ার ও প্রোটেকশন— এই ধাপগুলিতে পুরো ট্রিটমেন্টটি করা হয়ে থাকে। ব্রিজেটের কথায়, ‘‘কয়েকটি ধাপে এই ট্রিটমেন্ট করা হয়। তার আগে আমরা প্রি-পিলিং করে ত্বককে তৈরি করি। ক্লেনজ়িং এবং প্রি-পিলিং পরপর করা হয়। এতে ত্বকের প্রথম লেয়ারটি তুলে ফেলা হয়। তার পরে পার্সোনালাইজ়ড কেমিক্যাল পিলগুলি ব্যবহার করা হয়। তার পরের ধাপ হল নিউট্রিলাইজ়েশন।’’ নিউট্রিলাইজ়েশনের ধাপটিতে যা দেওয়া হয়, সেগুলিকে ‘স্ট্রং কনসেন্ট্রেশন অব মাল্টিভিটামিন’ বলে উল্লেখ করলেন ব্রিজেট।

প্রত্যেক সিটিংয়ের শেষে যে হোম কিট দেওয়া হয়, তা ব্যবহার করতে হয় সাত দিনের জন্য। সেখানে থাকে মাল্টিবায়োটিক রেস্টোরিং কমপ্লেক্স। এটি অনেক ধরনের প্রোবায়োটিকের সমাহার, যা ত্বককে একটি ‘হিলিং এফেক্ট’ দেয়, এক্সফোলিয়েট করে। এতে এসপিএফ ৫০ ব্যবহার করা হয়।

কার্যকারিতা

· ত্বকের টেক্সচার ও টোনের উন্নতি

· ত্বককে মসৃণ করে তোলে

· জেল্লা ফেরত আসে খুব তাড়াতাড়ি

· বলিরেখা ও অন্যান্য দাগছোপ দূর করে

· পিগমেন্টেশনের সমস্যা দূর করে

· অ্যাকনে দূর করে

· ওপেন পোরস বন্ধ করে

পাঁচ ধরনের পিল

ত্বকের ধরন ও তার সমস্যা অনুযায়ী যে আলাদা ধরনের পাঁচটি পিল ব্যবহার করা হয়, তা হল—

হাইড্রাসুদিং পিল: অতিরিক্ত স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য তৈরি এই পিল। সংবেদনশীল ত্বকে সব সময়ে পিলিং করানো যায় না। এ ক্ষেত্রে ত্বক যতই সংবেদনশীল হোক, পিল ব্যবহারের পরে কোনও প্রভাব দেখা যায় না।

আলট্রাইলুমিনেটিং পিল: নিষ্প্রাণ ত্বকের জন্য তৈরি এই পিল। যথেষ্ট এক্সফোলিয়েটেড নয়, এমন জেল্লাহীন ত্বকের জন্য কার্যকর এটা।

অ্যাডভান্সড লাইটনিং পিল: পিগমেন্টেড ত্বকের জন্য উপযোগী। অমসৃণ স্কিন টোন, বিভিন্ন প্যাচ দেখা দিলে এই পিল ব্যবহার করতে হবে। জেনেটিক কারণ, নির্দিষ্ট ওষুধের প্রতিক্রিয়া, রোদ্দুরে বেরোনোর প্রভাব, লিভারের সমস্যা... নানা কারণে হওয়া ত্বকের দাগছোপ দূর করবে এই পিল।

পোর পলিশিং পিল: ওপেন পোরসের সমস্যায় ভুগছেন যাঁরা, তাঁরা ত্বক মসৃণ করানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন এই পিল।

এজ স্মুদিং স্কিন: ফোটো-এজড স্কিন অর্থাৎ রোদে পোড়া চামড়ার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি এই পিল। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে, ধূমপানের অভ্যেস থাকলে ত্বকে পোড়া ভাব দেখা দেয়। ইলাস্টিসিটিও নষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে কার্যকর এই পিল।

হাতেনাতে ফল

প্রোবায়োম পিল ট্রিটমেন্টের বড় সুবিধে হল, এটি ব্যবহার করা সহজ, ফলাফলও মেলে হাতেনাতে। ব্রিজেট জোনস বলছেন, “পাঁচ থেকে ছ’টি সিটিং লাগে ট্রিটমেন্ট সম্পূর্ণ করতে। তবে অনেকে চারটি সিটিংয়ের পর থেকেই ফল পেয়ে যান। প্রথম দুটো সিটিং পরপর করানো হয়, ২১ দিনের ব্যবধানে। তার পরে নর্মাল ফেশিয়াল চলে, মাসে একটা। তার পরে আবার পরপর দুটো সিটিং। প্রতি সিটিংয়ের খরচ প্রায় ৬০০০ টাকা,’’ বললেন তিনি। এই ট্রিটমেন্টে কোনও স্টিম দেওয়া হয় না। বেশি মাসাজও করা হয় না, তেমন কোনও ইকুয়িপমেন্টসও ব্যবহার করা হয় না। এক ঘণ্টা সময় লাগে প্রত্যেক সিটিংয়ে।

নির্দিষ্ট পিএইচ ব্যালান্সযুক্ত এই পিলগুলি যে ত্বকের জন্য ঠিক যেমনটা দরকার, সে ভাবেই তৈরি করা। এগুলি ডিপ পিলও নয়, তাই ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া হওয়ার ভয় থাকে না তেমন। ট্রিটমেন্টের শেষে ত্বক মেনটেন করার জন্য বিশেষ হোম কিটও দেওয়া হয়। তবে বাড়িতে নয়, কোনও পেশাদার বিউটিশিয়ানের পরামর্শে এই ধরনের রূপচর্চা করানো উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement