অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।
নেক মুভমেন্ট বা গ্রীবা সঞ্চালন
ঘাড়কে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে ‘সারভাইকাল স্পাইন’। মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছে দেওয়ার পথ এটি। এর মধ্যে দিয়ে অজস্র ভার্টিব্রাল আর্টারি মস্তিষ্কে রক্ত সবরাহ করে। আসলে সার্ভাইকাল স্পাইন শরীরের এক অত্যন্ত জটিল অংশ। এর মধ্যে দিয়ে অজস্র সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রক্তবাহী শিরা, ধমনী ও নার্ভ আছে।
কী ভাবে
ম্যাটের উপর পদ্মাসনে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন অথবা কাঠের চেয়ারে পা ঝুলিয়ে সোজা হয়ে বসুন। চেয়ারে হেলান দেবেন না। মেরুদণ্ড সোজা করে রাখবেন। চোখ বন্ধ করে আরাম করে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। এ বার চোখ খুলুন।
পাশে ঘাড় হেলান: এক দিকের কাঁধে ঘাড় হেলান, কয়েক সেকেন্ড রেখে সোজা হন। এ বার অন্য কাঁধে ঘাড় হেলান। শ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। কাঁধে ঘাড় ঠেকানোর সময় বেশি চাপ না পড়ে খেয়াল রাখবেন। এই ভাবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। ৫ রাউন্ডে একট সেট শেষ হয়।
ঘাড় ঘোরান: এ বার মাথা ঝুঁকিয়ে চিবুক বুকে ঠেকান, এ বার ধীরে ধীরে ঘাড় ডান দিকে এনে পিছনে হেলিয়ে বাম দিক হয়ে আবার বুকে চিবুক ঠেকান। ঘাড় ঘোরানোর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি যেন মসৃণ ও ধীর গতিতে হয়। এ ভাবে এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল। ৫–৭ রাউন্ড করতে হবে। একই ভাবে বিপরীত দিকে ৫–৭ রাউন্ড সার্কুলার মুভমেন্ট করুন। সম্পূর্ণ ব্যায়ামটি করার সময় শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন।
সতর্কতা: মনে রাখবেন ঘাড় অত্যন্ত সংবেদনশীল। সুতরাং অত্যন্ত যত্ন সহকারে ধীরে ধীরে ঘাড়ের আসন অভ্যাস করা উচিত। শ্বাস স্বাভাবিক রাখবেন, জোরে শব্দ করে শ্বাস টানবেন না। নইলে কিন্তু বাড়তি চাপ পড়ার ঝুঁকি থাকে। স্ট্রেচিং করার সময় ঘাড়ে টান পড়ে। যদি ব্যথা হয় অবিলম্বে ব্যায়াম বন্ধ করুন। দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যাঁদের হাই বা লো প্রেশার আছে, সিভিয়ার স্পন্ডিলোসিস, সার্ভাইকাল স্পন্ডিলোসিস, ভার্টিগো এবং মাথা ঘোরার অসুখ আছে, তাঁরা এই ব্যায়াম করার আগে চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিন।
কেন করব এই ব্যায়াম?
ঘাড়ে ব্যথা সাধারণ কিন্তু গুরুতর নয়। দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে বা বসে থাকলে ঘাড়ের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। কাজের ফাঁকে ঘাড়ের স্ট্রেচিং করে নিলে ভাল হয়। নেক মুভমেন্ট বা গ্রীবা সঞ্চালন অভ্যাস করার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ঘাড়ের ব্যথা কমে যাবে। ঘাড়ের ব্যথা কমার পরেও গ্রীবা সঞ্চালন ব্যায়াম করবেন, এর ফলে সারভাইকাল স্পাইনের ডিজেনারেশন বা ক্ষয়জনিত ব্যথা-বেদনাকে দূরে রাখতে পারবেন।