কোন অভ্যাসের ফল কেমন? ছবি: সংগৃহীত।
শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবেন তাই সয়! এই যুক্তি মেনে অল্প বয়সে যথেচ্ছ অত্যাচার করেছেন শরীরের উপর। প্রায় প্রতি রাতেই জেগে জেগে সিরিজ় দেখেছেন। সকালে জলখাবার খাওয়ার সময়ে ঘুম ভাঙেনি। তাই কাজে বেরোনোর সময়ে একেবারে ব্রাঞ্চ করে নিয়েছেন। শরীরচর্চার বিষয়ে জানেন না, তা নয়। কিন্তু সময়ের অভাব। তাই নিয়মিত করতে পারেন না। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সব অভ্যাস অল্প বয়সে খাটলেও ভবিষ্যতে কিন্তু তার ফল ভাল না-ও হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে কোনও অভ্যাস নিয়মিত করতে থাকলে তার প্রভাব পড়ে শরীর এবং মনে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে শরীরে টক্সিন জমতে থাকে।
কোন কোন অভ্যাস অদূর ভবিষ্যতে আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে?
১) শারীরিক ভাবে সক্রিয় না থাকা
সবে মাত্র ৩০-এ পা দিয়েছেন। শারীরিক তেমন সমস্যা কিছু নেই। ওজনও নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। তাই আলাদা করে খুব একটা শরীরচর্চা করার কথা ভাবেন না। অবসর জীবনের জন্য তুলে রেখেছেন যোগাসন, ধ্যান বা প্রাণায়ামের মতো বিষয়গুলি। কিন্তু প্রশিক্ষকেরা বলছেন, কম বয়স থেকে শরীরচর্চা না করলে বেশি বয়সে গিয়ে তা নতুন করে শুরু করা খুব কঠিন। তার চেয়েও বড় কথা শরীরচর্চা শুরু করা মাত্রই তার ফল চোখে দেখতে পাওয়া যায় না। তাই বয়সকালে ভাল থাকতে গেলে শরীরচর্চা শুরু করতে হবে অল্প বয়স থেকেই।
২) অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া
আপনি যা খাবেন, শরীরে তা-ই প্রতিফলিত হবে। দীর্ঘ দিন ধরে ভাজাভুজি, অতিরিক্ত তেল-মশলা দেওয়া খাবার খেলে তার ফল হয়তো তৎক্ষণাৎ শরীর গিয়ে পড়বে না। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে তার ফলে শরীরে নানা ধরনের রোগ দেখা দিতেই পারে।
৩) দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকা
অফিসে হোক বা বাড়ি— সময় পেলেই হাতে ফোন নিয়ে বসে পড়লেন। একের পর এক রিল দেখতে গিয়ে কখন যে সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে যায় খেয়াল থাকে না। চিকিৎসকেরা বলছেন, দীর্ঘ ক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে বাড়তে পারে হার্টের রোগ। শুধু তা-ই নয়, কিডনি বা লিভারের উপরেও চাপ পড়তে পারে। বিপাকহারের মান খারাপ হতে পারে।
৪) পর্যাপ্ত জল না খাওয়া
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না খেলে শরীরে টক্সিন জমতে থাকে। এই টক্সিন বা দূষিত পদার্থ, এক দিনে শরীরের উপর প্রভাব ফেলে না। দীর্ঘ দিন ধরে একটু একটু করে প্রতিটি অঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে।
৫) মানসিক চাপ
অল্প বয়সে পড়াশোনার চাপ, ইঁদুর দৌড় থেকে মনের উপর চাপ পড়া স্বাভাবিক। ছোটবেলায় অনেক অভিভাবকই এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না। পরবর্তীকালে কর্মজগতে পা দেওয়া মাত্রই তা বৃহৎ আকার ধারণ করে। ফলে মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। শুধু তাই নয়, এই ধরনের মানসিক চাপ থেকে অন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনিয়মিত হৃদ্স্পন্দনের সমস্যাও দেখা যায় কারও কারও ক্ষেত্রে।