gym

Gyms in Kolkata: সচেতনতা ও পরিকাঠামোর অভাব কি বিপদ বাড়াচ্ছে শহরের জিমে

শহরের জিমগুলির পরিকাঠামো আদৌ শারীরচর্চার উপযুক্ত কি? স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাওয়ায় পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে উঠছে জিম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২২ ০৮:৩৪
Share:

জিম করে অসুস্থতা, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। ফাইল ছবি

কয়েকটি যন্ত্র বসিয়ে জিম খুললেই ভিড় বাড়ছে। কিন্তু শহরের জিমগুলির পরিকাঠামো আদৌ শারীরচর্চার উপযুক্ত কি? স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের সংখ্যা ক্রমশই বৃদ্ধি পাওয়ায় পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে উঠছে জিম। তবে অভিযোগ, অনেক জিমেই নেই পর্যাপ্ত পরিকাঠামো। এমনকি, নেই উপযুক্ত প্রশিক্ষকও। জিম করে অসুস্থতা, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি।

Advertisement

যেমন বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা, বছর উনিশের ঋত্বিকা দাস মঙ্গলবার জিম করার সময়ে আচমকা বুকে ব্যথা অনুভব করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট জিম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেনি ঋত্বিকার পরিবার।

শহরের বিভিন্ন জিমের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ভর্তি হওয়ার আগে সকলকে একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাতে জানাতে হয়, কোনও অসুখ রয়েছে কি না, থাকলে কী অসুখ। কিন্তু অভিযোগ, সেই ফর্ম কর্তৃপক্ষ খুঁটিয়ে দেখেন না। আরও অভিযোগ, কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার মতো প্রশিক্ষক বেশির ভাগ জিমেই থাকেন না। যত জন দরকার, প্রশিক্ষক থাকেন তার চেয়ে অনেক কম। ফলে সবার প্রতি সমান নজর দেওয়া হয় কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।

Advertisement

অধিকাংশ জিমই এখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু ভিড় জিমে সেই যন্ত্র ঠিক মতো কাজ করছে কি না বা কতটা বাতাস চলাচল করা দরকার, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ কতটা সচেতন, উঠে আসছে সেই প্রশ্নও।

শহরে একাধিক জিমের মালিক সায়ন সেনগুপ্ত নামে এক যুবক অবশ্য বললেন, ‘‘বেশির ভাগ জিমই নিয়ম মেনে চলে। তবে যাঁরা জিমে আসেন, তাঁদের অনেকেই খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। কম সময়ে অনেকটা ওজন কমানোর চেষ্টা বা ইউটিউব দেখে ব্যায়াম করার বিষয়ে প্রশিক্ষক সতর্ক করলেও শোনেন না তাঁরা।’’ একাধিক জিমের মালিক তথা জিম ওনার্স ফোরামের এক প্রতিনিধি গগন সচদেব বলেন, “আগে লোকে আখড়ায় ব্যায়াম করত। তার থেকে জিম অনেক বেশি আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চলে। তবে কোনও জিমেই চিকিৎসক থাকেন না। কেউ যদি জিমে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন, তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রশিক্ষক সব জিমেই থাকা উচিত। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে নিজেরশরীরের কী অবস্থা, তা অনেকেই জানেন না। তাই এখন জিমে ভর্তি হওয়ার আগে আরও সকলেরই সচেতন হওয়া দরকার।”

চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বলেন, ‘‘জিমে ভর্তি হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে নেওয়া দরকার। রক্তচাপ, হার্ট-সহ অন্যান্য রিপোর্ট ঠিক আছে কি না, তা দেখা জরুরি। কারও এই ধরনের সমস্যা থাকলে, জিম করার সময়ে অন্য সমস্যার পাশাপাশি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।’’

চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘শুধু জিম নয়, যে কোনও শারীরিক কসরত, যেমন সাঁতার, দীর্ঘ সময় ধরে দৌড় শুরুর ক্ষেত্রে সক্ষমতা মেপে নেওয়া প্রয়োজন।’’ স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইও। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেরই হার্টের নানা সমস্যা থাকে, কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে জিমে গিয়ে অত্যধিক কসরত শুরু করলে হার্টের গতি বেড়ে বিপদ হতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement