প্রতীকী চিত্র।
করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতা ও প্রচার যেমন তুঙ্গে, তেমনই একই সঙ্গে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে নানা মিথ ও ভুয়ো ধারণাও। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে কিছু মিথ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাতে প্রচার করা হচ্ছে, মদ্যপান করোনা থেকে বাঁচার অন্যতম উপায়। শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি এই ভাইরাসকে মেরে ফেলে বলে প্রচার চালানো হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ‘হু’ এই সব প্রচারকে সম্পূর্ণ ভুল বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
কী কী ভুল ধারণা?
• সারা গায়ে অ্যালকোহল বা ক্লোরিন ছড়িয়ে রাখলে করোনাভাইরাস ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না।
• ইথাইল অ্যালকোহল পান বা মদ্যপানের মাধ্যমে শরীরে অ্যালকোহলের মাত্রা বাড়িয়ে রুখে দেওয়া যাবে অসুখ।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্ক থেকে বাঁচতে এই হ্যান্ডওয়াশ বানিয়ে ফেলুন বাড়িতেই! হাত-পা ধুতে এর জুড়ি নেই
কী বলছে ‘হু’?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টামণ্ডলীতে যুক্ত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পুলক নারাইনের মতে, যেহেতু অ্যালকোহল বেসড হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভাল করে হাত-পা ধোওয়ার কথা বার বার করে বলা হচ্ছে, এখান থেকেই ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি।
সারা শরীরে অ্যালকোহল বা ক্লোরিন স্প্রে করলে করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলার ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীণ। এ সব অযৌক্তিকও। করোনা ঠেকাতে একমাত্র ইথাইল অ্যালকোহল বেসড হ্যান্ডওয়াশ অর্থাৎ ৯১ শতাংশ ইথাইল অ্যালকোহল মেশানো মিশ্রণ ব্যবহার করার নির্দেশই দিয়েছে হু বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। সেখানে সারা শরীরে ‘র’ অ্যালোকহল বা ক্লোরিন ঢালা মানে ত্বকের ক্ষতি করা। কোথাও অন্য কোনও সংক্রমণকে ডেকেও আনতে পারে তা।
আরও পড়ুন: করোনা-আতঙ্ক থেকে বাঁচতে এই হ্যান্ডওয়াশ বানিয়ে ফেলুন বাড়িতেই! হাত-পা ধুতে এর জুড়ি নেই
ত্বকবিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ীর মতে, শরীরে সরাসরি অ্যালকোহল বা ক্লোরিন ঢাললে ত্বকের ক্ষতি কেউ রুখতে পারবে না। অ্যালকোহল ত্বকের জল টেনে তাকে শুষ্ক করে দেয়। এতে ত্বক র্যাশ বা নানা সংক্রমণের শিকার হতে পারে। বিশেষ করে ত্বকের কোনও অসুখ থাকলে এর ফলে মারাত্মক প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
মদ্যপানের ধারণার সঙ্গেও সহমত পোষণ করছেন না চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, এই ভাইরাসের হানা ঠেকানোর সঙ্গে মদ্যপানের কোনও সম্পর্কই নেই। বরং ওবেসিটি, কিডনির অসুখ, কোলেস্টেরল বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাক এড়াতে মদ্যপান এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দেয় ‘হু’।
পুলকবাবুর কথায়, ‘‘এই দুই ভুল ধারণার ফাঁদে পা না দিয়ে বরং নিয়ম মেনে হাত-পা পরিষ্কার রাখুন ও প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন। তাতেই যথেষ্ট সুরক্ষিত থাকবেন।’’