stress

বাড়ি ফিরেও অফিসের কাজ করেন? বিপদ ডাকছেন কিন্তু, বলছে গবেষণা

ঠিক কী কারণে স্ট্রেস বাড়ছে তা জানলে তবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:৩৫
Share:

অফিসের চাপে নষ্ট হচ্ছে শরীর-মন। ছবি: আইস্টক।

রোজকার ‘ঘোড়দৌড়’ থাকবে অথচ স্ট্রেস থাকবে না! এই দুটো একসঙ্গে খুব কম মানুষের জীবনেই ঘটে। এই স্ট্রেসকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের শরীরে বাসা বাঁধছে নানা লাইফস্টাইল ডিজিজ। ব্লাড প্রেশার থেকে শুরু করে, রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকছে না আর। বাড়ছে কোলেস্টেরলের মাত্রা, দেখা দিচ্ছে হার্টের সমস্যাও। তা ছাড়া মানসিক অবসাদের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত স্ট্রেস।

Advertisement

স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে চিকিৎসকরা নিয়মমাফিক খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে টেনশন কমান বললেই যেমন টেনশন কমে না, তেমনই স্ট্রেস সরানোর কিছু উপায় অবলম্বন করলেই যে স্ট্রেস চিরতরে চলে যাবে, এমনও নয়। আসলে স্ট্রেসের কারণটুকু জানতে পারলে স্টেসের সঙ্গে লড়াই অনেকটা সহজ হয়। ঠিক কী কারণে স্ট্রেস বাড়ছে তা জানলে তবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তা।

আধুনিক গবেষণা বলছে, ব্যক্তিগত জীবনের চেয়ে কর্মস্থলের চাপ প্রায় তিনগুণ স্ট্রেসের মুখে ঠেলছে। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পরও অফিস সংক্রান্ত মেসেজ, কল কিংবা ই-মেল ঢুকতে থাকে প্রায় বিশ্বব্যপী ৫৪ শতাংশ মানুষের ফোনে। না চাইলেও অফিসের কাজ বাড়িতে এসে করতে হয় অনেককে। আদতে আমাদের জীবন গতি ও প্রযুক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয় অনেক বেশি। এর ফলে আগে যে কাজ আমাদের অফিসের গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, তা খুব সহজেই এখন ঢুকে পড়ছে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোমর ও পিঠে ব্যথা হয় মাঝে মাঝেই? এ সব নিয়মে জব্দ করুন সহজে

সম্প্রতি ‘ভার্জিনিয়া টেক’ নামক একটি সংস্থা ‘কিলিং মি সফ‌্টলি: ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন মনিটরিং অ্যান্ড এমপ্লয়ি অ্যান্ড সিগনিফিক্যান্ট আদার ওয়েল বিয়িং’ শীর্ষক একটি গবেষণা করেছিল। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ছুটির পরেও অফিসের কাজ সারতে অথবা অফিস সংক্রান্ত মেসেজ কিংবা মেলের উত্তর দিতে গিয়ে কর্মীরা তাঁদের ব্যক্তিগত দায়িত্বগুলি ঠিক ভাবে পালন করে উঠতে পারছেন না। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনও। এই সমীক্ষায় যুক্ত অন্যতম গবেষক উইলিয়াম বেকারের মতে, ‘‘এর ফলে স্ট্রেস আর উদ্বেগ বাড়ছে, ক্রমশ কমছে উদ্ভাবনী ক্ষমতা।’’

ব্লাড প্রেশার থেকে শুরু করে, রক্তে শর্করার মাত্রা কিছুই নিয়ন্ত্রণে থাকছে না স্ট্রেসের দাপটে। ছবি: আইস্টক।

তা হলে উপায়?

পরীক্ষা চালানো প্রায় ৩২২ জন আমেরিকানকে অফিসের চাপ থেকে সরিয়ে এনে ও বাড়ি ফিরে অফিস সংক্রান্ত আলোচনা বন্ধ করে সৃজনশীল কোনও কাজে অংশ নেওয়ানোর পর দেখা যায়, তাঁদের স্ট্রেসের প্রায় ৭৫ ভাগ উধাও হয়েছে।

তবে আমেরিকা ছাড়া অন্য দেশের ক্ষেত্রেও এমন ফল আসবে বলেই মত গবেষকদের। এ প্রসঙ্গে মনস্তত্ত্ববিদ অমিতাভ মুখোপাধ্যায় জানান, ‘‘কাজের চাপ শুধু অফিস বলে নয়, পেশাদার সব ক্ষেত্রেই রয়েছে। এ যুগে বেঁচে থাকার জন্য রুজিরোজগারকে অবহেলা করলেও হয় না। এর সঙ্গে যুক্ত হয় নানা অফিসের বিভিন্ন নিয়ম। সব মিলিয়ে চাপ নিতে না চাইলেও চাপ নিয়ে ফেলি আমরা। অফিসের সহকর্মীদের মনোভাব, কাজের ধরন, কাজের সেক্টর, পরিবেশ সব কিছুর উপরই এটা নির্ভর করে। তাই চেষ্টা করতে হবে চাপ এলেও কতটা নিয়ন্ত্রমে রাখা যায় তা, নইলে শরীর ও মন সবই সমস্যায় ফেলবে।’’

আরও পড়ুন: ট্যাটু করাবেন? এ সব না মানলে বিপদে পড়বেন কিন্তু!

চিকিৎসকের পরামর্শ, খুব প্রয়োজন না থাকলে কাজের শেষে বাড়ি ফেরার পর আর অফিসের কাজে হাত দেবেন না। হয়তো ফোন বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তাই চেষ্টা করুন, কাছে একটি বিকল্প ফোন নম্বর রাখার, যা আপনি অফিস সংক্রান্ত ব্যাপারে কখনওই ব্যবহার করবেন না। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে অফিস সংক্রান্ত মেসেজের উত্তর দেওয়া নিয়ন্ত্রণে আনুন। এ ছাড়া স্ট্রেসের কারণ যদি আপনার ব্যক্তিগত জীবনে কোনও ঘটনা ঘটে থাকে, তবে তা কাছের মানুষ ,বন্ধবান্ধবদের সঙ্গে আলচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করুন। স্ট্রেস নিরাময়ের অন্যতন ভাল উপায় মেডিটেশন। নিয়মিত কিছু সময় বার করে নিয়ে মেডিটেশন করাও খুব জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement