শেষপাতে মিষ্টিমুখে চকোলেট মাখানো তরুণী। ছবি:সংগৃহীত।
শেষপাতের মিষ্টিমুখে এল চকোলেট মাখানো জীবন্ত মডেল। সম্প্রতি ইটালি বেড়াতে গিয়ে সেখানকার হোটেলে এমনই এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন মিলানের বাসিন্দা ফেরেডিকো মাজ়িয়ারি নামে এক ব্যক্তি। ফেরেডিকো গোটা ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তাঁর সমাজমাধ্যমের পাতায়।
১৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে ইটালি সফরে গিয়েছিলেন ফেরেডিকো। এক জন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার এইচআর বিভাগের কর্মী তিনি। মেয়ের স্কুলে ছুটি চলছিল। নিজেও তাই অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বেড়াতে বেরিয়ে পড়েন। ঘুরতে গিয়ে এমন এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি তাঁদের হতে হবে, তিনি বোধ হয় কল্পনাও করেননি।
একটি বিলাসবহুল হোটেলে উঠেছিলেন। ফেরার দিন সকালের জলখাবার খাওয়ার পর মেয়েকে নিয়ে সুইমিং পুলে নেমেছিলেন স্নান করতে। সেখানেই ঘটনাটি ঘটে। সুইমিং পুলের নীল জলে মেয়ের সঙ্গে যখন খেলাধুলোয় ব্যস্ত, সেই সময়ে হোটেলের দুই কর্মী এক তরুণীকে তাঁদের সামনে এনে দাঁড় করান। ওই তরুণী বস্ত্রহীন ছিলেন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত চকোলেটের পুরু আবরণ দিয়ে মোড়া ছিল। হোটেলের কর্মীরা তাঁকে জানান, জলখাবারের পরে ‘মিষ্টিমুখ’ করার জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেটা শোনার পর রীতিমতো আকাশ থেকে পড়েন ফে়রেডিকো। এমনও যে হতে পারে, তা তাঁর ধারণার বাইরে ছিল। সেই মুহূর্তে সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে নিয়ে হোটেলের ঘরে চলে আসেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই হোটেল ছাড়েন তাঁরা। ফেরেডিকো লিখেছেন, ‘‘মেয়েদের এ ভাবে পণ্য হিসাবে ব্যবহার করতে দেখে আমার মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। ঘটনার সময়ে সঙ্গে আমার কিশোরী মেয়েও ছিল। পরে আমি তার দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারিনি।’’
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ওই হোটেলকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে মাঠে নেমেছিলেন হোটেল কর্তৃপক্ষও। তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা ইটালীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করেই যা করার করেছি। হোটেলে আসা অতিথিদের মনোরঞ্জনের এই রীতি বহু দিন ধরেই চলে আসছে। শুধু মাত্র এই কারণেই বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথিরা এখানে আসেন।’’ পাল্টা জবাব দিয়েছেন ফেরেডিকোও। তাঁর কথায়, ‘‘অতিথি আপ্যায়ন হতে পারে না। অন্তত আমার কাছে তো নয়ই। এই ঘটনায় অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেছি আমি। কোনও এক জন অতিথিও যদি হোটেলের পরিষেবা নিয়ে লজ্জিত এবং অপমানিত হন, সেটাও হোটেল কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। খাবার হিসাবে মেয়েদের পরিবেশন করার এই রীতি এখনই বন্ধ করা হোক।’’