স্ত্রীকে নিয়ে বলতে গিয়ে আক্ষেপ নারায়ণের গলায়। ছবি: সংগৃহীত।
প্রেমের টানে রেলকে ফাঁকি দিয়েছিলেন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তি। শুনে চমকে উঠতেই পারেন অনেকে। কিন্তু এ কথা একেবারে নিজমুখে স্বীকার করেছেন তিনি। বিনা টিকিটে ১১ ঘণ্টা ট্রেনে চেপে স্ত্রী এবং তৎকালীন প্রেমিকা সুধা মূর্তিকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন। বিয়ের ৪৬ বছর পর প্রেমের স্মৃতি এখনও টাটকা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতার। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে ৭৭ বছর বয়সে স্ত্রীকে পাশে নিয়ে প্রেম পর্বের দিনগুলি ফিরে দেখলেন তিনি।
বিশ্বের অন্যতম ধনী এই মানুষটি তখন বেকার। পকেটে টাকা নেই। কিন্তু মনে সঙ্গীর প্রতি অগাধ ভালবাসা, সুধার সঙ্গে সময় কাটাতে ভালবাসতেন তিনি। তাই ক্ষমতা না থাকলেও ১১ ঘণ্টা সুধার পাশে থাকার লোভ সামলাতে পারেননি। টিকিট ছাড়াই চেপে বসেছিলেন ট্রেনের কামরায়।
প্রেমের কোনও অবয়ব নেই। কিন্তু প্রেমের জন্যে কিছু করতে পারার এই দুর্নিবার ইচ্ছা আসলে ভালবাসারই প্রতিফলন। এখনও সেটাই বিশ্বাস করেন তিনি। স্বামীর এই অকপট স্বীকারোক্তিতে অবশ্য সুধার চোখমুখ মাঝেমাঝেই লজ্জায় লাল হয়ে উঠছিল। স্বামীকে বারংবার বলছিলেন থেমে যেতে। তবে ইনফোসিস কর্তা অবশ্য থামেননি।
প্রেম পর্ব থেকে বিয়ে পর্যন্ত সম্পর্ক একই সরলরেখায় থাকে। কিন্তু সম্পর্কে বড় বদল আসে সন্তান আসার পর। নারায়ণ বলেন, ‘‘সন্তান হওয়ার পর সম্পর্কে একটা অন্য রকম সৌন্দর্য আসে। যেটা সত্যিই উপভোগ করার মতো।’’
নারায়ণ-সুধার প্রেম যদি হয় সিনেমা, তা হলে এটুকু হল তার প্রথম ঝলক। বাকিটা জানা যাবে দু’জনের সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে লেখা বই ‘অ্যান আনকমন লাভ: দ্য আর্লি লাইফ অফ সুধা অ্যান্ড নারায়ণ মূর্তি।’ দু’জনের প্রেমকে দুই মলাটে ধরেছেন আমেরিকার প্রবাসী চিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় দিভাকারুনি।
প্রেম নিয়ে খোলামেলা আলোচনার পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসায় স্ত্রীকে যুক্ত না করার আক্ষেপও ঝরে প়ড়েছে নারায়ণের কণ্ঠ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, সে দিনের সিদ্ধান্ত হয়তো সঠিক ছিল না। কয়েক বছর আগেই এই ভুল ভেঙেছে তাঁর। স্ত্রী বলে নয়, পরিবারেরও কেউ যদি যোগ্য হন, তা হলে ব্যবসা করতেই পারেন। বাধা দেওয়া মানেই সেই ব্যক্তির অধিকারে হস্তক্ষেপ করা।