কোন দেশে বাড়ছে প্রবীণদের সংখ্যা? ছবি: সংগৃহীত।
প্রতি ১০ জনের মধ্যে এক জনের বয়স ৮০ বছরের বেশি। আশি পেরোনো মানুষের সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি জাপান সরকারের তরফে এমনই হিসাব প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গিয়েছে, গত বছরের থেকে এ বছর আরও বেড়েছে প্রবীণদের সংখ্যা। আপাতত জাপানের ২ লক্ষ ৭০ হাজার নাগরিকই বৃদ্ধ।
জাপানে কোনও নাগরিকের বয়স ৬৫ বা তার বেশি হলে তাঁদের প্রবীণ হিসাবে ধরা হয়। এই বয়সে আনুষ্ঠানিক ভাবে অবসরজীবনে প্রবেশ করেন এবং পেনশন পেতে শুরু করেন। সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, এই জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩ কোটি ৬২ লক্ষ ৩০ হাজার। জাপানের মোট জনসংখ্যা ১২ কোটি ৪৬ লক্ষ। সেই হিসাবে জাপানে ৬৫ বছরের বেশি মানুষ রয়েছেন ২৯.১ শতাংশ। জাপানে প্রবীণ জনসংখ্যার সমস্যা যে গভীর, তা এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান কী ভাবে করা যায়, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই জাপানের নীতিনির্ধারক ও সমাজবিজ্ঞানীরা চিন্তাভাবনা করছেন। সাময়িক সমাধান হিসাবে বেশ কয়েক বছর আগে অবসরের সর্বনিম্ন বয়স বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে জাপানে অবসরগ্রহণের বয়স ছিল ৬০ বছর। বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৬৫ বছর করা হলেও এটি বাধ্যতামূলক নয়। অর্থাৎ, কেউ চাইলে ৬০ বছর বয়সেই অবসর নিতে পারেন।
প্রবীণ জনগোষ্ঠী সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় জাপান সরকারের ব্যয় অনেক বেশি হচ্ছে। চিকিৎসা ও পেনশন ছাড়াও তাঁদের জন্য নানা রকম সুযোগ-সুবিধা করে দিতে হচ্ছে। তা ছাড়া, প্রবীণদের জন্য সরকারি কিছু ভাতাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর ফলে জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানেই সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি। জাপানে অনেক প্রবীণ আবার একা বসবাস করেন। ফলে তাঁদের দেখাশোনা ও পরিচর্যা করার পিছনেও বিপুল অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়। জাপান প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আরও একটি সমস্যা হচ্ছে, তা হল দেশে শ্রমের ঘাটতি দেখা দেওয়া। প্রবীণেরা কায়িক পরিশ্রম করতে পারছেন না। ফলে নির্মাণকাজ, কৃষিকাজ, কারখানার শ্রমিকের মতো অনেক কাজে জাপানকে শ্রমিক ঘাটতির মুখে পড়তে হচ্ছে।