পোশাকি নাম নোম। পুরো কথা গার্ডেন নোম। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে একাই বাজিমাত করছে সে। বড় বাগান সাজানো হোক কিংবা বারান্দার ছোট পরিসরের গাছ... নোম অর্থাৎ এই বাগানবুড়ো কিন্তু একেবারে ভোল বদলে দেবে।
আসলে কী?
নোম আসলে এক ধরনের মূর্তি, যা রাখা হয় বাগানে। একেবারে বৃদ্ধ মানুষের মতো দেখতে এই নোমের গালভর্তি সাদা দাড়ি ঝুলছে, মাথায় টুকটুকে রঙিন লিবার্টি ক্যাপ। আর তার হাতে কিন্তু পাইপ থাকতেই হবে। ‘স্নো হোয়াইট অ্যান্ড সেভেন ডোয়ার্ফস’-এর ওই সাত-সাতটি বুড়োর কথা মনে পড়ে? নোম কিন্তু এক্কেবারে ও রকমই দেখতে।
শুরুর গল্প
বহু বহু বছর আগে, প্রাচীন রোমের বাগানে থাকত এক ধরনের পাথরের মূর্তি। বিশ্বাস ছিল, সেই মূর্তিগুলোই ফার্টিলিটি গড বা উর্বরতার ভগবান প্রিয়াপসের প্রতিনিধি। এমনকি এই নোম আসলে বাগান পাহারারও কাজ করত বলে বিশ্বাস। যদিও সে সময়ে তার নাম ছিল গোব্বি। পরে রোম থেকে জার্মানি হয়ে পুরো পাশ্চাত্যে ছড়িয়ে পড়ার পরে গোব্বির নাম বদলে হয়ে যায় নোম। জার্মানিতে নোমেন (gnomen) শব্দের অর্থ মিনিয়েচার। অনুমান করা হয়, সেখান থেকেই বদলেছে নাম।
পাশ্চাত্য থেকে পুবে ভ্রমণ
এই বাগানবুড়োকে শুরুর দিকে তৈরি করা হত টেরাকোটা দিয়ে। পরে সেরামিক, রেসিন জাতীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়। মোল্ডে ফেলে বুড়োর মূর্তি তৈরির পরে রং করা হয়। বসানো হয় চোখ-নাক-মুখ-কান। সাধারণত এক থেকে দু’ফুট লম্বা বুড়ো বহু বছর ধরে পাহারা দিয়ে আসছে ধনী ব্যক্তিদের বাগান। তবে এখন এই বাগানবুড়োকে ব্যবহার করা হয় সাজানোর জন্যও। ফলে কমে এসেছে তার উচ্চতাও। যাঁদের বাড়ির সামনে বড় বাগান আছে, তাঁরা নির্দ্বিধায় বড় নোম বসাতেই পারেন। কিন্তু যদি বারান্দায় লাগিয়ে থাকেন স্বল্প কয়েকটি গাছ, সেখানেও রাখতে পারেন ছোট্ট নোম। এমনকি একটি বড় টবে ছোট ছোট কয়েকটি গাছ পুঁতে ইতিউতি বসাতে পারেন মিনিয়েচার নোম। নজর কাড়বে যে কারওরই। অনলাইনে পাবেন এটি।
তবে একটা কথা বলাই বাহুল্য। যে বুড়োকে পাহারা দেওয়ার জন্যই রাখা হয়, সেই বুড়োকেই কেউ যদি ভালবেসে আপনার বাগান থেকে তুলে নিয়ে যায়, তবে অন্তত ক্ষুণ্ণ হবেন না। কারণ, বাগানবুড়ো যে বড়ই মিষ্টি!
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।