Fitness

হবু মায়ের ফিট থাকার মন্ত্র

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়াম জরুরি। কিন্তু কী ধরনের ব্যায়াম করবেন, তা জেনে নিনপ্রতি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন ২০ মিনিট যোগাসন করার। এতে যেমন ফিট থাকবেন, তেমনই মন ও শরীর চনমনে হবে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share:

দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ২০১৭ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সেরেনা উইলিয়ামস। তিনি কিন্তু সুস্থ অবস্থায় ফুটফুটে একটি মেয়ের জন্ম দেন।

Advertisement

এখন যুগ বদলেছে, মানুষের জীবনযাত্রার ধরনও। বদলেছে মানুষের ভাবনাচিন্তাও। প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে মহিলারা বাস, মেট্রোয় যাতায়াত করছেন। তাই এ সময়ে ফিট থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। টেনিস না খেললেও, সহজ কিছু ব্যায়াম রয়েছে, যেগুলি নিয়মিত করলে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও আপনি অনায়াসে নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে পারবেন।

এ সময়ে কী ধরনের ব্যায়াম করা উচিত? এটা একটা বড় প্রশ্ন। কেউ উপদেশ দেন যোগব্যায়াম করার জন্য। কেউ আবার জিমে গিয়ে হালকা কসরত করতে বলেন। ফিটনেস ট্রেনার চিন্ময় রায় বলছিলেন, ‘‘সবচেয়ে ভাল হয় যদি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ব্যায়াম করা যায়। কারও যদি প্রেগন্যান্সি সম্পর্কিত কোনও জটিলতা থাকে, সে ক্ষেত্রে জিম বা যে কোনও ভারী ব্যায়াম করা অনুচিত।’’

Advertisement

যোগব্যায়াম ও অ্যািকউপ্রেশার বিশেষজ্ঞ অনীশ রঘুপতি আবার বললেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ভারী কোনও ব্যায়াম না করে, মন ও শরীর যাতে রিল্যাক্সড থাকে, সে দিকে নজর দেওয়া উচিত। কঠিন যোগাসন নয়, বরং হালকা ধরনের যোগব্যায়াম আপনি এ সময়ে করতেই পারেন। প্রাণায়াম, মেডিটেশন তো করাই যায়।’’

জরুরি যোগব্যায়ামও

যোগব্যায়ামের ক্ষেত্রে প্রথমেই মনে রাখতে হবে, আপনার শারীরিক অবস্থার কথা। শরীরের পরিস্থিতি ঠিক কী রকম রয়েছে, সেই বুঝে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে যোগব্যায়াম করা উচিত। যোগব্যায়াম এবং অ্যাকিউপ্রেশার বিশেষজ্ঞ অনীশ রঘুপতির পরামর্শ, প্রতি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন ২০ মিনিট যোগাসন করার। এতে যেমন ফিট থাকবেন, তেমনই মন ও শরীর চনমনে হবে।

• সহজ সেতু আসন: ছ’মাস পর্যন্ত এই আসন আপনি করতে পারেন। অনেকে সাত মাস পর্যন্তও এই আসন করেন। এ সময়ে কোমরে যে ব্যথা হয়, সেটা থেকে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়।

• ব্রহ্মচর্যাসন ও সুপ্ত ব্রহ্মচর্যাসন: এই দু’টি আসন শেষ মাস পর্যন্ত করা যায়। এটি তলপেট এবং লোয়ার হিপের দৃঢ়তা বাড়ায়।

• বদ্ধ গোমুখাসন: প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে তলপেট ভারী হয়ে যায়। ফলে স্ট্রেচ মার্ক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পেট যাতে বেশি নীচে নেমে না যায়, তা টাইট রাখার জন্য এই আসন কার্যকর।

• প্রাণায়াম: নানা ধরনের প্রাণায়াম রয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মনকে খুশি রাখতে হবে আর শরীরকে সুস্থ। যেমন বজ্রাসন খাবার হজম করতে সাহায্য করে। ব্রাহ্মী প্রাণায়ামের মধ্য দিয়ে শরীরে একটা অনুরণন তৈরি হয়, ফলে হরমোন নিঃসরণ যথাযথ হয়। পাশাপাশি মায়ের সঙ্গে শিশুর যোগসূত্রও গড়ে ওঠে। আসলে সেই অনুরণনের ছোঁয়া গর্ভে থাকা শিশু পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

• ডান্স মুভমেন্ট থেরাপি: কিছু সহজ নাচের মুভমেন্ট রয়েছে, যেগুলি এ সময়ে কার্যকর।

• মেডিটেশন: যে সব হবু মায়ের পেশার খাতিরে স্ট্রেস নিতে হয়, তাঁদের জন্য মেডিটেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গান চালিয়ে বজ্রাসনে বসতে পারেন। গল্পের বই পড়তে পারেন। যা করলে আপনার মন শান্ত থাকবে, তা-ই করুন।

• অর্ভক আসন ও জয়াসন: দু’টি আসনই মা ও শিশুর জন্য খুবই উপযোগী। তবে জোর করে কোনও আসন করা এ সময়ে অনুচিত।

• অর্ধবিভক্ত আসন: এই আসনে থাইয়ের পেশির স্ট্রেচিং হয়। এতে ডিপ্রেশন কমে।

জিমে কসরত

এ তো গেল যোগব্যায়ামের কথা। এখন ফিটনেস ট্রেনাররা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় জিমে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে ফিটনেস ট্রেনার চিন্ময় রায়ের কথায়, একেবারে হালকা ট্রেনিং করলে মায়ের ফিটনেস যেমন বজায় থাকে, একই সঙ্গে শিশুর জন্মের সময়ে বা পরবর্তী সময়ে অনেক জটিলতাও এড়ানো যায়।

• প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক: পাঁচ-ছ’মাস পর্যন্ত এই ব্যায়াম অনায়াসেই করা যেতে পারে।

• কেগেল: এই ব্যায়ামের ফলে পেলভিক ফ্লোর মাসল কাজ শুরু করে। যা তলপেটের সেই পেশিগুলিকে শক্তিশালী করে, যেগুলি জরায়ু ও মূত্রথলির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি যোনির পেশিকেও শক্তি জোগায়। শিশুর জন্মের পরে পেলভিক ফ্লোর মাসলগুলি দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা যাতে না হয়, তার জন্য কেগেল উপযোগী।

• সাইক্লিং: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সাইক্লিং করা যেতে পারে।

তবে যে কোনও ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই নিতে হবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।

মডেল: পিয়া চৌধুরী

মেকআপ: চয়ন রায়

ছবি: সৌরভ মুখোপাধ্যায়

লোকেশন ও হসপিটালিটি: রঁদেভু মোনোটেল, সেক্টর ফাইভ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement