Working Hours

৮ ঘণ্টা পেরোলেই কাজের মান কমে! সময়-বিতর্কে এ বার নাম জড়াল সিরাম-কর্তা পুনাওয়ালার

প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থা পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদার পুনাওয়ালার সাফ কথা, দিনে ৮ ঘণ্টা কাজই যথেষ্ট। এর বেশি কাজ করার চেষ্টা করলেই কাজে ভুল হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৯
Share:

দিনে কত ঘণ্টা কাজ করা উচিত, মতামত দিলেন সিরাম কর্ণধার আদর পুনাওয়ালা। ফাইল চিত্র।

আপনার কাজের সময় কি ৮ ঘণ্টা পেরিয়ে যায় রোজ? ১২ ঘণ্টার বেশিও অফিসে থাকেন? বেশি ক্ষণ থাকলেই কি কাজের গতি বাড়ে? এই নিয়ে বিতর্ক চলছেই। কেউ বলছেন, আমেরিকা ও চিনের লোকজন সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন বলেই তাদের উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি, আবার কারও মত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করলেই যে কাজের মান ভাল হবে, তা নয়। প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থা পুণের সিরাম ইনস্টিটিউটের কর্ণধার আদার পুনাওয়ালাও তেমনটাই মনে করেন। তাঁর সাফ কথা, দিনে ৮ ঘণ্টা কাজই যথেষ্ট। এর বেশি কাজ করার চেষ্টা করলেই কাজে ভুল হবে।

Advertisement

একজন কর্মীর ৮-৯ ঘণ্টাই কাজে একাগ্রতা থাকে। ওই সময়ের মধ্যে বিরতি নিয়ে কাজ করলে কাজের মান ভাল হয়। কিন্তু যখনই তিনি ৯ ঘণ্টার বেশি কাজ করছেন তখন তাঁর উৎপাদনশীলতা কমে। মনঃসংযোগের ঘাটতি হয়, কাজের প্রতি আগ্রহও কমে। উল্টে মানসিক চাপ, উদ্বেগ বাড়ে। সিরাম কর্ণধারের কথায়, “আমি নিজে দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করি। আমার কর্মচারীরাও তাই করেন। পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজের সময় বদলাতে পারে। যিনি নতুন ব্যবসা শুরু করেছেন, তাঁকে বেশি খাটতেই হবে। কোভিডের সময়ে আমি দিনে ১৬ ঘণ্টাও কাজ করেছি। কারণ সেই সময়ে তা জরুরি ছিল। পরিস্থিতি বিচার করে কাজের সময় বাড়ানো বা কমানো উচিত। তবে তা প্রতি দিনের জন্য নয়।”

ইনফোসিসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। এর পরেই বোমা ফাটান লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর (এলঅ্যান্ডটি) চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর প্রস্তাব ছিল ঘাড় গুঁজে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে, রবিবারও ছুটি নিলে চলবে না। এর পরেই তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। আদারের মত, ‘‘অনেক উন্নত দেশে দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করার রেওয়াজ রয়েছে। কিন্তু সেই ঘণ্টাগুলি খুবই উৎপাদনশীল। কাজের জায়গায় কর্মীরা নিজেদের সেরাটা দিতে পারছেন কি না, সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কাজের সময় বেশি মানেই উৎপাদনশীতা বেশি, তা নয়। সেটা একজন কর্মীর যোগ্যতার উপরেই নির্ভর করে।’’

Advertisement

তা হলে কর্মসময় সপ্তাহে ঠিক কত ঘণ্টা হওয়া উচিত? আদারের মতে, সপ্তাহে ৫ দিন কাজ করলে ৮ ঘণ্টার হিসেবে ৪০ ঘণ্টাই আদর্শ। আর যদি সপ্তাহে ৬ দিন কাজ হয়, তা হলে তা ৪৮ ঘণ্টার মতো হতে পারে। এর বেশি হলে কাজের প্রতি আগ্রহ থাকবে না। অফিসে লক্ষ্যপূরণের জন্য ছুটতে গিয়ে পেশা ও সংসার জীবনের ভারসাম্য নষ্ট হবে, ফলে মানসিক চাপ, উৎকণ্ঠা চরমে পৌঁছবে। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন এক জন কর্মী। অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেবে, সেই সঙ্গেই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়বে। তাই সময়ের পিছনে না ছুটে কাজের মান বাড়ানোর চেষ্টা করাই উচিত বলে মনে করেন আদার পুনাওয়ালা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement