Covid Infection

Covid hero: ঝুলিতে বাড়তি ওষুধ। দরকারে কোভিড রোগীদের বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন ‘ওষুধওয়ালা’

অনেক বাড়িতেই কোনও কোভিড রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার পর কিছু ওষুধ বাড়তি থেকে যায়। সেগুলি সংগ্রহ করে, যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের কাছে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করছেন এঁরা।

Advertisement

পৃথা বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৮:৫৯
Share:

বাড়তি ওষুধ সংগ্রহ করছেন ‘ওষুধওয়ালা’। যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন সেই ওষুধ।

বেহালায় এক পরিবারে ৫ জন কোভিড আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য ওষুধ তাঁদের খুবই প্রয়োজন। তথ্যভাণ্ডার খুলে জানা গেল, শহরের কোন বাড়িতে তেমন ওষুধ বাড়তি পড়ে রয়েছে। ব্যস! ওমনি ঝুলি নিয়ে চললেন ‘ওষুধওয়ালা’। সে বাড়ি থেকে যাবতীয় ওষুধ সংগ্রহ করে বেহালায় পৌঁছে দিলেন সেই তক্ষুণি।

Advertisement

এমনই একটি উদ্যোগ নিয়েছেন প্রিয়ম বসু, জ্যোতিষ্ক দাস, ইন্দ্রনীল নাগ, শাহিদ মোল্লা এব‌ং সঞ্চারিকা বসু। শহরবাসীদের তাঁরা অনুরোধ জানাচ্ছেন, অপ্রয়োজনীয় বাড়তি ওষুধ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। এতে যাঁদের আর্থিক অবস্থা তেমন স্বচ্ছল নয়, কিংবা বিপদের সময় যাঁরা জরুরি ওষুধ বাজারে পাচ্ছেন না, তাঁদের এই বাড়তি ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই উদ্যোগে অবশ্য তাঁদের সঙ্গে ধীরে ধীরে জুড়ে গিয়েছেন আরও বহু মানুষ। কলকাতা, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু জায়গায় তাঁরা সকলে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করছেন।

কী করে সন্ধান পাচ্ছেন এই বাড়তি ওষুধের? প্রিয়ম জানালেন, তাঁদের ফেসবুকে একটা পেজ (লেফ্টওভার মেডিসিন কালেকশন ক্যাম্পেন) রয়েছে। সেখানে তাঁরা একটা গুগ্‌ল শিট পোস্ট করেছেন। সকলকে অনুরোধ করছেন সেই ফর্ম ভরে দিতে। যাতে কাদের কাছে কী ধরনের ওষুধ রয়েছে, তার একটা তালিকা তৈরি থাকে তাঁদের কাছে। প্রয়োজনে সেই তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছেন তাঁরা। বন্ধুবান্ধব, চেনা-পরিচিত— সকলকেই অনুরোধ করছেন, ওই গুগ্‌ল ফর্মটা বেশি করে ভাগ করে নিতে হোয়াট্‌সঅ্যাপ বা নেটমাধ্যমে।

Advertisement

হঠাৎ এমন একটা উদ্যোগ নেওয়ার কথা কেন ভাবলেন এঁরা? উত্তরে প্রিয়ম বললেন, ‘‘গত বছর থেকে কোভিডের মাঝে আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নানা রকম কাজ করছিলাম। সব সময় ওষুধ কিনে অনেক মানুষকে পৌঁছে দেওয়ার মতো ফান্ড থাকে না। আমার এক নিকট আত্মীয়ের মৃত্যু হয় কোভিডে। তার পরে তাঁর সব ওষুধ অনেক দিন পড়েই ছিল। তখনই মনে হল, যাঁদের আর ওষুধের প্রয়োজন নেই, তাঁদের কাছ থেকে ওষুধ সংগ্রহ করা যায়। সম্প্রতি ঘুর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের অনেক এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাঁদের কাছেও স্যানিটাইজার, জিওলিন, প্যারাসিটামল বা স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো জরুরি কিছু জিনিস পৌঁছে দেওয়ার।’’

তবে কাজটা খুব সহজ নয় ‘ওষুধওয়ালা’দের জন্য। এমনিতে ওষুধ কিনে দান করার লোক সংখ্যায় খুব কম। তবে অনেক বাড়িতে যদি কেউ সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাঁরা বাড়তি ওষুধ দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেন। ‘‘মুশকিল হচ্ছে, বেশির ভাগ মানুষ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ওষুধ কিনে ফেলেন। এবং সেগুলি রেখে দেওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে। তবে আমরা আশাবাদী। প্রথম এক মাস খুব একটা সাহায্য পাইনি। তবে এখন বহু মানুষ এগিয়ে আসছেন এই উদ্যোগে,’’ বললেন প্রিয়ম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement