বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যেই চলছে কাজ। ছবি- সংগৃহীত
২০২০ সালে অতিমারির সময় থেকে সেই যে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ শুরু হয়েছে, তার রেশ চলছে এখনও। অফিসে যাওয়ার জন্য বাসের পিছনে ছোটা নেই, ঠিক সময়ে অফিসে ঢুকতে না পারলে ‘লেট ফাইন’ নেই। তবে এখন বাড়ি থেকেই ‘লগ ইন’ করার তাড়া আছে।
বাড়ি থেকে কাজ করার সুবিধা যেমন আছে, তেমন কিছু অসুবিধাও আছে। অফিসে গিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় থাকলেও বাড়ি বসে কাজ করলে তেমন বাঁধা সময় থাকে না। সংস্থার যখনই প্রয়োজন, তখনই কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এমনই অলিখিত কিছু নিয়ম থাকে। দিন, ক্ষণ, সময় কিছুর জন্যই ছাড় থাকে না।
যেমন হয়েছে কলকাতারই এক যুবকের ক্ষেত্রে। নিজের বিয়ের সকালেও বসে বসে কাজ করতে হচ্ছে তাঁকে। নেটমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হল সেই ছবি।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিয়ের সকালে হিন্দু বিয়ের প্রথা মেনে চলছে নান্দীমুখ, বৃদ্ধি। মণ্ডপে বসে রয়েছেন পুরোহিত, পাত্র এবং পাত্রের বাবা। বিয়ের পর বর-কনের যৌথ জীবন শুরু করার আগে পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করতে করতেই পাত্র খুলে ফেলেছেন ল্যাপটপ।
ল্যাপটপে তিনি কী কাজ করছেন, তা যদিও স্পষ্ট করে দেখা যাচ্ছে না। লোকে দেখে বুঝেছেন, ওই দিন ছুটি না মেলায় সকালবেলা আচার অনুষ্ঠান করতে করতেই অফিসের নির্দিষ্ট সময়ে ‘লগ ইন’ করছিলেন তিনি।
নেটমাধ্যমে বিয়ের সকালের এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই ভেসে যাচ্ছে মন্তব্যের ঝড়। এক জন লিখেছেন, “বিষয়টি একেবারেই মজার নয়। বিয়ের দিনে কোনও সংস্থাই তার কর্মীদের কাজ করতে আদেশ করতে পারে না। বিয়ে করতে যাওয়ার আগে ওঁর উচিত ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে শেখা। যে মেয়েটি এই ব্যক্তিকে বিয়ে করতে চলেছেন, তাঁকে ভবিষ্যতের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।”
এসেছে আরও মন্তব্য। আর এক জন বলছেন, “এই ধরনের মানসিকতাকে প্রচার করার কোনও মানেই নেই। এতে গর্বিত হওয়ারও কোনও কারণ দেখি না।” তৃতীয় জনের মত, “এই ছবিটি আদৌ সত্যি কি? দেখতে মজার হলেও এই ধরনের কর্ম সংস্কৃতি অন্যান্য কর্মীদের জন্য ভাল না-ও হতে পারে।”
তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু আলাদা ছিল বলেই দাবি বরের পরিবারের। এই বর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী সৈকত দাস। তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এ ক্ষেত্রে নান্দীমুখ বিয়ের দিন সকালে না করে আগের দিন করা হয়েছে। সৈকতের ছুটি ছিল বিয়ের দিন থেকে। নান্দীমুখের সময়ে হঠাৎ তাঁর একটি জরুরি ‘কল’ চলে আসে। তাই অনুষ্ঠানের মাঝেই তাতে যোগ দিতে হয়েছিল বরকে।