লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বরফের তলায় সুপ্ত অবস্থায় থাকা বস্তুগুলি জলে মিশতে থাকলে প্রাণিজগতের জন্য তা আশঙ্কাজনক। প্রতীকী ছবি।
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলে প্রাণিজগতে রাজত্ব করতে চলেছে ৫০ হাজার বছর পুরনো ‘জ়ম্বি’ ভাইরাস। এমনটাই দাবি করেছেন ফরাসি বৈজ্ঞানিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিশালাকার একটি বরফের হ্রদের তলায় ৫০ হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে এক ধরনের ভাইরাস। তা আবার ছড়াতে পারে।
‘ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ’ সংস্থাটির বৈজ্ঞানিক জ়াঁ মারি অ্যালেম্পিক তাঁর গবেষণাপত্রে এক বিপর্যয়ের আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি ওই ভাইরাস এক বার প্রাণিজগতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে, পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যবে।”
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে হাজার হাজার বছর ধরে ভেসে থাকা হিমবাহ গলতে শুরু করায় এমনিতেই জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি, হ্রদের একেবারে তলদেশে চির হিমায়িত অঞ্চলে আটকে থাকা ব্যাক্টেরিয়াগুলিও জলস্তরের মধ্যে মিশতে শুরু করে। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বরফের তলায় সুপ্ত অবস্থায় থাকা এই বস্তুগুলি জলে মিশতে থাকলে প্রাণিজগতের জন্য তা সত্যিই আশঙ্কাজনক।
এই গবেষণার অন্য আরও এক বৈজ্ঞানিক জ্যঁ মিশেল ক্লেভেরই বহুকাল আগে থেকেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করেই চিকিৎসক মহলকে সতর্ক থাকার কথা জানান। তবে তখন জানানো হয়, যদি কখনও তেমন পরিস্থিতি আসেও এই ভাইরাসটি মানবদেহের কোনও ক্ষতি করবে না। সে তথ্যকে ভুল প্রমাণ করে নতুন এই গবেষণা বিজ্ঞানী মহলে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। গবেষণায় জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের ১৩ রকম নতুন স্ট্রেন রয়েছে। রাশিয়ার ইয়ুকশি লেকের গভীরে নতুন এই ‘জ়ম্বি’ ভাইরাসটির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যার অন্য স্ট্রেনগুলি ম্যামথের লোম থেকে সাইবেরিয়ান নেকড়ের অন্ত্রের মধ্যেও ছড়িয়ে রয়েছে।
বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, কোভিড ১৯-এর পর ‘জ়ম্বি’ ভাইরাসই মানবদেহের জন্য নতুন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তবে এই ভাইরাসটি আলো, তাপ এবং অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে, তার ক্ষমতা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।