ছবি : ইনস্টাগ্রাম।
গরমের শরবত নয়, শীতের কফিও নয়— চা হল গিয়ে চা। যেখানে ‘প্রাণের আরাম, আত্মার শান্তি’। ভারতে চায়ের মর্ম কী আর ভারতের মরমে চা কোথায় স্থান পেয়ে বসে আছে, তা জানতে গোটা পৃথিবীর বাকি নেই। কিন্তু সেই ভারতীয়েরাও এক কাপ চায়ের জন্য সবচেয়ে বেশি কত অর্থ ব্যয় করবেন? অভিজাত ক্যাফে বা শৌখিন রেস্তরাঁর দাম নয় ছেড়েই দেওয়া গেল। মুম্বইয়ের তাজ প্যালেস হোটেলেও এক কাপ চায়ের দাম পড়ে ৬৫০-৭৫০ টাকা। আর দুবাইয়ে কিনা এক কাপ চা বিক্রি হচ্ছে এক লক্ষ টাকায়!
ক্যাফের ঠিকানা দুবাইয়ের এমিরেটস ফিনান্সিয়াল টাওয়ার। নাম বোহো ক্যাফে। সেই ক্যাফের মালিক আবার এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতই। নাম সুচেতা শর্মা। সুচেতার ক্যাফেতে ৫০০০ দিরহাম (ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা) খরচ করলে পাওয়া যায় ‘গোল্ড কড়ক টি’। সোনার গুঁড়ো মেশানো ২৪ ক্যারাট সোনার তবক মোড়া সেই চা পরিবেশন করা হয় খাঁটি রুপোর পেয়ালা-পিরিচে। সঙ্গে রুপোর রেকাবিতে আসে সোনায় মোড়া ক্রসাঁ। গ্রাহক চাইলে একই ভাবে কফিও খেতে পারেন। তবে দাম পড়বে একই— লাখ টাকা।
তবে লাখ টাকায় চায়ের পাশাপাশি চা পরিবেশন করার রুপোর বাসনও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবেন ক্রেতা। দুবাইয়ের ওই ক্যাফে তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টেই জানিয়েছে সে কথা। সোনার চা পরিবেশনের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে ক্যাপশনে তারা লিখেছে, ‘‘বিশ্বের সবচেয়ে দামি কড়ক চায়ের অভিজ্ঞতা নিন। যা খাঁটি রুপোর পাত্রে ২৪ ক্যারাট সোনায় সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়। যার প্রতি চুমুকের সঙ্গী হয় সোনার গুঁড়ো ছড়ানো ক্রসাঁ। আর রুপোর বাসনগুলোও আপনারই জন্য।’’
বোহো ক্যাফে গত মাসে সোনার চায়ের ওই ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল। তার পর থেকেই সেই ভিডিয়ো আগুন গতিতে ছড়িয়েছে ইন্টারনেটে। নেটাগরিকেরা দেখে বিস্মিত হয়েছেন। একই সঙ্গে এমন চা কে অত খরচ করে খাবেন, তা নিয়েও শুরু হয়েছে মশকরা। কেউ লিখেছেন, ‘‘এ বার চা খেতে গেলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে হবে।’’ কেউ আবার জানতে চেয়েছেন, ‘‘আমার এক কাপ চাই না। এক চুমুকের দাম কত পড়তে পারে?’’ এক ভারতীয় চাপ্রেমী আবার জানতে চেয়েছেন, ‘‘আচ্ছা এখানে কি ইএমআই দিয়ে চা খাওয়া যাবে?’’
সোনার দামি চা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে আরব দুনিয়ার সংবাদমাধ্যমেও। খলিজ টাইমস লিখেছে, ওই ক্যাফেতে সব খাবারই যে এমন দামি, তা নয়। চাইলে খাদ্যপ্রেমীরা আয়ত্তের মধ্যে থাকা দামেও খাবার খেতে পারেন। চা-কফির পাশাপাশি ভারতের জনপ্রিয় বিভিন্ন ফুটপাথের খাবারও পরিবেশন করা হয় ওই ক্যাফেতে সাজিয়েগুছিয়ে। তা হলে চায়ের এত দাম কেন? বোহোর মালকিন সুচেতা বলছেন, ‘‘আমরা এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম, যেটা সাধারণ ভাবনাচিন্তার বাইরে। যা শুধু তাঁদের জন্য থাকবে, যাঁরা ভোগবিলাস ভালবাসেন। গোল্ড কড়ক চা তাঁদের জন্যই।’’ তবে কেউ যদি সোনার চা-কফির জন্য লাখ টাকা ওড়াতে না চান, তবে রুপোর পাত্রের মায়া কাটিয়ে ১৫০ দিরহামেই চা পান করতে পারেন। ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম পড়বে সাড়ে তিন হাজার টাকার আশপাশে।