ভাইরাসবাহিত এই রোগটি শুধু বয়স্ক বা শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়। মধ্যবয়স্করাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ছবি- সংগৃহীত
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ‘স্প্যানিশ ফ্লু’-র স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছিল করোনা অতিমারি পর্ব। এখন তার প্রকোপ খানিকটা স্তিমিত। আবহাওয়ার খামখেয়ালি স্বভাবের জন্য ইদানীং আবার অন্য নানা রকম ফ্লু মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো কিছু লক্ষণ, যা দেখে বোঝারও উপায় থাকে না, তা সাধারণ ঠান্ডা লাগা না সংক্রামক কোনও ব্যধি।
ভাইরাসবাহিত এই রোগটি শুধু বয়স্ক বা শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয়। মধ্যবয়স্করাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসক জেজো করণকুমার। তিনি বলেন, “সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা ছাড়া এই রোগ থেকে বাঁচার কোনও উপায় নেই।”
এই রোগ থেকে বাঁচতে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন?
১) টিকার প্রতিটি ডোজ় সম্পূর্ণ করুন
ফ্লু প্রতিরোধের জন্য শিশুদের এবং পূর্ণবয়স্কদের আলাদা দু’টি টিকা রয়েছে। প্রতি বছর সময় মতো সেই টিকাগুলি নেওয়া জরুরি। তবে ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার পর এই টিকা নিলে বিশেষ লাভ হবে না। আগেই নিতে হবে।
২) হাত ধুয়ে খাবার খান
হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে জল বা সাবানের কোনও বিকল্প নেই। তবু যদি সব জায়গায় জল, সাবানের ব্যবস্থা না থাকে, তখন স্যানিটাইজ়ারের উপর ভরসা করতে হবে। কিন্তু হাত না ধুয়ে শুধু খাবার খাওয়া নয়, চোখ-মুখ বা নাকও স্পর্শ করা যাবে না।
৩) জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলুন
রাস্তাঘাটে বা ভিড়ের মধ্যে সংক্রামিত রোগীরা মিশে থাকেন। তাঁদের আলাদা করে চেনার উপায় থাকে না। তাই তাঁদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে পারলেই ভাল। না হলে আবার মাস্ক পরার অভ্যাস শুরু করতে হবে।
মধ্যবয়স্ক বা বয়স্কদের বাদ দিলে ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বেশি শিশুদের। বড়রা নানা রকম সাবধানতা অবলম্বন করতে পারলেও ছোটদের এই সব নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য করানো খুব কঠিন ব্যাপার। তার উপর অপুষ্টিজনিত সমস্যা থাকলে এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা মুশকিল হয়। কলকাতার অরবিন্দ সেবাকেন্দ্রের শিশুরোগ চিকিৎসক জয়দীপ চৌধুরি বলেন, “কোভিড পরবর্তী সময়ে শিশুদের ফ্লুয়ে আক্রান্তের হার প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বড়দের নানা রকম বিধি নিষেধের বেড়াজালে আটকানো গেলেও ছোটদের কিন্তু বোঝানো মুশকিল। তাই তাদের সময় মতো টিকা দেওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া, পর্যাপ্ত জল বা তরল খাওয়া, নিয়মিত শরীরচর্চা করানোর অভ্যাস করাতে হবে।”