শৌচাগার দুর্গন্ধমুক্ত রাখার সহজ উপায় ছবি: সংগৃহীত
শৌচাগারে দুর্গন্ধ কম-বেশি সব বাড়িরই সমস্যা। সেই গন্ধে মাঝেমধ্যেই প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠার উপক্রম হওয়াও আশ্চর্যজনক নয়। আর বাড়িতে যদি কোনও অতিথি এসে শৌচাগারে যেতে চান, তা হলে তো সম্মানের দফারফা কার্যত নিশ্চিত। রইল এমন কিছু টোটকা, যেগুলি কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে বাথরুমের দুর্গন্ধ থেকে
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
১। শৌচালয় খোলামেলা রাখুন
শৌচাগার খোলামেলা থাকলে বায়ু চলাচল ভাল হয়। এতে এক দিকে যেমন দুর্গন্ধ দূর হয়, তেমনই অন্য দিকে বাথরুমের দেওয়াল ও মেঝের আর্দ্রতার পরিমাণও হ্রাস পায়। ফলে দেওয়াল স্যাঁতসেঁতে হয় না। বাতাস বার করে দেওয়ার পাখা থাকলে তা চালিয়ে রাখতে পারেন। যত ক্ষণ সম্ভব খোলা রাখতে হবে বাথরুমের দরজাও।
২। খাবার সোডা
একটি পাত্রে মাত্র পঞ্চাশ গ্রাম খাবার সোডা রেখে দিতে পারেন শৌচাগারের ভিতর। খাবার সোডা বাতাসের আর্দ্রতা ও দুর্গন্ধ টেনে নেয়। পাশাপাশি, চাইলে সমপরিমাণ খাবার সোডা ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি অর্ধতরল মিশ্রণ তৈরি করতে পারেন। বাথরুমের বিভিন্ন কোনায়, বেসিনের তলায় কিংবা অন্যান্য অংশে এই পেস্ট মিশ্রণ করে মাখিয়ে রাখলে দূর হতে পারে দুর্গন্ধের সমস্যা।
৩। ভিনিগার
উপরে উল্লিখিত লেবুর রস ও খাবার সোডার মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ১০-১৫ মিনিট পর সংশ্লিষ্ট স্থানগুলিতে ভিনিগার স্প্রে করে দেওয়া যেতে পারে। সাদা ভিনিগার বাথরুমের দুর্গন্ধ দূর করার সঙ্গে সঙ্গে বাথরুম পরিষ্কারের কাজেও আসতে পারে। দুই কাপ জলে এক চামচ ভিনিগার, এক চামচ বেকিং সোডা ও কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করে ছড়িয়ে দিলেই গায়েব হবে গন্ধ।
৪। বোরাক্স
শৌচাগারের বিভিন্ন প্রান্তে কালচে ছোপ পড়তে দেখেছেন? চলতি কথায় একে বলা হয় ছাতা পড়া। কিন্তু আসলে এগুলি হল ছত্রাক। ছত্রাক যেমন দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে, তেমনই ডেকে আনতে পারে একাধিক রোগ-ব্যাধি। অনেকেরই ব্লিচিং পাউডার কিংবা সাধারণ সার্ফ দিয়ে এই ছত্রাক পরিষ্কার করেন। এতে তাৎক্ষণিক ভাবে ছত্রাক দূর হলেও ভবিষ্যতে ফিরে আসার আশঙ্কা থেকে যায়। এই ছত্রাক দূর করার সবচেয়ে ভাল উপায় হল বোরাক্স দ্রবণ ব্যবহার করা।
৫। মোমবাতি
মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখলে অতি দ্রুত বাথরুমের গন্ধ দূর হয়। এর জন্য কোনও বিশেষ মোমের তৈরি কিংবা সুগন্ধি যুক্ত মোমবাতিরও প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণ মোমবাতিই যথেষ্ট। তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়।
৬। বাঁশের চারকোল
বর্তমানে বাথরুমের দুর্গন্ধ দূর করতে বাঁশের চারকোলের ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাঁশের চারকোল বাতাসের দুর্গন্ধ ও বাতাসে মিশে থাকা বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ শোষণ করে নেয়। শোষণ করে আর্দ্রতাও। পাশাপাশি এটি পরিবেশবান্ধবও বটে।
৭। জিনিসপত্র সাফাই
তবে কোনও টোটকাই কাজে আসবে না যদি না শৌচাগার নিয়মিত সাফাই করা হয়। মনে রাখবেন, দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে শুধু বাথরুমের মেঝে পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। বাথরুমে রাখা সাবানের তাক, শ্যাম্পুর কৌটো, গা ঘষার ছোবড়া কিংবা অন্যান্য রূপটানের সামগ্রীও পরিষ্কার করতে হবে নিয়মিত। ভেজা জামাকাপড় কিংবা তোয়ালে কোনও মতেই বাথরুমের ভিতরে রাখা চলবে না। বাথটব, সিঙ্ক ও কমোডের জলের পাত্রটিও নিয়মিত পরিষ্কার করাই বাঞ্চনীয়। অনেক সময়ে জল নির্গত হওয়ার ছিদ্রে ময়লা জমে থাকে যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। বিশেষত চুল, ময়লা ও অন্যান্য আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। তাই বাথরুমের বা বাথরুমে থাকা বেসিনের নালী পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি।